পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণা প্রতাপসিংহ শ্ৰীকালিকারঞ্জন কানুনগো, এম-এ পৃথিবীর সর্বত্র সকল জাতির মধ্যে আবহমানকাল হইতে বীরপূজা চলিয়া আদিতেছে। যাহারা অতিমানব, শৌর্য্য ত্যাগ ভক্তি প্রেম কিংবা আধ্যাত্মিক জ্ঞানে প্রাকৃত মানবের বহু উৰ্দ্ধে যাহাঁদের স্থান, মানস-মন্দিরে স্মৃতির অর্ঘ্যে মানুষ চিরকাল তাহাদের পূজা করিয়া আসিয়াছে এবং করিবেও ; কেন-না ইহাতে মানুষের আত্মতৃপ্তি হয়, কৰ্ম্মে প্রেরণা আসে, ভাবোন্মাদন দ্বারা ইহা তাহার অন্তর্নিহিত অনন্ত শক্তির উৎস খুলিয়া দেয়। যতদিন ভারতবর্ষে বীরপূজা শাস্ত্রের বিধানে ধর্শের उग्निौङ्ठ ছিল, ততদিন ভারত-মাতা সত্যই বীর-প্ৰসবিনী ছিলেন। পৌত্তলিক হিন্দু শুধু ইট-পাথরের পূজা করিয়া প্রাচীন কালে অর্থ ও পরমার্থ লাভ করে নাই ; সেকালে বীরপূজাই ছিল হিন্দুধৰ্ম্মের প্রাণ। অন্য কোন জাতির তুলনায় বীরের মাহাত্ম্য হিন্দু কম বুঝে নাই। যিনি বীর তিনি নিত্যমুক্ত ; দেশ, ধৰ্ম্ম ও জাতির কল্যাণের জন্ত শস্ত্রপূত হইয়া যিনি দেহত্যাগ করেন তাহার উদ্দেশে শ্ৰাদ্ধাদি নিম্প্রয়োজন ; তিনি অপুত্ৰক হইলেও তাহার পুয়াম নরকের ভয় নাই ; তৰ্পণাদি লোপের আশঙ্কা নাই। তবে শাণিত তরবারিতে যাহারা পুথিবীর বক্ষে রক্ত-গঙ্গা বহাইয়া শুধু নিজেদের বিজিগীষা ও সাম্রাজ্যতৃষ্ণ মিটাইয়াছে, হিন্দুর চক্ষে তাহারা বীয় নহে,-দানব কিংবা রাক্ষস ; হিন্দুধৰ্ম্মে তাঁহাদের পূজার বিধান নাই ; থাকিলে আমরা রাবণ কিংবা জরাসন্ধের পূজা করিতাম। শাস্তমু-পুত্র বীরশ্রেষ্ঠ ভীষ্ম যোদ্ধৃগণের অগ্রণী ছিলেন বলিয়া আমরা তাহার পূজা করি না, অস্বগত রাজলক্ষ্মীকে প্রত্যাখ্যান ও আজন্ম ব্রহ্মচৰ্য্য ধারণ করিয়া ত্যাগ, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও আদর্শ রাজভক্তির দ্বারা তিনি সমগ্র জাতির হৃদয় জয় করিয়াছিলেন ; এজন্যই হিন্দুর তর্পণ-বারিতে র্তাহার প্রথম অধিকার । কালাইলের সংজ্ঞানুসারে বীর-রাজ fontro (hero as king) foot won to পূজা করে। মরীচি, অজিরা, পুলস্ত্য ইত্যাদি ত্রিকালদশ, মন্ত্রদ্রষ্টা ও শাস্ত্রবেত্তা ঋষিগণ আমাদের প্রফেট" বা পয়গম্বর-স্থানীয় বীর—এজন্য শাস্ত্রায়ুসারে তাহারাও পূজ্য। নরমুগুস্তপ, অখণ্ড দিগ্বিজয় কিংবা সসাগর পুথিবীর একচ্ছত্র অধিকার ভারতবর্ষে বীরত্বের পরিমাপক নহে—মহান ত্যাগই বীরত্বের মাপকাটি। যোদ্ধ, রাজা, ঋষি, কিংবা নীতিবিং—যিনিই হউন না কেন, যাহার ত্যাগ যত বড়, বীর-পৰ্য্যায়ে তাহার স্থান তত উচ্চে। নব্য ভারত বীরপুজায় ব্রতী ; সেকাল ও একালের পূজার বিধান এক নহে। এজন্য বীরগণের সাম্বৎসরিক জয়ন্তী ভারতবর্ষের নানা স্থানে কয়েক বৎসর ধরিয়া অনুষ্ঠিত হইয়া আসিতেছে ; প্রতাপ-জয়ন্তী ইহারই অন্যতম। কিন্তু র্যাহারা ভাবের প্রেরণায় প্রতাপ-জয়ন্তীর অতুষ্ঠান করিয়া তাহার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন, র্তাহীদের মধ্যে অনেকেই নাটক, উপন্যাস অথবা উপন্যাসমূলক ইতিহাসের ভিতর দিয়া মহারাণ প্রতাপকে দেখিয়াছেন। আধুনিক ঐতিহাসিক গবেষণায় মহামতি টডের রাজস্থান’-যাহা এতদিন আমরা প্রকৃত ইতিহাস বলিয়া মনে করিয়াছি—উহার অধিকাংশ মিখা বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। আমরা বাল্যকাল হইতে যে-সমস্ত কথা অবিসংবাদী সত্য বলিয়া গ্রহণ করিয়া আসিয়াছি— যথা, প্রতাপ ও শক্তসিংহের বিরোধ, শক্তসিংহের নির্বাসন, কুমার মানসিংহের অপমান, থোরাসানী মুলতানীক অগগল, বীর শক্তসিংহ কর্তৃক গ্ৰতাপের প্রাণরক্ষ, ভীলদের আশ্রয়ে সপরিবারে প্রতাপের গিরিগুহায় বাস, দারিদ্রা-পীড়িত ভগ্নহৃদয়.প্রতাপের মেবার-ত্যাগের সঙ্কল্প, চিতোর-উদ্ধারের জন্তু প্রতাপের সন্ন্যাসত্রত ৪ শপথ ইত্যাদি-সেকালের ভাট চারণের কল্পনামূলক কাব্য নাটকের মনোরম শাখাপল্লব বলিঙ্গ এখন্তু আমাদের লদেহু ছয় । কিন্তু বাল্মীকির ੋ