বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাEী , পরস্ত-প্রমঞ্জ ఇc: একটা লরীতে ঝুলতে ঝুলতে চলল। বেল ছ’টা নাগাদ এান্তরাস্ত অবস্থায় আমরা কাজেরুণ শহরে পৌঁছলাম। শুনলাম শিরাজ যাওয়া সেদিনকার মত ঐ পর্য্যস্তই, কেন-ন পরের পাহাড় আরও খারাপ, রাত্রে চলা একেবারেই সুবিধার নয়। কাজেরুণে প্রথম গাছপালার সবুজ রং দেখতে পেয়ে, ক্রমাগত তৃণগুল্মহীন পাহাড়-প্রাস্তর দেখার পর, চোখের আরাম হ’ল । শহরের যত লোক সারাদিন আমাদের অপেক্ষায় দাড়িয়ে থেকে বিকালে যখন ফিরে যাচ্ছিল তখন আমরা উপস্থিত । তারা সকলে ছুটে গেল কবির গাড়ীর দিকে । বাগ-এ-নজর নামে সুন্দর বাগানে আমাদের - অভ্যর্থনার ব্যবস্থা হয়েছিল । সেখানে থানাপিনার বিরাট আয়োজন, প্রকাও প্রকাগু ডেকচিতে পোলাও মাংস রান্না হচ্ছে, বাগানে গাছের সারির নীচে ত্রিশ-চল্লিশ হাত লম্বা টেবিল সাজান, তাতে ফল মিষ্টি পানীয় যা রয়েছে তাতে ছোটখাট একদল সৈন্তের খোরাক হয় । খাবার সমস্তই পারসীক, তার মধ্যে একদিকে বিলাতী ক্রেস পিনাচ, ট্ৰফল, অন্যদিকে দেশী ধরণের মোরব্বা, ডালগোস্ত (মুম্বরডালে চুম্বার মাংস), পুদিনার চাটুনি—এ সব ছিল। পোলাও রান্না হয়েছিল স্বল্পো শাক দিয়ে, তার সঙ্গে অল্প মুন, জাফ্রান এবং ঘি, কিন্তু একেবারে ঝরঝরে। পারসীক জিনিষের মধ্যে "আস্ক' ( যবের ছাতু মেশান স্বপ ) এবং গাজ নামে মিষ্টি উল্লেখযোগ্য। গাজ হ’ল বাইবেলে উল্লিখিত “মান্না”। খেতে আমাদের গোলাপী রেউড়ীর মত—তিল বাদে। পানীয়ের মধ্যে ঘোলের চলতি এখানে খুব বেশী, নাম দুখ-দইও বেশ চলে, মগু, নামে পরিচিত। বাগ-এ-নজর প্রাচীন বাগান, চারিধারে কমলা ও বাতাবী লেবু, বাদাম, পিচ, আলু, খোবানি ও আখরোট গাছের সারি, মাঝখানে ফুলের বাগান। কমলালেবুর গাছ যে এত বড় হতে পারে তা আমার ধারণা ছিল না। বাগানের ভিতরে চারধারে জলের পথ, পাহাড় থেকে প্রণালী ক’রে জল আন । এইখানে বিরাট ভোজের পর আমরা রাত্রি কাটালাম। কবি ও প্রতিমা দেবীর জন্য শেবার ব্যবস্থা একরকম হয়েছিল। লক্ষী সকলের সৈনিক পন্থায় রাত্রি হাফেজের কবরের পাশ্বে রবীন্দ্রনাথ । লেখক পিছনে দাড়াইয়া যাপন করতে হ’ল, কেল-না, এখানে আমাদের রাত্রে থাকবার কথা ছিল না। কিন্তু এখানকার লোকদের আতিথ্যের ক্রটি কিছুমাত্র হয়নি, তাদের কৰ্ম্মকৰ্ত্তারা আমরা না-আসা পর্য্যস্ত উপবাসেই কাটিয়েছিলেন, রাত্রেও লেপকম্বল যা ছিল আমাদের দিয়ে অনেকে আগুনের পাশে কোনরকমে রাত কাটিয়েছিলেন । কবি এদের আদরঅভ্যর্থনায় মহা খুশী হয়ে বললেন, 'এই ত প্রাচ্যের প্রথা, এই অভ্যর্থনাতেই হৃদয়ের যোগ রয়েছে । আমি আপনাদের সুন্দর ভাষা বলতে বা বুঝতে অক্ষম, কিন্তু এই অভ্যর্থনা আমি সম্পূর্ণ উপলব্ধি করছি। প্রাচীন পারস্যের আত্মার এই প্রকাশ ।” পরদিন সকাল সাড়ে পাচটায় আবার যাত্রারম্ভ। আবার সেই দুর্গম পাহাড়ের গায়ে খাজকাটা পথ, একেবারে মেঘ ফুড়ে আকাশে উঠে গেছে। তবে এবীর পথের পাশে