পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, দ্বিতীয়াংশ).djvu/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২০ ঝুলাইয়া লইয়া প্রত্যাবর্তন করে। তৎপরে বিজয়গত ও নৃত্য আরম্ভ হয়, ইহাতে রমণীগণও যোগদান করে। বহু নাগাপ্রধান সমতলে নামিবার সময় বাঙালীর মত ভদ্র পরিচ্ছদ ধারণ করে ; কিন্তু গৃহে তাঙ্গদের জাতীয় অদ্ভুত বিচিত্র অথচ সুন্দর পোষাক পরে। বড় বড় শখ কাটয় তাহার মুকুট মাথায় দেয় ; এবং মাথার তালুতে যুগাগ্ৰ বাশের টুপি ময়ূরপুচ্ছ ৪ লাল রং করা ছাগলোমে সজ্জিত করিয়া পরে । পুতি, কড়ি, পিত্তল বা বেত্র নিৰ্ম্মিত হার, বাজু, বালা প্রচুর পরে, কিন্তু উল্লেখযোগ্য বস্থ একটুও পরিধান করে না । পিত্তলের পালিশ করা কোমরবন্ধের নীচে কেছু কেই ছোট ছোট কড়ি দ্বার। সজ্জিত কালে কাপড়ের ছোট ঘাগরার মত পরে এবং অনেকে এই আবরণটুকুও অনাবশুক মনে করে। লাল রং করা বেতের বেড় প্ৰায়ে পরে । ছোট কালে বাটের চকচকে কুঠার ; একটা পোচ বাহির করা চেড়ী ফলার বল্লম ; এবং ৪৫ ফুট লম্বা মহিষচন্মের ঢাণ । বল্লমের বাটে বুরুষের মত করিয়া লোতত লোম লাগানো থাকে । হার ও একটা ধাঘর, কাহারে বা ঘাগর ও থাকে না । প্রধান দলপতিদের বসিবার কেদারা থাকে ; দলপতির কেদারা সৰ্ব্বোচ্চ ; যুবরাজের একধাপ ছোট এবং পরিবারস্থ অপর পরিজনদিগের আরো ছোট । একবার এক দলপতির পুত্র ১৫৷২০ হাত উচ্চ বাশের মাচায় বসিয়া হংরাজ দেীত্যের সাক্ষাৎ করিয়াছিল। সকল নাগাপল্লীর মুরক্ষিত প্রবেশ পথে এক একটা বৃহৎ অত্যুচ্চ গৃহ দেউড়ির মত থাকে ; তাহাতে একদল যুবক প্রতি রাত্রে প্রহরায় নিযুক্ত থাকে । বপদ বর্তী ঘোষণার জষ্ঠ তাহদের নিকট আস্ত গাছ খুদয় তৈরি ঢাক থাকে, এবং অগ্নিসঙ্কেতও করে । যুবক দলপতিগণ প্রায়চ বেশ মুত্র হয় এবং প্রায়ই দীর্ঘায়ত পুরুষ হয়। কিন্তু সাধারণতঃ নাগাগণ উত্তরের জন্তান্ত জাতি অপেক্ষা হানত্র। তাহার ক্ষুদ্রান্থি, অপুষ্টপেশ এবং অপেক্ষাকৃত কৃষ্ণবর্ণ। তাহাদের মুখ গোলাকার ও চেপ্টা মতন এবং চক্ষু ক্ষুদ্র । বহু আসামী নাগ পরিচ্ছদ kরিধান করিয়া ইহাদের মধ্যে মিশিয়া গিয়াছে ; কিন্তু ইহাদের অন্স লাল রঙের ছাগলোমভূষিত স্ত্রীলোকের পরিচ্ছদ মতান্ত অনাড়ম্বর, প্রবাসী । 發 * ৭ম ভাগ । মুখার্কুতি দেখিলে তাহাদিগকে চিনিয়া পৃথক করা যায়। নাগারমণীগণ খৰ্ব্বকায়, কুত্র এবং তার্থদের কোমর নাই, ডাগর পেট বলিয়া বুকে পেটে একাকার । রমণীগণ হয় ত গুরু পরিশ্রমে মুন্দরী হইতে পায় না। ধনেশ্বরীর শাখা দোয়াং নদীর পুৰ্ব্বপ্রদেশস্থ নাগাগণ কোন দলপতি বা প্রধান স্বীকার করে না । জ্ঞানে বা সাধারণত ধনে শ্রেষ্ঠ বর্ষীয়ানকে তাহার গ্রামের মুখপাত নিৰ্ব্বাচন করে ; কিন্তু তাহাকে কোনো ক্ষমতা প্রদত্ত হয় না, এবং তাহার কথা শুনিয়া চলিতেও কেহ বাধ্য থাকে না।’ এই পদ বংশানুক্রমিক ত নহেই, অনেক সময় আজীবনও কখন কথন বিবাদ বিসংবাদ মিটাষ্টধার জন্ত বুদ্ধদের বৈঠক বসে, কিন্তু তাহদের বিচার কাহাকেও কোনো বিষয়ে সাধ্য করিতে পারে না । এক দলের মধ্যে দুই জনের বিবাদ ক্রমে জ্ঞাতিযুদ্ধে পরিণত ইয়া উঠে ; কিন্তু হাতে সমাজে যে দুঃখ আনয়ন করে তাহাই ইহার অন্তরায় কোনো বিধি নিধেধ না থাকিলেও ক্রোধ প্রকাশের ফলের ভীষণতাই সকলকে ক্ৰোধসংযমে বাধ্য করে। তথাপি বৎসরে দুই একবার ইহাদের যুদ্ধ-সাধ ভালো করিয়া মিটাইয়া লয়। কোনো সুবিধাজনক সময় ও স্থান নিৰ্দেশ করিয়া সকলে মিলিত হয় এবং এক চটোপুট সদ্ধ আরম্ভ হয় ; নখ দস্তাদি স্বাভাবিক আয়ুধ ছাড়িয়া দিলে সকলেই নিরস্ত্র হইয়। সকলেরই সহিত যুদ্ধ করে । এই সকল নাগার ‘সেমিশ’ নামক ধনদেবতার নিকটে মহিষ-মিথুন, গাভী প্রভৃতি বড় পশু বলি দেয় এবং ফসলের দেবতা ‘কুচিপাই শুধু ছাগ, মোরোগ ও ডিম্ব বলি গ্রহণ করে । এই সকল দেবতাহ মরণশীল এবং তাহাদের পরম দেবতা সৃষ্টিকৰ্ত্তার কোনো ধারণা ইহাদের নাই। এ সম্বন্ধে ইছারা চুলকাটা মিশমীর অনুরূপ। অনিষ্টকারী দেবতার মধ্যে 'রাপিয়ারা’ প্রধান ; কুকুর ও শূকর বলি দিয়া ইহার তুষ্টিসাধন করিতে হয়। ইহার সহকারী ‘কাংনিবা’ ভূত অন্ধ ও অতি ক্রুর ; কিন্তু সে অন্ধ, মূল্যবান ও সামান্ত বলির পার্থক্য নির্ণয়ে অক্ষম বলিয়া তাহাকে অকিঞ্চিৎকর দ্রব্য দিয়া ভুলানো হয়। যখন সমগ্র সমাজের পক্ষ হইতে শুভাশুভ নির্ণয়ের জন্ত ছুকতাক হয় তখন সমগ্ৰ নহে । ち হইয়া দাড়ায় ।