বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WrQ 。 S99āు এখনও রহিয়াছে,—ঠিক তেমনি—কেবল একটু মোটা হইয়াছে—এই যা ! বঁাশতলার পথ দিয়৷ কে যাইতেছিল। তারিণী ডাকিল—কে রে ? স্বরে বুঝি ? সুরে ওরফে সুরবাল ফিরিয়া দাড়াইল । —আমাকে ডাক্‌ছ তারিণী-কাক ? —হঁ্যা—আয় ত মী, একবার এদিকে—আয় বলি, শোন— স্বরবালা র্কাকালে ঘড়া লইয়া আসিয় দাড়াইল । তারিণী তাহার দিকে ন-চাহিয়াই বলিতে আরম্ভ করিল—আচ্ছ স্বরে, তুই-ই বল—ছেলেপিলেকে লোকে বকে না ? মারে-ধরে না ? বকে কি আর নিজের জন্যে ? ছেলের ভালর জন্তেই ত বাপ-মা’য়ে চেষ্টা করে—ন, কি বল ? সুরোকে কথাটা বলিয়৷ সপ্রশ্ন-নেত্রে চাহিয়া থাকে। সুরো সংক্ষেপে উত্তর দিল—তা’ত করেই । —তবেই দেখত—কি না কি বলেছি আমি তা’কে ; মারিও নি, ধরিও নি। ভদ্ধর লোকের ছেলে তুই— গান গেয়ে, আডড দিয়ে, তামাক থেয়ে বেড়ালে তোর চলে ? আর কিছু না, শুধু এই—বুঝলি স্কুরো—ম মঙ্গলচণ্ডীর বেদী ছুয়ে পৰ্য্যস্ত বলতে পারি শুধু একটু বকেছিলুম। সেই কথায় রাগ করে তুই চলে গেলি ? সুরবালা নীচের মাটির দিকে চাহিয়াছিল—তারিণী স্বরবালার মাথার দিকে চাহিল । তারিণী বলিয়া যাইতে লাগিল—ত পালিয়েছিস্— বেশ করেছিস্ ! বাপের ওপর রাগ ক’রে অমন সকলেই পালিয়েও থাকে—আবার চার-পাচ দিন যেতে-না-যেতে ঘরের ছেলে ঘরেও ফিরে আসে, কিন্তু একমাস হয়ে গেল—কোথায় গিয়ে রইল—একটা খবর দিতেও কি দোষ ? - স্বরে তেমনি নিঃশব্দে শুনিয়া যাইতে লাগিল । –কিন্তু এই যে, কোথায় তুই রইলি, একটা খবর পর্যন্ত দিলি নে—এতে আমার প্রাণটাই কি ঠাণ্ড থাকে। রাতে ঘুম নেই—পেটে অন্নজল নেই – কেবল জয় জয় আর তারিণী গাছের দিকে জয় ---বুঝলি স্বরে, ওর জন্তে ধৰ্ম্মে মন দেবারও জে৷ নেই—ছেলে নয় ত শত্তর সব—কেবল যন্ত্রণা দিত্তে আসে, তোরা বেশ আছিস । ইঙ্গিতটা সুরোর উপর । স্বরে বিধবা, পৃথিবীতে কেবল তাহার ভাইয়ের অন্নধ্বংস করিতেই জন্ম ; কথাটা গিয়া সুরোর অন্তরতম প্রদেশে বিধিল । বাহির হইতে ত দেখিতে বেশ, ঝাড় হাত পা, নিঝৰ্বাট—কিন্তু তাহার হৃদয়ের গোপন আকাঙ্ক্ষাটার খবর বোধ করি একমাত্র বিধাতা ছাড়া আর কেউ জানে না । স্বরবাল নিজের অস্বস্তিটুকুকে ঢাকিতে গিয়া একটু চঞ্চল হইয়া উঠিল । বলিল—তুমি কিছু ভেব না তারিণীক’—সে আসবেই আসবে—আর দিনকতক যাকৃ—তখন দেখে নিও । --ছাই আসবে—আর এলেই আমি ওকে বাড়িতে ঠাই দেব ভেবেছিস্ ? বলব—য, যেখানে ছিলি সেখানে য। --ছোটবেলা থেকে মানুষ করলাম আমি, দুধ খাওয়ান বল—ঘুম পাড়ান বল—যা-কিছু সবই ত আমি— মায়ের পেটে এসেই তাকে ত কুপোকাৎ করেছিলেন । আমি না থাকলে এতটুকুন বেলাতেই ইছেমতীতে ভাসতিস —আর সেই ছেলে কি-না এখন মাতুয হয়ে-- মানুষ হইয়া জয় যে তাহার কি করিতেছে সে-টুকু তারিণী আর ভাষায় প্রকাশ করিল না—পেয়ারাগাছের একটি পাতা লইয়। অন্যমনস্কভাবে চিরিয়া চিরিয়া ফেলিয়া দিতে লাগিল । হঠাৎ একবার মুখ তুলিয়া বলিল—আচ্ছ, বল ত সুরে, আমার দোষ ? স্বরে বলিল—না, তোমার আর কি দোষ, ওরকম ত লোকে ছেলেকে বলেই থাকে— —তবে ? আচ্ছা মানলাম, না হয় আমারই দোষ, বুড়ে মানুষ ত, মাথা গরম ক’রে যা-তা ব’লে ফেলেছিলাম—তা ব’লে তোরও ত বুঝতে হয় একটু ; দু-দিন বাদে বাড়ি ফিরে এলেই পারতিস্—মিটে যেত গোল, তা না একমাস হয়ে গেল—না একটা খবর, না একটা কিছু।