বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Neo মিক্‌ করে উঠল, গাছের ফাঁকে ফাকে আলোর কাপন সুর হয়ে গেল। জলে হাস, বক, পানকোড়ীর আনাগোনা আরম্ভ হ’ল। দুরে বনে ময়ূর-ময়ূরী ডেকে উঠল, দুর—অতিদূর থেকে বীণ-যন্ত্রের স্বর শোন গেল । ব্ৰহ্মা বীণার তান শুনে চম্কে উঠে বলে উঠলেন, কবি বাল্মীকি উষার আবাহন করছেন। অল্পক্ষণ পরেই বাল্মীকি সরোবরের পাশে এসে উপস্থিত হলেন । স্বষ্টিকৰ্ত্তার এ নবহুষ্ট দেশেই তার হাত থেকে বীণা খসে পড়ল, স্বর একেবারে থেমে গেল, তিনি নিৰ্ব্বাক্ বিস্ময়ে ই করে চেয়ে রইলেন। নবশ্বষ্টির আনন্দ-শাস্তিতে ব্ৰহ্মার মন ভরে গেল। আত্মস্কার ব্ৰহ্মা কমল-বালার নারী-মুৰ্ত্তির দিকে চেয়ে চেয়ে একসময় বলে উঠলেন,— জাগে, বাল্মীকি-কথা কও ৷ বাল্মীকি বললেন :-কি কুন্দর! কেবল এই একটিমাত্র শব্দ ছাড়া তার মুখে আর কোন কথাই জোগাল না । সহসা ব্ৰহ্মার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি বলেন, অবশেষে তোমার বাসের স্থান খুজে পেয়েচি কমল । অতঃপর তুমি কবির মানস-লোকে বাস করবে। বাল্মীকি বললেন, কি হন্দর, কি মহান ! ব্ৰহ্মার ইচ্ছামাত্রেই কবির মানস-লোক বালিকার চোখের স্বমুখে স্বচ্ছ কাচের মত স্পষ্ট ভেসে উঠল। বাসস্তী পূর্ণিম-রীত্রির মত উজ্জ্বল, সুরধুনীর জোয়ারের মত বিহবল, তার সেই নির্দিষ্ট মন্দিরে বালিকা প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড ধীরে ধীরে প্রবেশ করতে লাগল। কিন্তু যখন বাল্মীকির মানসলোকের সবখানি তার চোখের সামনে ফুটে উঠল, তখন বালিক একেবারে বিবর্ণ হয়ে গেল, দেহ তার স্রোতাহত বেতসলতার মতন থরথর করে কাপতে লাগল। ব্ৰহ্মা বিস্ময়-বিক্ষরিত-নেত্রে তার দিকে চেয়ে বললেন, তুমি কি কবির মানস-লোকেও বাস করতে শঙ্কিত হচ্চি ? বালিক জবাব দিলে, প্রভু, কি করে’ এ-স্থানটা আমার বাসের জন্তে নির্দেশ করূচেন ? বরফে ঢাকা শৈল-শিখর, ভীষণদর্শন প্রাণীতে ঘের জল, প্রাস্তরের ঝড়ঝঞ্জ, গিরি-গহবরের বিকট অন্ধকার—সমস্তই যে কবির ওই অস্তরের মাঝখানে অ{সর জমিয়ে বসে’ রয়েচে । নী, প্রভু, আমার ভারি ভয় কর্চে। ব্ৰহ্মা তখন বালিকাকে বললেন, ভয় নেই কস্তা, ভয় নেই! কবির মানস-লোকে যে বরফের বিপুল স্তপ দেখতে পাচ্চ তাকে তোমার অস্তরেয় বসন্তের দখিন হাওয়া দিয়ে বিগলিত করে, আর সেখানে জলের ষে গভীর আবৰ্ত্ত জেগে রয়েচে তাতে তুমি মুক্তারূপে বিরাজ করে, উদার উন্মুক্ত প্রাস্তরের যে নির্জনত তার বুকে বাসা বেঁধেচে তাতে তুমি আনন্সের ফুল হয়ে ফুটে ওঠে, তার হৃদরের বিরাট অন্ধকার গহ্বরকে তুমি প্রেমের হ্যালোকে পুলকিত করে তোলে। বিহ্বল বাল্মীকি বিধাতার দিকে ফিরে চেয়ে বললেন— হে দেবতা, তুমিই ধষ্ঠ ! *

  • নরওয়ের বিখ্যাত লেখক Nieukiowio%এর অনুসরণে লিখিত ।

চিকিৎসা-শাস্ত্রে বিজ্ঞানের দান : শ্ৰী সুবোধকুমার মজুমদার, এম-এসসি মানুষের নিবদ্ধ নিয়ম ভঙ্গ করিয়া অপরাধী শাস্তির হাত এড়াইয়া স্থখে-স্বচ্ছন্দে কালযাপন করিয়া গিয়াছে এরূপ দৃষ্টান্ত সংসারে নিতান্ত বিরল নহে, কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম ভঙ্গকারী কোনো মানব আজ পর্য্যস্ত প্রকৃতিদত্ত শাস্তি হইতে অব্যাহতি লাভ করিয়াছে বলিয়া শুনা ধায় নাই। কারণ এবং কাৰ্য্যের মধ্যে কাল-ব্যবধান যখন বিশেষ থাকে না তখন দুয়ের সম্বন্ধ অবধারণ করিতে বিশেষ বেগ পাইতে হয় না। শিশুকাল হইতেই মাহুষ শিথিয়াছে যে আগুনে হাত দিলে পরিণাম বিশেষ সুখদায়ক হয় না ; সুতরাং ষে বালকের হাত একবার পুড়িয়াছে সে সহসা অগ্নিতে হাত দিতে সঙ্কুচিত হয় । বৈজ্ঞানিক বলিতে চাহেন যে ব্যাধিমাত্রেই কোন বিশেষ কারণ হইতে সঞ্জাত, তবে সৰ্ব্বত্রই যে এই কারণকে প্রতিষেধক দ্বারা প্রতিরুদ্ধ করা যায় অথবা কাৰ্য্য কারণকে দ্রুত অনুসরণ করে, তাহা নহে । মামুসের বিচার-গৃহে আইনের অজ্ঞতার অজুহাতে অপরাধী মুক্তি প্রার্থনা করিতে পারে কিন্তু প্রকৃতির মন্দিরে এরূপ আত্ম-সমর্থন একেবারেই চলে না । নিয়ম-লঙ্ঘনের ফল যে শুধু অপরাধীকেই এক ভোগ করিতে হয়, তাহা নহে ; অনেক ক্ষেত্রে পুত্র-পৌত্ৰাদিক্রমে প্রকৃতির অভিশাপ ফলিতে থাকে। প্রকৃতির এই কঠোরতা মানুষের চক্ষে ভয়াবহ হইলেও নিতান্ত সত্য। প্রকৃতির আদেশ যখন নত