বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ করিয়া তাহার দিন কাটাইতে লাগিলেন ;—হায় কোথায় এখন সেই বিলাসভবন হোয়াইট রোজ কটেজ ! প্রথমে যতটা লাগিয়াছিল কিছু দিন যাইতে আর ততটা বেদন রছিল না । ক্রমেই দৈন্তের পীড়ন সহিয়া আসিতে লাগিল ;–ভবিষ্যতের ভয়, জীবনযাত্রার দুঃখ কষ্ট সবই সহজ হইয়া আসিল । দিন রাত যে একটা জীবন মরণের সংগ্রাম, একটা নিদারুণ চেষ্টা চলিয়াছে এমন আর বোধ হইতে লাগিল না—ক্রমে সে সমস্ত স্বাভাবিক হইয় আসিল । এত দুঃখেও কিন্তু বাটি দমে নাই। সে মনে মনে একটা আত্মগৌরব বোধ করিতেছিল—ফ্র্যাঙ্কের এ দৈন্তের দিনে, তাহার এই দুরবস্থায় বার্টির মুহূর্তের জন্যেও মনে হয় নাই যে সে ফ্র্যাঙ্ককে এইবার ছাড়িয়া চলিয়া যায়। সে যে বিলাসিতাটুকুর জন্য ছিল তাহ যখন অন্তৰ্দ্ধান করিয়াছে তখন আর কেন সেখানে সে পড়িয়া থাকিবে এ চিত্ত৷ একবারও তাহার মনে উঠে নাই ;—ইহার জন্য, সে সমস্ত দুঃখ কষ্ট সহিয়াও, নিজের উপর ভারি খুলী ছিল—সে এই বলিয়া এখন নিজের নীচতা, স্বার্থপরতাকে ধিক্কার দিত যে এতদিন তাহার বিবেক যাহাকে নীচতা স্বার্থপরতা বলিয়াছে তাহা নীচতা নহে, তাহা স্বার্থপরতাও নহে—তাহা বন্ধুর প্রতি নিঃস্বার্থ, পবিত্র, স্বৰ্গীয়, আদর্শ, প্রেম ! নইলে বন্ধুর এ দুঃখের দিনে সে তাহাকে ত্যাগ করিয়া যাইতেছে না কেন । সত্যই বাটি আনন্দেব সহিত ফ্র্যাঙ্কের এ দুঃখ দৈন্ত বণ্টন করিয়া ভোগ করিতেছিল—একদিনের জন্তও সে কষ্টকে কষ্ট বলিয়া বোধ হয় নাই, পরিশ্রমকে পরিশ্রম জ্ঞান করে নাই, নিজের উপার্জনের অংশ ফ্র্যাঙ্ককে দিতে বিন্দুমাত্র কুষ্ঠিত হয় নাই—মনের মধ্যে কোথাও এতটুকু অসন্তোষ রাখে নাই। ফ্র্যাঙ্কের দুর্ভাগ্যকে নিজের ভাগ্যের সহিত জড়িত করিয়া সে বেশ তৃপ্তিতে ছিল। তাহার স্বভাবটা ছিল লতার মতো পরমুখাপেক্ষী—ঝড়ের সময় লতা যেমন বৃক্ষকে অঁাকড়াইয়া বৃক্ষের সহিত পড়িয়া মরে সেও তেমনি করিয়া মরিতে প্রস্তুত ছিল। সে সত্যই ফ্র্যাঙ্ককে ভালোবাসিত । আরো দুই বৎসর কাটিয়া গেল। তখন হাতে কিছু পয়সা জমিয়াছে। এত দিন বিদেশে থাকিয় দেশে ফিরি প্রবাসী—পৌষ ১৩১৭ [ >०म छां★, २ग्न थe বার জন্ত কেমন একটা ঔৎসুক্য তাহদের মনে জাগিয়া खैरिङ गाशिण-भरन इहेण cयन औबरनब्र नमछ भांनि সেই জন্মভূমির স্নেহম্পর্শের আরামের অপেক্ষায় এখনও দুর হইতেছে না,—শৈশবের লীলাভূমি তাছাদিগকে জাবার যেন সেই শৈশবের জীবন—শৈশবের আনন্দ, সরলতা ফিরাইয়া দিবে। হাতে যতটুকু অর্থ জমিয়াছে সেইটুকুতে কয়েকটা মাস বেশ নিশ্চিন্তে বিশ্রাম লইবার জন্য তাছারা ক্লাণ্ডের এক গ্রামে-সমুদ্রতীরে—বাড়ি ভাড়া লইয়া নিৰ্জনবাসে রহিল। জনতা, আমোদ প্রমোদ মেলা মেশা আর ভালো লাগেনা – সমুদ্রের দৃপ্ত মুহূর্তে মুহূর্তে নব নব রূপে প্রতিভাত হইয়া তাহাদের অলস দিনগুলাকে বেশ সরস করিয়া তুলিত। ফ্র্যাঙ্ক তো মোটেই বাড়ির বাহির হইতেন না—বারান্দার রেলিংএ পা তুলিয়া আরাম-কেদারায় বলিয়া—মুখের সামনে কুণ্ডলীকৃত সিগারেটের ধূম উড়াইয়া সমুদ্রের দিকে চাহিয়া সমস্ত দিন বসিয়া থাকিতেন। তাহাতে ফ্র্যাঙ্কের একটা বেশ শান্তি ছিল—হৃদয়ের বেদনাগুলা যেন সমুদ্রের জলোচ্ছ,াসের আঘাতে নিস্তেজ হইয়া আসিত ; অতীতের দুঃখস্থতি তরঙ্গগানে ঘুমাইয়া পড়িত, নিজের সত্ত নীলিমার মধ্যে ডুবিয়া যাইত ! কিন্তু বার্টির প্রাণটা আকুল হইয়া উঠিত। সে যখন দেখিত তরঙ্গের পর তরঙ্গ বিশাল বিপুল হইয়৷ ভয়ঙ্কর গর্জনে ছুটিয়া আসিতেছে, যখন দেখিত উপরের আকাশ নীল, সমুদ্রের জল নীল ;—বিশ্বব্যাপী নীলিমা ! বিশ্বের সমস্ত ভয় যেন সেখানে স্তন্ধভাবে জড়ো হইয়া আছে, তখন তাহার মনে হইত সমুদ্রের আকাশ হইতে যেন তাহার ভাগ্যবিধাতা নামিয়া আসিতেছেন-ক্রমেই নিকটে আরো নিকটে আসিতেছেন। সে ভয়ে নিশ্চল হইয়া ভাগ্যপুরুষের সেই ভৈরব আগমন দেখিত—সে গুনিত সমুদ্রোচ্ছাসের মধ্য হইতে যেন তাহারই আগমনী বাজিয়া উঠিয়াছে । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ একদিন বাটি সমুদ্রের উপকূলে আনমনে বসিয়া আছে হঠাৎ দেখে বহুদূরে কালো ছায়ার মতো ছুটি মূৰ্ত্তি ! তাহদিগকে ভালো করিয়া চেন যাইতেছিল না, কিন্তু দেখিয়াই