পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাত্ৰ বিবিধ প্রসঙ্গ-বিশ্বভারতী-সংবাদ જરૂ. 6 তাহা সত্ত্বেও বে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মৃত্যুদিবস লোকে । ভুলিয়া যায় নাই, ইহা অহিলাদের বিষয় । তিনি নানা মহৎ ও সংকার্যের জন্য প্রাতঃস্মরণীয়। হিন্দুসমাজে বিধবাবিবাহের পুনঃপ্রবর্তন তিনি করিয়াছিলেন । র্তাহার জীবিতকাল অপেক্ষ এখন বঙ্গের অনেক জেলায় হিন্দুসমাজে বিধবাবিবাহ অনেক বেশী হইতেছে । আরও বেশী হওয়া উচিত । যে-সকল বালিকা বিধবা হয়, তাহাদের সকলেরই বিবাহ দেওয়া উচিত। যাহার তাহাদের চেয়ে অধিক বয়সে বিধবা হয়, ডাহীদেরও বিবাহ করিবার ইচ্ছা ও প্রয়োজন থাকিলে এবং বিবাহপি পাত্র পাওয়া গেলে তাহাদেরও বিবাহ দেওয়া কৰ্ত্তব্য । বিদ্যাসাগর মহাশয় স্ত্রীশিক্ষার বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন এবং বঙ্গে নানাস্তানে অনেক বালিকা-বিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন। এখন স্ত্রীশিক্ষার বিস্তারও আগেকার চেয়ে বেশী হইতেছে। সুরেন্দ্রনাথের স্মৃতিসভ বঙ্গের ও ভারতবর্যের রাজনৈতিক জাগরণের জন্য স্বরেন্দ্রনাথ স্মরণীয় হইয় থাকিবেন। এ বৎসর আলবার্ট হলে তাহার স্মৃতিসভায় সভাপতিরূপে আমি এই মৰ্ম্মের কথ। বলিয়াছিলাম, যে, অদ্যান্ত বৎসর এরূপ সভার কোন বিজ্ঞাপন বা চিঠি ন পাওয়ায় আমার ধারণ হইয়াছিল, যে, উদ্যো ক্লার উদারনৈতিক বা মডারেট ছাড়া অন্য কাহাকেও নিমন্ত্রণ করেন না, এখন সেরূপ বিজ্ঞাপন পাওয়ায় সভায় যোগ দিয়াছি ; রাজনৈতিক মতনিৰ্ব্বিশেষে সকলেরই নিমন্ত্রণ হওয়া উচিত । আমার এই কথাগুলি দৈনিক কাগজে বাহির হইয়াছে। সভাভঙ্গের পূৰ্ব্বেই উহার অন্যতম উদ্যোক্ত অধ্যাপক নিবারণচন্দ্র রায় আমাকে জানান, যে, প্রতিবৎসরই সকলকেই আহবান করা হয়, এবং আমি যে ইতিপূৰ্ব্বে আহবান পাই নাই, তাহ আকস্মিক । ইহা অবগত হইয়। আমি সভাভঙ্গের পূৰ্ব্বে তাহা সভাস্থ সকলকে জানাইয়াছিলাম। সম্ভবত: তথন দৈনিক কাগজগুলির রিপোর্টারের চলিয়া যাওয়ায় আমার শেষের এই কথাগুলি কাগজে বাহির হয় নাই। _ চিন্তামণি চট্টোপাধ্যায় ৭২ বৎসর বয়সে সম্প্রতি চিন্তামণি চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের মৃত্যু হইয়াছে । তিনি আলিপুর জজ আদালতের উকীল ছিলেন । আদি ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম আচার্য্য বলিয়াই তিনি অধিকতর পরিচিত ছিলেন । তিনি কয়েক বৎসর তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদকতা করেন এবং তাহাতে অনেক প্রবন্ধ লিখিয়াছিলেন। প্রবাসী, প্রকৃতি, সুপ্রভাত ও সন্মিলনীতেও তাহার লেখা বাহির হইয়াছিল । দুর্গাদাস লাহিড়ী বাঙালী শিক্ষিত সমাজে দুর্গাদাস লাহিড়ী মহাশয় প্রধানতঃ বেদের অতুবাদক এবং “পুথিবীর ইতিহাস" গ্রন্থের লেখক বলিয়া পরিচিত। তিনি আরও অনেক বহি লিখিয়াছিলেন, “অমুসন্ধান” পত্র তিনি ১১৯৪ সালে প্রকাশ করেন। উহা প্রায় ১৮ বৎসর চলিয়ছিল । সম্প্রতি প্রায় আশী বৎসর বয়সে তাহার মৃত্যু হইয়াছে । বিশ্বভারতী-সংবাদ গত জুলাই মাস হইতে বিশ্বভারতী সম্বন্ধে নানা সংবাদ দিবার জন্য ইংরেজীতে “বিশ্বভারতী নিউস" নামক একটি মাসিক সংবাদপত্র শাস্তিনিকেতন হইতে বাহির হইতেছে । বার্ষিক মূল্য ডাকমাশুল সমেত এক টাকা । এরূপ একটি পত্রিকার প্রয়োজন ছিল । পূৰ্ব্বে শান্তিনিকেতন পত্রিকায় এইরূপ সংবাদ থাকিত । তাহা অনেক বৎসর হইল উঠিয়া গিয়াছে। বিশ্বভারতী নিউসে ছোট ছোট প্রবন্ধও আছে । জুলাই সংথ্যায় ডাক্তার টিশ্বাসের লেখা গ্রামের স্বাস্থ্যবিধান পদ্ধতি সম্বন্ধীয় প্রবন্ধটি গ্রামহিতৈষীদের কাজে লাগিবে। একটি সংবাদে দেখিলাম, ময়ূরভঞ্জ রাজ্য আট জন শিক্ষার্থীকে শ্ৰীনিকেতনে পাঠাইয়াছেন। তাহার সেখানে চারি মাস থাকিয়া সমবায় ( Co-operation ) এবং গ্রাম-পুনর্গঠন সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় শিক্ষা লাভ করিবেন। ময়ূরভঞ্জ রাজ্যের এই উদ্যোগিতা প্রশংসনীয়। ইহা শ্ৰীনিকেতনের কৃতিত্বেরও পরিচায়ক ।