পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W*>br লইয়াছিল। আজ আর কেহই আসে নাই। উদরান্নের সংস্থানের জন্য যাহার এ সংসারে ছুটিয়া বেড়াইতে আসি আছে, পরের দিকে চাহিবার অবসর তাহদের কোথায় ? আজ সে নীরস কাঠের বোঝা বহিস্থা মুণীদের দ্বারে দ্বারে দর যাচাই করিতে যায় নাই, পোড়াজীবনের কিছু সম্বল অ চলে বাধিযু আজ তাহাকে শুষ্ককণ্ঠে শূন্তগুহে ফিরিয়া আসিতে হয় নাই। কিন্তু রোগশয্যায় শুইয়। তাহার কণ্ঠ তেমনি শুকাইয়াছে ; মাথায় বোঝা না বহিয়াও মনের মধ্যে সে আজ যে বোঝা চাপাইয়াছে, তাহ আরও ভারি! আজ তাহার অবসর—প্রাণ খুলিয়া কাদিবার দিন । কেহই বাধা দিবার নাই। ন-যাহারা গিয়াছে, তাহাদের জন্য আর সে ভাবিবে না। যাহাঁদের জন্য সে কাদিয়া কাদিয়া দিন কাটাইতেছে, তাহারা ত তাহার জন্য র্কাদে না ; তবে সে তাহাদের জন্য আর ভাবিবে কেন ? একটা ভীষণ রুক্ষ্মতা শুদ্ধপত্রাচ্ছাদিত কুটারে শুষ্কশধ্যায়ু শায়িত। মনিয়ার মায়ের বহিরস্তর অধিকার করিল। ~ সেই একটা দিন - সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে, এমনি সময়ে—মনিয়ার বাপ তখনও মরে নাই ভাবিয়া, সে তাহার মুখে একটু জল দিয়াছিল। আর মনিয়া-মনিয়া মরিবার সময়ে পিপাসা বোধ করে নাই। সে যে জলে ডুবিয়া মরিয়াছে। ন—মরিবার সময়ে বাছার কোনই কষ্ট হয় নাই! তবে যাহারা গিয়াছে, তাহদের জন্য সে আর ভাবিবে না। কিন্তু এই কঠিন শৈলবক্ষে জল ঢালিয়। সে একটা শ্যামালতাকে বঁাচাইয়াছে, বড় করিয়াছে। তাহারই সিঞ্চিত জলে বৰ্দ্ধিত হইয়া লতাটির অগ্রভাগ বেড়ার ফাক দিয়া কুটীরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া সরসতার আনন্দে দুলিতেছে। আর এখন দারুণ পিপাসায় তাহার বুক ফাটিয়া যায়, এসময়ে সে কি একবিন্দু জল পাইবে না? স্বামীপুত্রকে বিদায় দিয়৷ সে কতদিন কতবার মৃত্যুকে সাদরে আহ্বান করিয়াছে, কিন্তু সে ত জানিত না মৃত্যু একদিন এই রূক্ষ্ম শুষ্ক রুদ্রবেগে আসিয়া অদূরে দাড়াইবে! “দিলি না, দিলি না, একটু জল দেরে "--আপন মনে বলিয়। সে নীরব হইল। পরক্ষণেই তাহার মনে হইল, তাহার যে কেহই নাই, সে কাহার কাছে জল চাহিতেছে ? প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩২২ ഹSumitaBot (আলাপ) ০৯:০৩, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)സSumitaBot (আলাপ) { ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড, ുസപ്തസ്സ്.--സ് স্বৰ্য্যস্তের আর বিলম্ব নাই। পশ্চিমদিকের বেড়ার ফাক দিয়া অস্তগামী হুর্য্যের লোহিত রশ্মিখণ্ডগুলি মলিন শয্যার উপর পড়িয়া ঝিকিমিকি জলিতেছিল। মনিয়ার মা শয্যার উপর বসিয়া, পূৰ্ব্বদিকের বেড়ার ফাক দিয়া দেখিল, প্রতিবেশীদের ছেলেরা উপত্যকায় বহুদূরে তখনও খেলা করিতেছে । কিন্তু সহসা বাহিরে ঐ কিসের শব্দ ? ঐ শব্দ যে তাহার পরিচিত। নদীতে বান ডাকিলে এমনি ভাবে সেও কতদিন সকলের সঙ্গে চীংকার করিয়া দূর উপত্যকক্ষেত্রের লোকদিগকে বিপদবাৰ্ত্ত জানাইতে সাধ্যমত চেষ্টা করিয়াছে। রাক্ষসী পাৰ্ব্বতী নদী একদিন মনিয়াকে গ্রাস করিয়াছে, আর আজ কত মনিয়া ভাসিয়া যাইবে —তাহারই মত কত মনিয়ার মায়ের মুখে জল দিবার কেহই থাকিবে না ! সে টলিতে টলিতে হুয়ারের কাছে গেল। দুয়ারের নীচে যে মোট পাথর চাপান ছিল, তাহ ধরিয়া যতদূর সাধ্য সরাইতে চেষ্টা করিল, কিন্তু নড়াইতে পারিল না। আঞ্চদিন সে সামান্য চেষ্টায় পাথরখানা সরাইয়া রাখে, কিন্তু আজ তাহার সে শক্তি নাই। পাথরখানা আজ মৃত্যু ও জীবনের ব্যবধান হষ্ট করিয়া ভাগ্যের মত অটল হইয়া চাপিয়া বসিয়া রহিল। কিন্তু এই কঠিন পাথরের শীতলতা ত এতটুকু যায় নাই! প্রকৃতির নিৰ্ম্মমতার মধ্যে এই শীতল স্পর্শ আর-একদিন মনিয়ার মৃতদেহ দুই হাতে বুকে তুলিয়া সে অনুভব করিয়াছিল। তাহার পর সে শয্যায় গিয়া বসিল, আবার বেড়ার ফক দিয়া দেখিল—তখনও ছেলের তেমনি ভাবে থেলিতেছে। তবে উপায় ? তাহার নিজের জীবনের বিনিময়েও কি সে এতগুলি প্রাণীর জীবন রক্ষা করিতে পারে না ? অন্তরের গোপনতম প্রদেশ হইতে কে যেন তাহাকে সাড়া দিল—মরণেই ত তোমার স্বথ ! মনিয়ার মা আর স্থির থাকিতে পরিল না, একটা দিয়াশালাইয়ের কাঠি জালিয়া হাত বাড়াই৷ বেড়ায় । लांकाश्ग्रा निल । o o -বিন্দু জলের জন্য কত কাদিয়াছে ! - ৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ট্রানির চারিদিকে ব্যাপ্ত হইলেন। ক্রমে অফিলিঙ্গ রবর্তী শালগাছটিকেও দগ্ধ করিতে লাগিল। • \দর হইতে পাহাড়ের উপর আগুন দেখিয়া বালকের দিকে ছুটিয় চলিল। অগণিত কণ্ঠে ধ্বনিত হইল— ল, জল, জল । জল কোথায়? অভাগী মনিয়ার মা কিছু পূৰ্ব্বে এক কিন্তু জল আসিল। ভয়ঙ্করী নদী উন্মাদিনী শঙ্করীর ন্যায় তাণ্ডব নৃত্যে চুটিয়া আসিল। অব্যবহিত পূৰ্ব্বে বালকের পাহাড়ের উপর উঠিয়াছে। - - -

  • - স্বৰ্য্যদেব তখন অস্তাচলচুড়ার অপর দিকে লুকাইয়াছেন। ছায়া তলদেশ হইতে ধীরে ধীরে উঠিয়া পাহাড়টিকে অচ্ছিাদিত করিতেছিল। তপন B মনিয়ার মায়ের চিত নিৰ্ব্বাপিত হয় নাই,—শালগাছটার শাখাপ্রশাখা লইয়া অগ্নিদেব তখনও খেলা করিতেছিলেন।

শ্ৰীকালীপদ বন্দ্যোপাধ্যায় । একলব্য নমি পায় হে নিষাদ, হে অনাৰ্য্য আর্ঘ্যের প্রধান, হীনজন্ম৷ বলি তোমা গুরুকুলে দেয়নিক স্থান । একলব্য, বীরথ্যাতি বিশ্বমাঝে একলভ্য তব তোমার চরণে রাজে বীরত্বের সমগ্র বৈভব । চিত্তবিত্ত সঙ্গে যার সে কখনো নহেক ভিখারী, ত্যাগের আদর্শ যেবা সে কিসের নহে অধিকারী ? অখণ্ড যে জ্ঞানব্রহ্ম, অংশ তার প্রজ্ঞাবীজময় কাননে কান্তারে শৈলে যথা রোক হবে অভূদয় উজ্জল প্রফুল্ল সাজে ! কে তাহারে রাখিবে বাধিয়া গণ্ডী দিয়া ভিত্তি দিয়া বাহিরের নয়ন ধাধিয়া ? কে পারে রোধিতে বিশ্বে পঙ্কমাঝে কমল-বিকাশ খনির তিমির মাঝে মাণিক্যের নিভৃত নিবাস ? প্রবুদ্ধ যা উদগত যা মানসের অন্তস্তল হতে কেমনে রাখিবে বাধি দ্বিজত্বের বাধা রাজপথে ? So একলব্য দেখিতে দেখিতে অগ্নিদেৰ डोमन लिं পরিগ্রহ করিয়া 9) ഹു জাহ্নবী ছুটিবে চলি অবিচারে গিরি বনে মাঠে কে তারে বাধিতে পারে বারাণসী প্রয়াগের ঘটে? মানব-সমূদ্র মাঝে কে করিবে শাশ্বত বিভাগ, - বাধ বাধি ? বিরাটের দেহ-মাঝে কে কাটিবে দাগ ? যে শক্তি নিহিত মূলে কেমনে তা’ করিবে উচ্ছেদ, শাখার ছেদনে বলে ? অথও সে, মূলে নাহি ভেদ। চাহনিক রাজছত্র, দিগ্বিজয়, রত্বের ভাণ্ডারে, বসালে সবার শীর্ষে মানবের চিত্ত-দেবতারে। যেখানে মানব রাজে, সেইখানে দেবতা বিরাজে, কোনো থানে বাধা নাই আভিজাত্য পিঞ্জরের মাঝে। তুমি দেপায়েছ আরো, কচু নহে সাধন বিফল,— সকলেই অধিকারী লভিবারে তপস্যার ফল । কাম্য কিছু নাহি তব, যোগ্যতার করেছ প্রমাণ, মহাভারতের মাঝে বীরদৰ্পে লভিয়াছ স্থান । উদ্ধারেছ বেই সীতা আজীবন সাধনার ফলে নিমেষে ত্যজেছ তাই—উচ্চতর বীরত্বের বলে। শক্তি সে যে ব্রহ্মময়ী, ত্যাগ সে যে চির সত্যময়, আর্য্যের নাহিক লজ্জ তার কাছে লভি পরাজয় । সত্য চির হোক প্রিয় মিথ্যা হোক চির অপস্থত, "' মহাভারতের কথা তাই গেয়ে হউক অমৃত । দীক্ষার দক্ষিণ-ছলে প্রবঞ্চক রাজপুত্ৰগণে দিয়াছ ঘৃণার দান ত্যাগদীপ্ত উজ্জল বদনে, লক্ষগুণ প্রতিশোধ হে বীরেন্দ্র, দিয়েছ ঘৃণার, নিমেষে দিয়েছ হাসি চিরাৰ্জ্জিত জীবনের সার। আধ্য সে করুক গৰ্ব্ব ছিন্ন করি অঙ্গুষ্ঠটি তব, ত্যাগে তুমি কর ভোগ হে অনাৰ্য্য ভারত-গৌরব। আর্ঘ্যেরা রেখেছে তোমা ঘৃণাভরে সরাইয়া দূরে, কৃপা করিবার স্পৰ্দ্ধ রাখ তুমি আর্য্যের গুরুরে। জাগ তুমি হে নিষাদ, ভারতের আর্য্যগণ-মাঝে পশুমাংসে পুষ্টদেহ—মূগচৰ্ম্ম-শৃঙ্গ-স্বায়ুসাজে, শুনায়ে অপ্রিয় সত্য মিথ্যামত্তে, জাগ ত্যাগবীর, নত হোক পদে তব যত ভ্রান্ত গৰ্ব্বোন্নত শির। . ঐকালিদাস রায়। — `