বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯ম সংখ্যা । ] gy এম্বের কোন কোন অংশ পাঠ করিয়ার্তাহাকে শুনাই থাকে | কখনও কখনও তিনি নিদ্রিত হইয়া পড়েন। শয়নকক্ষে এক কি দেড় ঘণ্টা কাল বিশ্রাম করিয়া অপরাপর মহিলাগণ সহ উদ্যানে ভ্রমণার্থ বহির্গত হন। কোন কোন দিন এত বিলম্বে উষ্ঠান হইতে প্রত্যাবর্তন করেন যে, সায়ংকালীন আহারের সময় উপস্থিত হইয়া থাকে। প্রতি চান্দ্রমাসের প্রথম ও পঞ্চদশ দিবসে রাজপুরীতে নাট্যাভিনয় হইয়া থাকে। সেই দিন দরবারগৃহ হইতেই সম্রাট ও বৃদ্ধ সম্রাজ্ঞী নাট্যাভিনয় দেখিবার জন্ত গমন করেন। নাট্যমঞ্চের সম্মুখস্থ প্রাসাদে সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীগণ উপবেশন করিলে প্রসিদ্ধ প্রসিদ্ধ অভিনেতাগণ জঁাকজমকপূর্ণ পরিচ্ছদ পরিধানপুৰ্ব্বক আসিয়া তাহাদিগকে প্রণাম (খ-টেউ) করে, এবং “রাজ্যের শান্তি, উন্নতি এবং সমাট ও সমাজ্ঞী ইহাদিগের দীর্ঘজীবন” কামনা করিয়া তাহারা সে দিনকার ধার্যা অভিনয় আরম্ভ করিয়া থাকে। দরবার গৃহে রাজকাৰ্য্য সম্পন্ন করিতে বিলম্ব হইলে সমাট ও সম্রাজ্ঞী নাট্যাভিনয় স্থলেই তাহাদের প্রাতরাশ গ্রহণ কুরিয়া থাকেন। ধৰ্ম্মের, নিয়মানুসারে বৃদ্ধারাণী মাসের নির্দিষ্ট দিনে মৎস মাংস ভক্ষণ করেন না। মাত্র শাকসবজী আহার করিয়া থাকেন। বৃদ্ধ রমণীগণের চীনরাজ্যের সৰ্ব্বত্রই এই প্রকার রীতি দৃষ্ট হইয়া থাকে। কোন কোন পৰ্ব্ব উপলক্ষে রাজবংশের অভিজাতবর্গকে রাজপুরীতে নিমন্ত্রণ করা হইয়া থাকে, এবং সেই সঙ্গে অপর মহিলাগণকেও নিমন্ত্রণ করা হয়। অল্পবয়স্ক বা অধিকবয়স্ক নিমন্ত্রিত ব্যক্তিগণকে বৃদ্ধারাণীকে প্রণাম করিতে হয়। একদা এক নিমন্ত্রণের সময় তাহার কোন আত্মীয়ের পাঁচ বৎসর বয়সের একটি বালিকা কিছুতেই বৃদ্ধারাণীকে প্রণাম করিতে স্বীকৃত হইল না। বালিকাকে তিনি ও তাহার মাতা কত প্রকার বুঝাইলেন কিন্তু সকলই বৃথা হইল। সে অভিবাদন করিল না। বৃদ্ধারাণী এই বালিকার ব্যবহারে অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “এমন বেয়াদবি আমি সহ করিতে পারি না, ইহাকে শীঘ্র এখান হইতে লইয়া যাও।” তাহাতে বালিকার মাতা অত্যন্ত দুঃখিত হইয় ক্ৰন্দনের স্বরে কহিলেন যে, “আপনি এই অবোধ বালিকার উপর রুষ্ট হইবেন না ; ইহার অপরাধ গোর । so & 24 ক্ষমা করুন।” বুদ্ধারাণী উত্তর করিলেন, “তুমি মনে করিয়াছ যে কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি বালক বালিকার অপরাধে বিরক্ত হয়। এত তাহার অপরাধ নহে, এ তোমার অপরাধ, কারণ তুমি ইহাকে আদব কায়দা শিক্ষা দিলে, এ এপ্রকার ব্যবহার করিত না। দুঃখের বিষয় তোমার অপরাধের জন্ত এই অবোধ বালিকাকে শাস্তিভোগ করিতে হইল। তোমাকেও এই বালিকার সঙ্গে এখান হইতে যাইতে আদেশ করি।” এই কথার পর সেই পরিবারের সকলকেই রাজপুরী হইতে বহিস্কৃত হইতে হইয়াছিল এবং ইহার পর বহুদিন যাবত রাজপুরীতে সেই পরিবারের নিমন্ত্রণ বন্ধ ছিল। o রাজপুরীর উষ্ঠানে একপ্রকার লেবু জন্মে, তাহাকে “বুদ্ধদেবের হস্ত” নাম দেওয়া হইয়াছে। এই লেবু দেপিতে হাতের আকৃতি। ইহা বড় মুগন্ধযুক্ত । সুগন্ধের জন্য স্তুপাকারে ইহা রক্ষিত হইয়া থাকে। - শ্রীরামলাল সরকার। - গোর । > २ সে দিন তর্কে গোরাকে অপদস্থ করিয়া স্বচরিতার সম্মুখে নিজের জয়পতাকা তুলিয়া ধরিবার জন্য হারানের বিশেষ ইচ্ছা ছিল, গোড়ায় সুচরিতাও তাঁহাই আশা করিয়াছিল। কিন্তু দৈবক্রমে ঠিক তাহার বিপরীত ঘটিল। ধৰ্ম্মবিশ্বাস ও সামাজিক মতে সুচরিতার সঙ্গে গোরার মিল ছিল না কিন্তু স্বদেশের প্রতি মমত্ব, স্বজাতির জন্ত বেদন তাহার পক্ষে স্বাভাবিক ছিল। যদিচ দেশের ব্যাপার লইয়া সে সৰ্ব্বদা আলোচনা করে নাই কিন্তু সে দিন স্বজাতির নিন্দায় গোরা যখন অকস্মাৎ বজ্রনাদ করিয়া উঠিল তখন সুচরিতার সমস্ত মনের মধ্যে তাহার অনুকুল প্রতিধ্বনি বাজিয়া উঠিয়াছিল। এমন বলের সঙ্গে এমন দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে দেশের সম্বন্ধে কেহ তাহার সম্মুখে কথা বলে নাই। স্বজাতি ও স্বদেশের আলোচনায় বাঙালী কিছু না কিছু মুরুবিয়ানা ফলাইয়া থাকে ; তাহাকে গভীর ভাবে সত্য ভাবে বিশ্বাস করে না ; এই জন্য মুখে কবিত্ব করিবার বেলায় দেশের সম্বন্ধে যাহাই বলুক দেশের প্রতি তাহার ভরসা নাই। কিন্তু গোর