পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tSV অপরাহের মজলিসে এই আলোচনা হইতে সাবেককালে ক্রিয়াকৰ্ম্মোপলক্ষে ভোজের ভূরি-আয়োজনের যে গল্পগুলি আসিয়া পড়িল তাঙ্গতে সকলেরই জিহবা রসাল হইয়া উঠিল। কেহ বলিলেন, “এই নন্দপুরের রায় চৌধুৰীদের বাড়ী, মিষ্টিই কবুত ধর ২০।৩০রকম । আর যত খাও, যত বেঁধে নিয়ে মাও ।” এইসমস্ত গল্পের দ্বার। র্তাহাদের পছন্দসই আদর্শ-ভোজের যেমন একটা চিত্র অঙ্কিত হইল তেমনি তাহাদের লালসাবৃত্তিও বোধ হয় ইহাতে কিঞ্চিৎ তৃপ্ত হইল । যাহা হউক নটু চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি গ্রামের ফন্দিবাজ বুদ্ধের দলের একটা যে আশা হইয়াছিল নে তাহদের নিষ্কৰ্ম্ম স্থযোগ্য পুত্রগুলির এক-একটা চাকুরী এইবার বুঝি হরিশের সাহাধ্যে হইয়া যায়, তাহা অচিরেই ভস্মীভূত হইল। দুই-একদিন পরে এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব হইবামাত্র হরিশ উত্তর দিল, “দেখুন, চাকুরি করা যদি ভাল বোধ করতাম বা যদি কারও চাকুরি করে দিতাম ত সে রামজীবন । কেননা, সে উচ্চশিক্ষিত, অতি অল্প চেষ্টাতেই তার চাকুরি করে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হ’ত, কিন্তু দেখুন সে-ই গ্রামে এসে চাষ হ’য়ে বসেছে, আমাদের যে দিন-কাল পড়েছে, তাতে আব ওবৃত্তি চলবে না। আপনার দেশে আছেন, দেশে থেকে পল্পীগ্রামের উন্নতি করুন । সকলেই যাতে বাংলা লেখাপড়াট শেখে সে-ব্যবস্থা করা হোকৃ। গ্রামের মধ্যে চরকা, তাত সব চলুক। মুখে-স্বচ্ছন্দে আমাদের ঠাকুমার আমলে যেমন সব ছিলেন, আবার তেমনি হোক ৷” চট্টোপাধ্যায় উত্তর করিলেন, “ত। বাবা, তুমি ব্যারিষ্টারিট কি ছেড়ে দিয়েছ ?” “ন-ই-ব৷ যদি দিয়ে থাকি তাই বলে কি আপনার সব ব্যারিষ্টারি বা চাকুরি করতে স্বরু করবেন ? একটি চীন লোক যদি একটা সত্য দ। নীতি-কথা বলে তা' হ’লে কি সেটা সত্য নয় না নীতিকথা নয় ? অামার কথা ছেড়ে দিন । অবশ্য অামি ছেড়ে ও দিয়েছি । আমি এখন অন্য ব্যবসা করছি । এই রামজীবন এখানে রইল । ও-ই সব করবে কৰ্ম্মাবে। ওর সঙ্গে পরামর্শ করে’ গ্রামের যাতে মঙ্গল হয় আপনারা সকলে একযোগে তাই করুন । প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড উপস্থিত একটা ছেলেপুলের ইস্কুল শীঘ্রই করা হবে। আমাদেরই বাড়ীর বাইরের ঘরট মেরামত আরম্ভ করে’ দিয়েছি, ওইখানে ইস্কুল বসবে, যাতে সকলেই স্বল্প খরচে চিকিৎস। পান তার ব্যবস্থাও করব । আমি সামান্ত আর্থিক সাহায্য করব মাত্র । বাকী সবই আপনাদের করতে হবে, অবশ্য নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য ।” রামজীবনের সহিত পরামর্শ করিয়া কাৰ্য্য কং। অপেক্ষা পদব্ৰজে যমালয়ে গমন যে শ্রেয়স্কর তাঙ্গ একবাক্যে সকলেই স্বীকার করিলেন ; হরিশটা যে একান্ত । অপদার্থ এবং নেহাতই এক টাকা ফি-এর ব্যারিষ্টার ছিল তাহাও মীমাংসিত হইল । গ্রামে স্কুল স্থাপিত হুইবার পূর্বেই ক্ষমতাশালী এই বুদ্ধর বাড়ী বাড়ী গিয়া বলিয়া আসিয়াছিলেন যে, যে-কেত তাহার বাটীর ছেলেপুলেদের ম্লেচ্ছ হরিশের পাঠাইবেন, তিনি সমাজচু্যত ইষ্টবেন। একটা সামান্ত ইস্কুল খুলিয়া নাম কিনিবার আর স্থান বোধ হয় মিলে নাই, তাই হরিশ সস্তায় স্বপল্লীতে নাম কিনিতে আমিস্বাছে, ওসব এক পয়সার ব্যারিষ্টারী চলি তাতারা ও স্কুলে বোঝেন । - - স্বল-খোলার দিন রামজীবন প্রিয়ন থের সাক্ষাৎ লাভ করিয়। কঠিল, “প্রিয় কাক, দেশে-ঘরে এসে পি-রকম চেপে ক্রমে ক্রমে বসছি দেখুন ।” একগাল হাসিয়া প্রিয়নাথ কহিলেন, “তা বসবে লৈ কি, ববি । দেশ-ঘর কি সোজা কথা !—মাতৃভূমি, যার মানে বাপের ভিটে । উজ্জল কর বাবা, রাজা হও ।” মাতৃভূমির অর্থশ্রবণে রামজীবন হাসিয়া কহিল, “স্কুল আজ খুললাম, ছেলেপুলে সব পাঠিয়ে দেবেন ।” "র্হ্য; বাবা, দেখি । আমার নাতি আর ছোট থোক? বড়ই ছোট। ওই ওদের ছেলেরা মদি ডেকে নিয়ে যায় তবেষ্ট যেতে পারবে।” স্কুলে ছেলে হইল না । রামজীবনদের প্রত্যেক অনুষ্ঠানে বৃদ্ধিব দল বাধা দিতে ਸ਼ਿਸ਼ , শুধু তাই নয়, তাহার সহিত জড়িত হইয়া নিস্তার মাসীরা ও বিনাদোযে একধ’রে হক্টলেন । তবে সমাজপতির বলিলেন যে, বিশেষ অকাট্য প্রমাণের অভাবহেতু তাহারা এইটুকু করিতে