পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVb. S5లి. প্রসিদ্ধ লেখক ও সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকার তরুণ বয়সে প্রাচীন কাব্যসংগ্রহ’ প্রকাশ করেন । এই গ্রন্থে চণ্ডীদাসের পদাবলী, রামেশ্বরী সত্যনারায়ণের কথা, গোবিন্দদাস ও বিদ্যাপতির পদাবলী এবং মুকুন্দরাম চক্ৰবৰ্ত্তীর কবিকঙ্কণ চণ্ডী সঙ্কলিত হয়। এখন এই মূল্যবান গ্রন্থ পাওয়া যায় না। এই গ্রন্থ পুনমুদ্রিত হওয়া উচিত, কিন্তু সে-বিষয়ে কাহারও কোন চেষ্টা দেখিতে পাওয়া যায় না । ১৩২১ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ হইতে নীলরতন মুখোপাধ্যায় কর্তৃক সম্পাদিত চণ্ডীদাসের পদাবলীর আর একটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় । যে-কয়টি সংস্করণ এ পর্য্যন্ত প্রকাশিত হইয়াছে, তাহার মধ্যে অক্ষয় চন্দ্র সরকারের সংস্করণই উৎকৃষ্ট । পদ-সংখ্যা ‘পদকল্পতরু'তে চণ্ডীদাসের বিরচিত অতুমান ১১০টি পদ আছে। অক্ষয়চন্দ্রের সঙ্কলনে ২০০, সাহিত্য পরিষদ হইতে প্রকাশিত সংস্করণে ৮৩০ । এই সকল সংখ্যা হইতে সহজ সিদ্ধান্ত এই যে, কবির রচিত অপ্রকাশিত পদাবলী অন্বেষণ করিয়া যিনি যত পাইয়াছেন প্রকাশ করিয়াছেন। কিন্তু এই কথা বলিলেই সমস্ত কথা বল। হয় না। বিচারের অনেক বিষয় আছে, সঙ্কলনকারদিগের যোগ্যতা ও বিবেচনাশক্তির বিষয়ে অঙ্গান করিতে হয়। কোন কবির অপ্রকাশিত / প্রকাশিত হইলে তাহা কত দূর প্রামাণিক 叉、 গর করা কর্তব্য । সূতন প্রকাশিত কবিতায় : “তিভার বিশিষ্টতার নিদর্শন পাওয়া যায় }ি: তাহার মধ্যে উত্তম কবিতা আছে কি-না বিপ্লৱয় লক্ষ্য করিতে হয়। সকলের অপেক্ষ/ট্র ও মূল্যবান সঙ্কলন গ্রন্থ *পদকল্পতরু' । এই ঠুপাকিলে হয়ত বিচিত্র বৈষ্ণব কাব্য বিলুপ্ত হইতুg" : - কেহ কখনও ভাবিয়া দেখিয়াছেন যে, সুদ চণ্ডীদাসের পদাবলীর স্বতন্ত্র প্রাচীন পুথি পাওয়ু%"যায়, তাহ হইলে তাহার অপেক্ষ অনেক সুনিক অপর বৈষ্ণব কবিদিগের পদাবলী স্বতন্ত্র পাওয়া যায় না কেন ? বাঙালী কবিদিগের 巴 চীদাস সকলের অপেক্ষ প্রাচীন তিনিই আনি । কবি। তাহার তুলনায় অপর বৈষ্ণব কবিগণকে বিে প্রাচীন বলিতে পারা যায় না । ইহাদের কাহ এ পদাবলীর স্বতন্ত্র পুথি কেহ কোথাও পাইয়াছেন ইহাদের কাহারও রচনা কি অপ্রকাশিত নাই ? যদি থাকে সেগুলি প্রকাশিত হয় না কেন ? বিদ্যাপতি প্রায় চণ্ডীদাসের সমসাময়িক, বিদ্যাপতির পদাবলীর হস্তলিখিত পুথি বঙ্গদেশে কখনও কোথাও স্বতন্ত্র আকারে পাওয়৷ গিয়াছে ? গোবিন্দদাস নামে কয়জন কবি ছিলেন তাহাই কেহ জানে না । কবিরাজ গোবিন্দদাস অত বড় কবি, তাহার পদাবলীর পুথি কখনও কেহ দেখিয়াছে ? রায় শেখর, কৃষ্ণকান্ত, গোবিন্দ চক্রবর্তী, জ্ঞানদাস, যদুনন্দন, বংশীবদন, ইহারা সকলেই উত্তম কবি, ইহাদের মধ্যে কাহারও পদাবলী স্বতন্ত্র আকারে কোথাও পাওয়৷ গিয়াছে ? বৈষ্ণব দাস যদি ‘পদকল্পতরু' সঙ্কলন করিয়া না রাখিয়া যাইতেন তাহ হইলে এই সকল কবিদিগের রচনা কেহ দেখিতে পাইত না । i পদকল্পতরু'ই সকল সঙ্কলন গ্রন্থের অপেক্ষা প্রামাণিক। ইহার পূৰ্ব্বে বৈষ্ণব-কবি রাধামোহন ঠাকুর স্বরচিত সংস্কৃত টীকাসম্বলিত ‘পদসমুদ্র’ নামক গ্রন্থ সঙ্কলন করিয়াছিলেন, কিন্তু উহাতে পদ-সংখ্যা অধিক নয়, সকল বৈষ্ণব কবিদিগের রচনাও উহাতে সংগৃহীত হয় নাই। একমাত্র ‘পদকল্পতরু'ই বৈষ্ণব কবিদিগের যশের ভিত্তি। যে-কবির" যতগুলি পদ ঐ গ্রন্থে পাওয়া যায় সেইগুলি প্রামাণ্য বলিয়। গ্রহণ করিতে হইবে । ‘পদকল্পতরু'র তিন সহস্ৰ পদ বৈষ্ণব দাস কেমন করিয়া সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন তাহ গ্রন্থশেষে তিনি নিজে লিখিয়া রাখিয়া গিয়াছেন। বৈষ্ণব দাস স্বয়ং কবি । বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসে সাক্ষাং তাহারই কল্পনা, এবং সে-সম্বন্ধে পদগুলি তাহারই রচনা। প্রকৃতপক্ষে, এই দুই কবিতে কোনকালে সাক্ষাৎ হয় নাই । বিদ্যাপতি বাংলা জানিতেন না, চণ্ডীদাসের যশ র্তাহার জীবিত অবস্থায় প্রচারিত হয় নাই । বৈষ্ণব দাস লিখিয়াছেন ‘পদাঘৃতসমুদ্রে'র গীত গান করিয়া ঐরূপ গীত সংগ্ৰহ করিবার তাহার লোভ জন্মিল। নানা স্থান পৰ্যটন করিয়া প্রাচীন প্রাচীন পদ যত পাইলেন সংগ্ৰহ করির গ্রন্থের নাম ‘গীতকল্পতরু' রাখিলেন । এই भौउक्कड*