পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

س۹8bہ S99áు . অস্তর্বোহ নিবারণের জন্য নিজেদের একজনকে অধিরাজরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়। গৌড়মগুলের অর্থাৎ বাঙ্গল-বিহার-উড়িষ্যার অবিবাদি গণ মধ্য এ চ ত স্থাপন করিয়া গিয়াছিলেন শশাঙ্ক । শশাঙ্ক পথ প্রস্তুত করিয়া না গেলে নির্বাচনের ফলে পাল-বংশের অভু্যদয় সম্ভব হুইত না । বাণ-চিত্রিত গৌড়াধিপের মত স্বভাবতঃ বিশ্বাসঘাতক এবং নিষ্ঠুর ব্যক্তির দ্বারা একরূপ স্বসম্বদ্ধ রাষ্ট্রগঠনকার্য্য সাধিত হইতে পারে না । দৃঢ়ভাবে নবরাষ্ট্রগঠনকারীর একদিকে বজের মত কঠোর, এবং অপরদিকে শিরীযকুসুমের মত কোমল, হওয়া দরকার । শশাঙ্ক অবশ্যই রাষ্ট্ৰীয় একতার বিরোধী প্রতিযোগীগণকে বাহুবলে পরাজিত করিয়াছিলেন । কিন্তু কোনও বিস্তৃত ভূভাগের জনসাধারণকে প্রকৃতপ্রস্তাবে বশীভূত এবং তাহাদিগকে একতাস্থত্রে সম্বদ্ধ করিতে হইলে বাহুবলের সঙ্গে ধৰ্ম্মবলের প্রয়োগ অর্থাৎ উদারত ও ন্যায়নিষ্ঠ প্রদর্শন করা আবশ্বক। শশাঙ্কের মধ্যে একাধারে এই সকল গুণ না থাকিলে তিনি বাঙ্গ লাবিহার-উড়িষ্যার সামস্তরাজগণের মধ্যে দৃঢ়ভাবে একতা স্থাপন করিতে পারিতেন না। বাহিরের শত্রু পুনঃ পুনঃ আক্রমণ করিয়াও এই একতা নষ্ট করিতে পারে নাই, এবং পরিণামে ইহাই গৌড়জনকে মুক্তির পথে লইয় গিয়াছিল। মালবরাজ এক সময় প্রভাকরবর্দনের অনুগত ছিলেন, এবং প্রভাকরবর্ধনের তুষ্টিবিধানের জন্য আপনার দুই পুত্র, কুমারগুপ্ত এবং মাধবগুপ্তকে, স্থার্থীশ্বরের দরবারে পাঠাইয়াছিলেন। তারপর প্রভাকরবর্দ্ধনের শেষ পীড়ার সমসময়ে সহসা মালবরাজকে স্থার্থীশ্বর-রাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রায় ব্রতী এবং প্রভাকরের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে কান্তকুম্ভপতি গ্রহবৰ্ম্মাকে নিহত এবং কান্যকুক্ত অধিকৃত করিয়া স্থার্থীশ্বর-রাজ্য আক্রমণ করিতে উদ্যত দেখিতে পাই। এমন সময় ১০,০০০ অশ্বারোহী লইয়া গিয়া রাজ্যবৰ্দ্ধন মালবসেনা পরাজিত করিলেন বটে, কিন্তু তাহার পরেই গৌড়াধিপের শিবিরে প্রাণ হারাইলেন। প্রভাকরবৰ্দ্ধনের উৎকট পীড়ার সংবাদ পাওয়া মাত্রই যে মালবরাজ এবং গৌড়াধিপ কান্তকুজের নিকটে পহুছিয়াছিলেন 龜° এরূপ অনুমান অসম্ভব, কেন-ন, সেকালে মালব এবং গৌড় হইতে কান্তকুঞ্জ পহুছিতে অনেক দিন লাগিত। সুতরাং অকুমান করিতে হইবে, প্রভাকরবদ্ধনের পীড়ার পূর্ব হইতেই মালবে এবং গৌড়ে একযোগে কান্ত কুঞ্জ-আক্রমণের উদ্যোগ চলিতেছিল । দৈবযোগে সেই প্রস্তাব কার্য্যে পরিণত হইয়াছিল প্রভাকরবর্জনের পীড়ার সময়, এবং কান্তকুন্ড অধিকৃত হইয়াছিল তাহার মৃত্যুর দিবসে। এই মিলিত অভিধানের সংবাদ স্থার্থীশ্বরে জানিত না, সুতরাং মিলিত সেনার আক্রমণ প্রতিরোধের কোন আয়োজনও সেখানে ছিল না। পর গ্রহবৰ্ম্মর নিধনের এবং ভগ্নীর কারাবরোধের সংবাদ পাইয়া, শত্রুপক্ষের বলাবল হিসাব না করিয়া, মাত্র দশ সহস্ৰ অশ্বারোহী লইয়। রাজ্যবৰ্দ্ধন কান্তকুঞ্জের দিকে ধাবিত হইয়াছিলেন । একদিন অগ্রগামী মালবসেনার সহিত খণ্ডযুদ্ধে জয়লাভ করিয়৷ পরেই হয়ত রাজ্যবদ্ধনকে । মিলিত সেনার সম্মুখীন হইতে হইয়াছিল । বাণের কথায় সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতে গেলে বলিতে হয়, এমন সময় গোঁড়াধিপ শশাঙ্ক রাজ্যবৰ্দ্ধনকে একাকী নিরস্ত্র অবস্থায় তাহার শিবিরে উপস্থিত হইতে অকুরোধ করিলেন, এবং গৌড়শিবিরে পহু ছিলে শশাঙ্ক বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া তাহাকে হত্য করিলেন । রাজ্যবৰ্দ্ধন অবশু জানিতেন গৌড়াধিপ তীর্থযাত্রায় বহির্গত হইয়। কান্তকুক্ত অঞ্চলে আসেন নাই, এবং তিনি সেকালের রাজনীতির সহিতও সুপরিচিত ছিলেন । সুতরাং মালবসেনা পরাজিত করিবার পরই তিনি যে স্বেচ্ছায় একাকী নিরস্ত্র হইয়া গৌড়শিবিরের আতিথ্য গ্রহণ করিতে সম্মত হইয়াছিলেন এমন কথা বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি হয় না। খুব সম্ভব রাজ্যবৰ্দ্ধন মিলিত গৌড়-মালবসেনার সহিত শেষযুদ্ধে পরাজিত হইয়াছিলেন, এবং যুদ্ধের পর ধূত হইয়া গৌড়শিবিরে নীত হইয়াছিলেন । বাকৃপতির “গৌড়বধ” কাব্যে যশোবর্মী কর্তৃক মগধাধিপ-বধের এইরূপ বিবরণ আছে— “অহবি বলাঅস্তুং কবলিউন মগহাহিবং মহানাহো” ( ৪১৭ ) “অথাপি পলায়মানং কবলয়িত্ব। মগধাখিপং মহানাখঃ” “মহীপতি (যশোবর্শ্ব যুদ্ধক্ষেত্র হইতে ) পলায়মান মগধাধিপতিকে কবলিত ( নিহত ) করিয়া"-- কেহ তার তদনুসারে রাজ্যবৰ্দ্দন