বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
প্রাচীন ভারতে নারী

মাতুল বসুদেবের পালিতা কন্যা। কিন্তু মহাভারতে তাঁহাকে যদুবংশীয়া ‘মাধবী’ই বলা হইয়াছে।

সুভদ্রাং মাধবীম্। আদি ১.১৫১

 এখানে টীকাকারও বলেন সুভদ্রা মধুবংশজাতা (মধুবংশজাম্)। মাধব মধুবংশীয় বলিয়া শ্রীকৃষ্ণের এক নাম মাধব। বাসুদেবের পরে সুভদ্রা জন্মগ্রহণ করেন—

অনুজাং বাসুদেবস্য। আদি ৬১.৪৪

 অর্জুন দ্বারবতীতে গিয়া বাসুদেবের ভগ্নী ভদ্রভাষিণী সুভদ্রাকে বিবাহ করিলেন—

অর্জুনঃ খলু দ্বারবতীং গত্বা ভগিনীং বাসুদেবস্থ সুভদ্রাং ভদ্রভাষিণীং ভার্যামুদাবহৎ। আদি ৯৫.৭৮

 অর্জুন-মুখেও শুনা গেল সুভদ্রা হইলেন বসুদেবের কন্যা ও শ্রীকৃষ্ণের ভগিনী—

দুহিতা বসুদেবস্য বাসুদেবস্থ চ স্বসা। আদি ২১৯.১৮

 শ্রীকৃষ্ণ বলিয়াছেন, ইনি আমার ভগ্নী এবং সারণের সহোদরা এবং আমার পিতার দয়িতা সুতা—

মমেবা ভগিনী পার্থ সারণস্য সহোদরা।
সুভদ্রা নাম ভদ্রং তে পিতুর্মে দয়িতা সুতা। আদি ২১৯.১৭

 সারণ বসুদেবেরই পুত্র (আদি ২১৯.১০)। সারণের সহোদরা হইলে সুভদ্রা বসুদেবের ঔরসজাতা কন্যা। অর্জুন-সুভদ্রার বিবাহে সারণ উপস্থিত ছিলেন (আদি ২২১.৩২)। যদুবংশীয় আরও অনেকে ঐ বিবাহে যোগ দিয়াছিলেন।

 রুক্মিণী যে ভীষ্মকের ‘আত্মজা’ সেই কথা যুক্তি-চাতুরীতে ‘পালিতা’ বলিয়া চাপা দিবার চেষ্টা মহাভারতে নাই (বন ১২-১১৫)। শ্রীমদ্ভাগবতেও দেখা যায়, বিদর্ভরাজ মহাত্মা ভীষ্মকের পাঁচটি পুত্র ও একটি সুন্দরী কন্যা জন্মিলেন। ছেলেদের নাম রুক্ম্যগ্রজ রুক্মরথ রুক্মবাহু রুক্মকেশ ও রুক্মমালী, ইঁহাদের ভগ্নী হইলেন সতী রুক্মিণী—

রাজাসীদ্‌ভীষ্মকো নাম বিদর্ভাধিপতির্মহান্।
তস্য পঞ্চাভবন্‌পুত্রাঃ কন্যৈকা চ বরাননা।
রুক্ম্যগ্রজো রুক্মরথো রুক্মবাহুরনন্তরঃ।
রুক্মকেশো রুক্মমালী রুক্মিণ্যেষাং স্বসা সতী। ১০, ৫২. ২১-২২

এখানেও সতী শব্দের দ্বারা ভাগবত রুক্মিণীর এই বিবাহ সমর্থন করিয়াছেন। রুক্মিণীর আগাগোড়া চরিতকেও গৌরবেরই মনে করিয়াছেন।