বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্য। ] -- - হিন্দু রসায়ন-শাস্ত্রের প্রাচীনত্ব বহুবর্ষ পূৰ্ব্বে আমরা যখন বালক ছিলাম তখন ইউরোপীয় পণ্ডিতবর্গের মুখে শুনিতাম প্রাচীন কালের হিন্দু পণ্ডিতেরা কেবল মনস্তত্ব লইয়াই থাকিতেন। কিন্তু আধুনিক অনুসন্ধান ও গবেষণার ফলে জানা গিয়াছে যে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চর্চাতেও প্রাচীন ভারত তদানীন্তন অন্যান্য দেশের অপেক্ষ। বহু পরিমাণে শ্রেষ্ঠ ছিল । যখন স্বশ্ৰাত, রসার্ণব-তত্ত্ব, রসরত্বসমুচ্চয় প্রভৃতি প্রাচীন গ্রন্থোক্ত পরীক্ষা ও পৰ্য্যবেক্ষণ সমূহের কথা পাঠ করি তখন মনে বড় ক্ষোভের উদ্রেক হয় । কি ছিল, কি হইয়াছে। যে দেশে স্বশ্ৰুত পলিয়াছিলেন, ‘শব-ব্যবচ্ছেদ ভিন্ন চিকিৎসা বিদ্য শিক্ষা কর। অসম্ভব’, সেই দেশে শব স্পর্শ করা পর্ষ্যস্ত নিষিদ্ধ হইয়। গেল ; যে দেশের অভিজাতবর্গ স্ববর্ণ-রত্ন- পরীক্ষা, FIfF ( metallurgy), ধাতু ও ঔষধ-সমূহের সংযোগক্রিয়ার জ্ঞান, ক্ষার নিষ্কাসন প্রভৃতি বিবিধ কলায় ব্যুৎপত্তি লাভ গৌরবের বিষয় বিবেচনা করিতেন সেই দেশে স্বাকর ও কামারের কাজ উচ্চ জাতির অবজ্ঞার বিষয় হইয়া উঠিল; যে দেশের মনীষী চুতুকনাথ বলিয়াছিলেন যাহারা শিক্ষণীয় বিষয় পরীক্ষা (experiment) দ্বারা দেখাইতে পারেন তাহারাই প্রকৃত শিক্ষক, সেই দেশের কবিরাজগণ শরীরবিজ্ঞান-বিষয়ক পরীক্ষা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকিয়া চিকিৎসাবিদ্যার শিক্ষকতা করিতে লাগিলেন । বস্তুত: যেদিন হইতে সমাজের বুদ্ধিমান ও বিদ্বান লোকের শিল্পবিজ্ঞানের চচ্চ ত্যাগ করিয়া তাহার ভার অশিক্ষিত নিম্নশ্ৰেণীস্থ লোকের উপর অর্পণ করিলেন সেইদিন হইতে আমাদের কপাল পুড়িল । নাপিতের হস্তে অস্ত্র-চিকিৎসা ও বেদেদের হস্তে উদ্ভিদবিজ্ঞান আলোচনার ভার দিয়া আমরা নিশ্চিন্তু মনে পরলোক-চিন্তায় বাস্ত হইলাম । তবে সম্প্রতি দেশের হাওয়া ফিরিয়াছে। দেশে বিজ্ঞানের আদর বুদ্ধিলাভ করিতেছে। ভারতবর্ষীয় যুবকগণের রসায়নবিজ্ঞান পদার্থবিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ক মৌলিক গবেষণাসমূহ পাশ্চাত্য পণ্ডিতবর্গের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিতেছে। ইহা দেখিয়া মনে স্বতঃই আশার উদ্রেক হয়। লুটায়ে না আপনার স্ব৷ দারিদ্যের সিংহাসনে কর প্র ৱাং {! বিরল,—নাহি যাহে চিন্তু - কে রাখিবে ভরি’ নিজ অগুর আত্মার সম্পদরাশি মঙ্গল উদার। - - - হিন্দু রসায়ন-শাস্ত্রের প্রাচীনত্ব SMSMS MMMMM MMMMMMMS SJJJSMMMJJJSMMMS SSSSSS আর আশার উদ্রেক হয় যখন ভাবি এই অধঃপতিত । জাতিই এককালে বিজ্ঞানচর্চায় জগতের শীর্ষস্থান অধিকার । করিয়াছিল । চরক ও সুশ্রুত, কণাদ ও বরাহমিহির, নাগাৰ্জুন ও ঢুতুকনাথের প্রতিভা আমরা উত্তরাধিকারস্বত্রে লাভ করিয়াছি ; তাই আজ প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানচর্চা সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করিতে প্রবৃত্ত হইতেছি । এই সম্পর্কে, ইংলণ্ডের বৈজ্ঞানিক-মণ্ডলীর মুখপত্র নেচার (Nature ) হিন্দুরসায়নশাস্ত্রের প্রাচীনত্ব সম্বন্ধে সম্প্রতি যে অভিমত প্রকাশ কৰেিয়াছেন তাঙ্গর স্কুল মৰ্ম্ম । উল্লিখিত হইল। “আমরা যে-সকল আবিষ্কার পাশ্চাত্য । জাতিগণ কর্তৃক সম্পাদিত হইয়াছে মনে করিতাম, এখন স্থা দেখা যাইতেছে তাহাদের মধ্যে অনেকগুলি প্রাচীন হিন্দুগ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। রসার্ণব-তত্ত্ব প্রভৃতি পুস্তকে উদ্বপাতন অধঃপাতন তির্যাকপাতন ধাতুনিষ্কাসন প্রভৃতির বর্ণনা । পাঠ করিলে তীক্ষ পৰ্যবেক্ষণশক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। । ইংলণ্ডে বেকন যে পরীক্ষাপদ্ধতির কথা প্রচার করেন এবং । দ্বিতীয় চালসের সমসাময়িক রয়েল সোসাইটার পরীক্ষা «atvq aT*fa***' (exprimentarian philosophers) যেসকল মতবাদ আলোচনা করেন, বহুকাল পূর্কে প্রাচীন ভারতের বুধমণ্ডলীর নিকট তাহ স্বপরিচিত ছিল।” । তার পর চুজুকনাথের কথা উদ্ধৃত করিয় ‘নেচার বলিয়া । ছেন যে “শিক্ষাদানকার্যো পরীক্ষার (experiment) সাহায্য যে কিরূপ ফলদায়ক তাহাও হিন্দুগণ বিশ্বত হন নাই।” সাৰ্দ্ধ দ্বিসহস্র বৎসর পূৰ্ব্বে, তক্ষশীলার স্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে, জীবক কোমার-ভক্ষ আত্ৰেয় মুনির চরণোপাত্ত্বে উপবেশন করিয়া চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন করিয়াছিলেন। কিম্বদন্তী আছে, যে ব্যাকরণবেত্ত পাণিনি এবং প্রাচীন ভারতের ম্যাকিয়াভেলী স্বপ্রসিদ্ধ রাজনীতিবিশারদ sলকাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করিয়াছিলেন। জীবক যে কোমার-ভক্ষ উপাধি লাভ করিয়াছিলেন, সেই ভূনরি অন্ধ প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞানচর্চা সম্বন্ধে গবেষণালগ্ন মারেরই সুপরিজ্ঞাত। ইহা সংস্কৃত 'কোমার-তৃতা’র নালি অপভ্রংশ। কৌমার-ভৃত্য' আয়ুৰ্ব্বেদের অষ্টশাখার অন্যতম। এক কথায় বলিতে গেলে, জীবক ধাত্রীবিদ্যা ও -