বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] বিদ্রোহী সৈন্যদল রহিয়াছে, এবং যদি ঐ সৈনদলকে সে পিষিয়া না ফেলিত, তাহা হইলে একটা দুর্গম্য উচ্ছম্বল জনতার হাজামার ফলে ইউরোপীয় অধিবাসীরা নিহত এবং গবর্ণমেণ্ট অবজ্ঞাত হইত। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে সেদিন অমৃতসরে বাহিরের গ্রাম্য অনেক লোকেরও সমাগম হইয়াছিল। ইহাদের অনেকেও জালিয়ানওয়ালাবাগের সভার ভীড় বাড়াইয়াছিল। সকলেই জানেন, জালিয়ানওয়ালাবাগে বিদ্রোহী সৈন্য দল ছিল না। যে-ব্যক্তি অস্ত্রহীন কতকগুলা স্ত্রীলোক ও পুরুষের, শিশু যুবা প্রৌঢ় ও বৃদ্ধের, জনতাকে সত্য-সত্যই বিদ্রোহী সৈন্যদল মনে করিতে পারে, সে হয় পাগল, নয় গাধা । এরূপ পাগল বা গাধাকে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ কেন সেনাপতি করিয়াছিলেন, তাহারই কৈফিয়ৎ প্রয়োজন । কিন্তু ডায়ার হাণ্টা কমিশনের সম্মুখে যাহা বলিয়াছিল, তাহা হইতে স্যার মাইকেলের মতেও তাহার কাজের সমর্থন করা যায় না। জজ ম্যাক্কর্ডি বলেন, আর্মী কৌন্সিলের সম্মুখে সাক্ষ্য দিবার সময় ডায়ার এমন অনেক অবস্থার বিষয় বলে, যাহা হাণ্টার কমিশনের সম্মুখে সাক্ষ্য দিবার সময় তাহার মনে ছিল না । ইহা খুব ঠিক কথা! আমী কৌন্সিলের সমক্ষে সাক্ষ্য দিবার সময় ডায়ার যে-সব কথা বানাইয়া বলিয়াছিল, হাণ্টা কমিশনের কাছে তাহা বলে নাই ! পুৰ্ব্বাপর তাহার সব কথ। পড়িলেই বুঝা যায়, যে, প্রথমে সে কতকগুলা কাল! আদমীকে গুলি করিয়া ভয় পায় নাই, সুতরাং সত্য কথা বলিয়াছিল। তাহার পর যখন ভয়ের উদ্রেক হয়, তখন সে মিথ্যা কথা বলে । লোকটা গোয়ার ও নিষ্ঠুর, এবং মিথ্যাবাদী ৭ বটে। ইহাকেই জজ ম্যাক্কার্ডি ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রক্ষণকৰ্ত্তীর মত খাড়া করিয়া বলিতেছেন, “যদি জেনার্যাল ডায়ারের অধীনস্থ সিপাহীদলকে বিদ্রোহীর নিমূল করিয়া ফেলিত..তাহা হইলে তাহার ফল ভীষণ হইত।. গুরুতর বিপদের আশঙ্কা হইলে প্রতিকারও গুরুতররকমের হওয়া চাই। ------ অসাধারণরকম গুরুতর অবস্থায় জেনার্যাল ডায়ার ঠিক্‌ কাজ করিয়াছিলেন, এবং ভারতসচিব তাহাকে বেঠিকৃরকমে দণ্ড দিয়াছিলেন।” & وهي لا ----CD\ 6 বিবিধ প্রসঙ্গ—গোপীনাথ সাহার সম্বৰ্দ্ধনা 8›ዓ জজ ম্যাক্কার্ডির মত পক্ষপাতী লোক বিচারাসনের উপযুক্ত নহেন। সিরাজগঞ্জে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মিলনের অধিবেশনের পূৰ্ব্বে যদি তাহার রায় বাহির হইত, তাহ হইলে অনেকেরই মনে হইত, যে, ঐ রায় পড়িয়া উত্তেজনায় মতিভ্রাস্ত হইয়া কোন কোন প্রতিনিধি গোপীনাথ সাহার প্রশংসাসূচক প্রস্তাব সম্মিলনের সমক্ষে উপস্থিত করিয়াছিলেন এবং অন্ত অনেকে ঐরুপ প্রভাবেরই বশবৰ্ত্তী হইয়া তাহাতে সায় দিয়াছিলেন। উত্তেজনার সময় এইরূপ বিপথচালক ভাব মনের মধ্যে আসা বিচিত্র নহে, যে, “যদি তোমাদের একজন বৃত্ত ও অভিজ্ঞ সেনাপতি কতকগুলি নিরপরাধ ও নিরস্ত্র ভারতীয় লোককে অপ্ৰমত্তভাবে বিমূখ্যকারিত সহকারে গুলি করিয়া মারিলে প্রশংসার্হ হয়, তাহা হুইলে একজন তরলমতি বিপথগামী ভারতীয় বালক একজন নিরপরাধ ইউরোপীয়কে খুন করিলে তাহারও প্রশংসা হইতে পারে।” কিন্তু সিরাজগঞ্জের গর্হিত ও শোচনীয় প্রস্তাবটি জঞ্জ ম্যাক্কাডির রায় বাহির হইবার কয়েকদিন পূৰ্ব্বে সম্মিলনের সমক্ষে উপস্থাপিত ও অধিকাংশের মতে তৎকর্তৃক গৃহীত হইয়াছিল। গোপীনাথ সাহার সম্বৰ্দ্ধনা সিরাজগঞ্জে গোপীনাথ সাহার সম্বৰ্দ্ধনা ঠাও। মেজাজেই করা হইয়াছিল। তদ্বিষয়ক প্রস্তাবের অব্যবহিত বা কিছু পূৰ্ব্বে শঙ্করন নায়ারের মোকদ্দমা প্রসঙ্গে পূৰ্ব্বে উল্লিখিত জাতিবিদ্বেষজনক কোনপ্রকার উত্তেজনার কারণ ঘটে নাই । কি কারণে এই প্রস্তাবটি সভায় উপস্থাপিত হয়, তাহ৷ বলিতে পারি না । গোপীনাথlসাহী কর্তৃক আর্ণেঃ ডের হত্যার পর ইউরোপীয় সভার যে অধিবেশন হয়, তাহাতে কোন বাঙালী নেতার নাম করিয়া বলা হয়, “অমুক ব্যক্তি এই হত্যার জন্ত কোন দুঃখ প্রকাশ করেন নাই ।” হইতে পারে, যে, এই প্রস্তাব পরোক্ষভাবে তাহারই স্পৰ্দ্ধিত জবাব। অথবা ইহাও হইতে পারে, যে, মহাত্মা গান্ধী বঙ্গের হিন্দুমুসলমান চুক্তির সমর্থন না