বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮ প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ আশার সমাপি করিয়৷ পেনসনের জন্ত বসিয়া আছেন । যেমন ওই কমুদবাবু, আশুবাবু পঞ্চাশ টাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করিতেছেন । যেমন হরিশঙ্করবাবু ৫ টাকা মাহিন বুদ্ধির জন্য বাজার হইতে পটোল কুমড়া শসা বেগুন কিনিয়া দেশের বাগানের জিনিষ বলিয়। বড়বাবুর শ্ৰীচরণকমলে তৈল নিষেক করিতেছেন ! তেমনি কঠিন মূল্য দিয়া কি তাহাকে ও উন্নতি কিনিতে হইবে ? হায় উন্নতি । পয়ল তারিখ আসিতে-ন-আসিতে : র - ল’, পানওয়ালা, বিড়ি সিগারেটওয়াল, চা-ওয়াল আসিয়া পাওনার জন্য হাত পাতিয়া দাড়ায় । আর দাড়ায় মোট লাঠি হাতে দীর্ঘকায় কাবুলের অধিবাসী, আপিসের দ্বারবান ব। আপিসেরই কোন সহকৰ্ম্মী, তখন ওই ঘাট টাকা দেখিতে দেখিতে কপূরবিন্দুর মত কোথায় উবিয়া যায় । যে দীর্ঘ দিনগুলি, ক্ষুধাৰ্ত্ত পুত্রকন্যা মাতাপত্নীর গ্রাসাচ্ছাদনের নীরব আবেদন লইয়া মুখের পীনে চাহিয়া থাকে, তাহার মিনতি পুরাইতে আবার ওই সব যমদতের দুয়ারেই হাত পাতিতে হয়। সারাজীবন সমস্তার জাল বুনিয়া তাহারা সংসারে যে শাস্তিনীড় রচনা করিতে চাহে, মৃত্যুর পর বংশপরম্পরায় সেই জল উর্ণনাভের মত সূক্ষ্ম তস্থতে দুশেছদ্য ঋণজলে জড়িত হইয়া বংশধরদের জন্য সেই একই দুঃখদৈন্য ও বিভীষিক। বিস্তার করিয়া দিনের দিন শাস্তিকে মরীচিকর মতই দূরে দূরে সূরাইয়। লয় । কিন্তু কমলের আশ্চৰ্য্য বোধ হয়--পরেশের পানে চাহিয়া । তাঙ্গারই সম্মুথে বসিয়া সে কাজ করে, মাহিনী পায় এই ত্রিশটি টাকা । সংসারে মাতা, পত্নী ও এক শিশুকন্তু বিদ্যমান । তথাপি ফিটফট জাম! কাপড় পরিয়া, মাথায় টেরি কাটিয়া, এসেন্স মাখিয় বেশ স্মৃষ্ট্রির সঙ্গেই দিন কাটাইয় দেয়। অনেক দিন সে তাহার পানে চাহিয়া ভাবিয়াছে, একি সত্যই তৃপ্তি ন৷ আর কিছু ? এ আনন্দ, না দুঃথকে অবহেলা করিতে আনন্দের প্রকাশ ? পরেশ তাহকে কতদিন ঠাট। করিয়াছে। বলিয়ছে, “জীবন শুধু উপভোগ করিয়া কাটাও, জগতে স্থখই उझे ” { ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড কমল তর্ক করিয়াছে, “বাড়ীতে তোমার মা বউ মেয়েকে উপোসী রেখেও স্ফূৰ্ত্তি আসে ?” পরেশ হাসিয়া বলিয়াছে, “সে যখন বাড়ী যাব তখন সেখানকার ভাবন । তা বলে এখানে কেন দুঃখ করি ?” একটু থামিয়া বলিয়াছিল, ‘ আর মা বউ থাকলেই কি খুব মস্ত একটা মায়ার শেকলে মন প্রাণ বাপ থাকে ? ওই ভাঙ্গ গুরস্টটর সামনে দাড়াও দেখি কমলবাবু, দেখবে, আদর করে ও তোমায় বুকে ফুটিয়ে তুলবে। আবার ওখান থেকে সরে এস দেখবে গুর বুকে এক তিলও ছায় নেই। এমনি সংসার !" কমল অসহিষ্ণু কণ্ঠে বলিয়াছিল, "অরুতজেই এই কথা বলতে পারে ; প্রকৃত মন্ত্যত্ব ধার আছে, সে কখনে মায়ের স্নেহে—” বাধা দিয়া পরেশ বলিয়াছিল, “অবিশ্বাস করে না, কেমন এই কথা ত ? কিন্তু ঠিক বিশ্বাস অবিশ্বাসের নিক্তি যে আজও জগতে তৈরি হয়ে ওঠেনি, কমলবাবু, তাহলে দেখাতাম কোনখানে তার ব্যবহার কতট অযৌক্তিক। অর্থের আশায় অনেকখানি স্নেহ ভালবাসা পুষ্টি লাভ করে, কিন্তু ওই আরসীরই মত। যতক্ষণ সে হাতের মুঠোয় ততক্ষণ তার অঙ্গভব । অপৰ্য্যাপ্ত স্নেহ

    • ভালবাম। যার অক্ষয় কবচ, এ সব নাস্তিকের তর্ক তার

হৃদয়ভেদ |”—বলিয়া উচ্চ হ19 করিয়াছিল। কমল বুঝিয়াছিল, সে উচ্চহাসির অন্তরালে একটি মেহবুভূক্ষু অন্তরের অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস লুকানো । প্রীতির সম্পর্ক তাহার ছায়া স্পর্শ করে নাই বলিয়। মমতাকে সে স্বাকার করিতে চাহে না । তাই জীবনের সঞ্চয়কে একান্ত অবিশ্বাসে মুখের প্রলপ বলিয়। উড়াইয়া দিয়া অপব্যয়ের আনন্দকে চরম জয়পত্র-স্বরূপ দুঃখময় ললাটে অ কিয় রাখিয়াছে । তাই কারণে অকারণে ভগ্ন মুকুরে স্নান হাসিটুকু ফুটাইতে তাহার আগ্রহ অধিক । পাশের ঘরে হরিশবাবুদের পাশার আসর ততক্ষণে সরগরম হইয়া উঠিয়াছে। দান এবং আড়ির উচ্চ কলরবে মাঝে মাঝে ভগ্নগুহের ভিত্তি পৰ্য্যস্ত কঁাপিয়া কঁাপিয়া উঠিতেছিল, কিন্তু সেদিকে ভ্ৰক্ষেপ কাহারও নাই । লা ৪ করতে পারে