বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্য। ] নিজের পরিবারের মধ্যে তিনি খুব স্নেহশীল ছিলেন। লক্ষ্মীস্বরূপ তাহার জ্যেষ্ঠা কঙ্কা বিধবা হুইবার পর তিনি আবার তাহার বিবাহ দিয়াছিলেন। তাহাতে র্তাহাকে অতি নীচ ও অভদ্ররকমের নানা আক্রমণ সহ করিতে হইয়াছিল । তাহাতে তিনি অটল ছিলেন । দুঃখের বিষয় এই কন্যাটি আবার বিধবা হন এবং পিতার মৃত্যুর অল্পকাল পূর্বে গতাস্থ হন। তাহার শোকে মুখোপাধ্যায় মহাশয় কাতর হইয়াছিলেন। র্তাহার ধৰ্ম্মবিশ্বাস সম্বন্ধে আমরা বিশেষ কিছু অবগত নহি । তিনি অন্য অনেক শিক্ষিত হিন্দুর মত প্রচলিত হিন্দুধৰ্ম্মে বিশ্বাসী ছিলেন। তাহার অকপটতায় সন্দেহ করিবার মত আমরা কিছু অবগত নহি । কিন্তু ইহা বলিলেও বোধ হয় তাহার প্রতি কোন অবিচার করা হইবে না, যে, তাহার ধৰ্ম্মবিশ্বাস সম্ভবতঃ তাহার স্বাজাম্বিকতারও অঙ্গ ছিল । সত্যের অপলাপ না করিয়া তাহাব সম্বন্ধে সময়োচিত যাহা বলা যায়, আমরা তাহাই আমাদের জ্ঞানবুদ্ধি অনুসারে বলিতে চেষ্টা করিয়াছি । র্তাহার জীবন, কাৰ্য্য ও চরিত্রের সমালোচনা ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ জীবনচরিতলেখক ও ঐতিহাসিক করিবেন। লী কমিশনের রিপোর্ট, ভারতবর্ষে ইংরেজরা যেসব বড় চাকুরী করে, তাহার বেতন জাপান ও পাশ্চাত্য ধনী দেশ-সকলে ঐসব শ্রেণীর চাকুরীর বেতন অপেক্ষ যুদ্ধের আগেও বেশী ছিল । তাহার পর যুদ্ধের সময়ে ও ভারতশাসন-সংস্কারআইন জারী হইবার পর এই-সব কৰ্ম্মচারীদের পাওনা বেশ বাড়ে । কিন্তু তাহাবা তাহাতেও সস্তুষ্ট না হইয়া আবার আন্দোলন করিতে থাকে । তজ্জন্য একটি কমিশন বসে। লর্ড লী তাহার সভাপতি ছিলেন বলিয়া উহা লী কমিশন বলিয়, পরিচিত । কমিশন ঐ চাকূর্যেদের পাওনা, পেন্‌গুন-আদি আবার বাড়াইয়া দিতে বলিয়াছেন। আন্দোলনকারী ভারতীয়দের মুখ বন্ধ করিবার নিমিত্ত কমিশন ব’লয়াছেন, যে, সিৰিল সাবিস প্রভৃতি বড় চাকুরীতে ভারতীয়ের সংখ্যা ক্রমশঃ বাড়িয়া ১৫ বৎসর পরে শতকরা ৫০ জন হইবে । কিন্তু তাহার পর ভারতীয়ের সংখ্যা ও অনুপাত কেন যে বাড়িবে না ও কালক্রমে কেন যে সব সরকারী চাকুরীই ভারতীয়েরা নিজের দেশে পাইবে না, এবং অৰ্দ্ধেক পাইতেই বা কেন ১৫ বৎসর লাগিবে, তাহার কোন কারণ কমিশন দেখান নাই । কমিশন আরো বলেন, হস্তান্তরিত বিভাগগুলিতে যে-সব অফিসার চাকরী করে, তাহাদের নিয়োগ ও নিয়ন্ত্ৰণ মন্ত্রীরা করিবেন, কিন্তু রিজার্তর্ভ অর্থাৎ গবর্ণ & d’—Sb. বিবিধ প্রসঙ্গ—আমদানী লৌহ ও ইস্পাতের উপর শুদ্ধ 8ථාව মেন্টের হস্তে রক্ষিত বিভাগগুলিতে অফিসারদের নিয়োগ মুম্ৰণাদি ভারত সচিবের হাতে থাকিবে । কিন্তু ভারতের সকলদলের রাজনৈতিকেরা একবাক্যে প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্টে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব চাহিতেছে। তাহা না হইলে কেহ সন্তুষ্ট হইতে পারে না ; কিন্তু তাহা হইলে সব বিভাগই হস্তান্তরিত হইবে । তখন ত প্রদেশসকলের কাৰ্য্যে ব্যাপৃত সমুদয় অফিসারেরই নিয়োগনিয়ন্ত্রণাদি মন্ত্রীদের হাতে যাওয়া চাই । যাহা হউক, সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় কমিশনের রিপোর্টের আলোচনা হইবার আগে কিছু করা হুইবে না, ইহা হইতে যদি কেহ কিছু সাম্বন লাভ করিতে পারেন, ত করুন । আমৃদানী লৌহ ও ইস্পাতের উপর শুল্ক ভারতবর্ষে না প্রস্তুত হইতে পারে, এরূপ দ্রব্য সভ্য জগতে খুব অল্পই ব্যবহৃত হয়। শুধু স্বযোগের অভাবেই এদেশের স্বাভাবিক সম্পদ অব্যবহৃত বা পরহস্তগত হইয়া পড়িয়া আছে। এবং আমাদের দেশবাসীরাও পরের কথায় ভুলিয়া ভূল বিশ্বাসের বশবৰ্ত্তী ও নিষ্কৰ্ম্ম হইয়া রহিয়াছেন। র্তাহারা ভাবিতেছেন, যে, এদেশে শুধু চাষবাস করাই সম্ভব, কলকারখানা এদেশে সাজে না ও সম্ভব নহে। বস্তুতঃ এই-ভুল ধারণার মূলে আছে শুধু অপরদেশীয় ব্যবসাদারের মিথ্যা প্রচার,—আমাদের চিন্তাশক্তিবিহীন জড় ভাব, ও শিক্ষার অভাব । এই দেশে না উৎপন্ন হইতে পারে এরূপ খুব অল্প জিনিসই এই দেশে আমদাiন হয়, এবং স্থবিধা পাইলে ভারতের মত বিবিধ সম্পদশালী অল্প দেশই হইতে পারে। আমাদের এই যে বর্তমান দারিদ্র্য ইহার প্রধান কারণ স্বাভাবিক সম্পদের অভাব নহে । প্রকৃতি আমাদের অনেক দিয়াছেন, কিন্তু আমরাই অজ্ঞতা ও জড়তার দাস হইয়া সকল ঐশ্বৰ্য্য অব্যবহৃত রাখিয়া দারিদ্র্যে ডুবিয়া রহিয়াছি। একটু চিন্তা করিলেই দেখা যাইবে, যেমাহব যতপ্রকার দ্রব্য ব্যবহার করিয়া থাকে, তাহার মধ্যে অধিকাংশই শুধু প্রকৃতির দান নহে। উৰ্ব্বর জমি থাকিলেই ফসল পাওয়া যায় না । বৃক্ষ কৰ্ত্তন করিয়া তাহা হইতে আসবাব প্রস্তুত করিয়া না লইলে, বৃক্ষসম্ভব ঐশ্বৰ্য্য অরণ্যে রোদনই করিবে, মাঙ্গুষের কাজে লাগিবে না । গভীর খনিতে ধাতু অথবা হাওয়াতে নাইট্রোজেন কিছুই মামুষের সম্পদ বলিয়া গণ্য হইবে না, যতক্ষণ না মানুষ নিজ পরিশ্রমে তাহাকে সম্পদের রূপ দান করিবে । এইরূপে দেখা যাইবে, ষ্ট্রে, মনুষ্যসমাজে যাহা-কিছু ঐশ্বৰ্য্য বলিয়া গণ্য হয়, সকলেরই মূল