পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নষ্টচন্দ্র চারু বন্দ্যোপাধ্যায় , পরদিন প্রভাতে অনল স্নান করে সাজি নিয়ে পূজার জন্তে ফুল তুলছিল। গৌরী খুম থেকে উঠে অনলকে খুঁজতে খুজতে উঠানে নেমেই অনলকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলে—বাবা, কি কবুছ ? অনল হাসিমুখে গৌরীর দিকে চেয়ে স্নিগ্ধস্বরে বললে— ভগবানের পূজা করব বলে ফুল তুলছি মা । ভোল! কথা মনে পড়াতে গৌরী উচ্চকিত হ’য়ে বলে’ উঠল—কাল রাতে ত আমার উপাসনা করা হয়নি, আমি সুমিয়ে পড়েছিলাম। আজ তুমি যখন পুজো করবে তখন আমাকেও পুঞ্জ করিয়ে দিতে হবে । অমল হেসে বললে—আচ্ছ। গে। ম-ঠাকরুণ, °{蜴 ধেীরা তার ফ্রঞ্চের তলাটা বঁ-হাত দিয়ে তুলে কোচড় করে ফুল তুলতে প্রবৃত্ত হ’ল । অনল ফুল ভোল, cশষ করে’ সাজিট দাওয়ার উপরে রেখে চন্দন ধসূতে বস্ত্ৰ । একটু পরেই গৌরী এক কেঁiচড় ফুল নিয়ে অনলের কাছে দাওয়ার নীচে এসে দাড়াল এবং কোচড় থেকে ডান হাতে করে এক মুঠে ফুল তুলে এক গাল হেসে বললে—বাবা, দেখ, আমি কত ফুল তুলেছি! অনল গৌরীর দিকে মুখ ফিরিয়ে হেসে বললে—বা: বেশ ! তোমাং ক্ষিণে পায়নি ? খাবে না ? শোবার ধরে খাবার আর জল-• • • • •ই-ই-ই। ওতে রেখে না • • • • • যা: ! সব ফুল নষ্ট করে দিলে ! গৌরী তার তোলা ফুল ক’টি কোচড় থেকে মুঠোয় করে আনলের সাজিতে রেখে দেবামাত্র অনল ব্যস্ত হ’য়ে ধে-রকম ভৎসন-ভরা দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল, তাতে গেীরী ভয় পেয়ে বিমূঢ়ের মতন অনলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল, দ্বিতীয় বার ফুল তোলবার জন্যে সে তার হাত কোচড়ের মধ্যে ভরেছিল, সে হাত বার করতে তার অ৷র সাহসে কুলাল না । গেীরী ভয় পেয়েছে দেখে অনল নিজেকে সামূলে নিয়ে হাসবার চেষ্টা করে শুষ্কভাবে বললে—রাখে। মা রাখে, তোমার ফুলু সাজিতে রাখে—সাজিমৃদ্ধ ফুল তুমি নিয়ে ধাণ্ড, খেলা করে গে। ওটা আমি তোমাকেই দিলাম। যাও লক্ষ্মী মেয়ে । - অনলের এই সাস্তুনা ও আশ্বাস-বাকা শুনেও গৌরীর" মন প্রসন্ন ও নির্ভয় হ’ল না, সে বুঝতে পালে, সে একটকিছু অপকৰ্ম্ম করে ফেলেছে । সে মনে-মনে ভাব ছিল সে ত কতবার মার সঙ্গে ফুল নিয়ে চার্চে গেছে, তার হাত থেকে ফুল নিয়ে পাদ্রি তাকে কত অাদর করেছেন, কত ভালো বলেছেন । জ্যাঠী-মশায়কেও সেইরকম খুশী করবে বলেই সে ফুল তুলতে গিয়েছিল। কিন্তু এখানে তার কেন যে অপরাধ হ’ল তা সে ঠিক বুঝে উঠতে না পাৰ্বলেও অপরাধ যে হয়েছে তা সে বেশ স্পষ্টই বুঝতে পাৰ্বলে । সে অশুভরা ছলছল চোখে অনলের মুখের দিকে কাতর দৃষ্টিতে তাকিয়ে করুণস্বরে বললে—আর আমি কখনো দুষ্ট মি করব না বাধা । শিশুর এই কাতরতা দেখে অনলের চোথও সজল হয়ে’ উঠ ল ; সে চন্দন ঘসা ফেলে রেখে তাড়াতাড়ি উঠে গৌরীকে কোলে তুলে নিলে এবং সান্থন দিয়ে বললে— ন মা, তুমি কিছু দুষ্টুমি করোনি, তুমি ত আমার লক্ষ্মী মেয়ে । ওসব ফুল আমি তোমাকে দিলাম, তুমি খেলা করলেই আমার ঠাকুর খুশী হবেন। তুমি চলে, খাবে। অনল গৌরীকে যখন ছয়েই ফেললে, তখন তাকে খাইয়ে দিয়ে একেবারে শুচি নিশ্চিন্ত হয়ে পূজায় বসবে বলে’ গৌরীকে কোলে করে নিয়ে যেখানে গৌরীর খাবার ঢাকা ছিল সেইখানে গেল । গৌরীর খাওয়া হ’লে অনল তাকে বললে—এইবার তুমি ফুল নিয়ে খেলা করে, আমি পুজো করিগে— আমার পুজোর জায়গায় তুমি যেয়ে না...... গৌরী অবাক হয়ে অনলের মুখের দিকে তাকিয়ে