পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতারাম 仓’ দ্বারবান । আচ্ছা, তোমারি নাম বোলুকে যাও । পাচকড়ির মা । যা আবাণীর বেট ! তোকে একটা নাউ দিতাম, তা তোর কপালে চলে না । দ্বারবান। আচ্ছা, তোম খাড়ি রহে । হাম্ ভাণ্ডারীকে বোলাতে ঠে । তখন মিশ্ৰঠাকুর গুন গুন করিয়া পিলু ভাজিতে ভাজিতে অট্টালিকামধ্যে প্রবেশ করিলেন এবং অচিরাৎ জীবন ভাণ্ডারীকে সংবাদ দিলেন সে, “একঠো তরকারীওয়াল আহি হৈ । মুঝকে কুছ মেলেগ, তোমকে বি কুছ মেল সক্ত ঙ্গয় । তোমৃ জলদী অlও ” e জীবন ভাণ্ডারীর বয়স কিছু বেশী, কতকগুল চাবি ঘুনসিতে ঝোলান। মুখ বড় রুক্ষ । কিঞ্চিৎ লাভের প্রভ্যাশ পাইয়। সে শীঘ্র বাহির হইয়া আসিল । দেখিলদুইটি স্ত্রীলোক দাড়াইয়া আছে । জিজ্ঞাসা করিল, “কে ডেকেছে গা ?” পাঁচকড়ির ম৷ বলিল, “এই আমার ঘরে কিছু তরকারী হয়েছে, তাই ডেকেছি। কিছু বা তুমি নিও, কিছু বা দরোয়ান্‌জীকে দিও, আর কিছু বা সরকারীতে দিও " জীবন ভাণ্ডারী। য, কাল ষাবো । পাঁচকড়ির ম| | অার একটি দেপুখী অনাথ মেয়ে এয়েছে । ও কি বলবে, একবার শোন । শ্ৰী গল পর্য্যন্ত ঘোমটা টানিয়! প্রাচীরে মিশিয়া এক পাশে দাড়াইয়াছিল । জীবন ভাণ্ডারী তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া রুক্ষভাবে বলিল, “ও ভিক্ষে শিক্ষের কথা আমি হুজুরে কিছু বলিতে পারিব না।" পাঁচকড়ির মা তখন অস্ফুটস্বরে ভাণ্ডারী মহাশয়কে বলিল, “ভিক্ষে যদি কিছু পায় ত অৰ্দ্ধেক তোমার ।" ভাণ্ডারী মহাশয় তখন প্রসন্নবদনে বলিলেন, “কি বল মা ?” ভিখারীর পক্ষে ভাণ্ডারীর প্রভুর দ্বার অবারিত । শ্ৰী ভিক্ষার অভিপ্রায় জানাইল, সুতরাং ভাণ্ডারী মহাশয় তাহাকে মুনিবের কাছে লইয়া যাইতে বাধ্য তা ভোর বাড়া কোথা, ব’লে হইলেন । ভাণ্ডারী শ্ৰীকে পৌঁছাইয়া দিয়া প্রভুর আজ্ঞামত চলিয়া গেল । শ্ৰী আসিয়া দ্বারদেশে দাড়াইল । অবগুণ্ঠনবতী, বেপমান । গৃহকর্তা বলিলেন, “তুমি কে ?” ঐ বলিল, “আমি ঐ ।” “ঐ ! তুমি তবে কি আমাকে চেন না ? না চিনিয়া আমার কাছে আসিয়াছ ? আমি সীতারাম রায় ।” তখন শ্ৰী মুখের ঘোমট। তুলিল সীতারাম দেখিলেন, আশাপূর্ণা, বর্ষাবারি নিষিক্ত পদ্মের ন্যায় অনিন্দাসুন্দরমুখী । বলিলেন, “তুমি ঐ ! এত সুন্দরী ?” ... • শ্ৰী বলিল, “আমি বড় দুঃখী তোমার ব্যঙ্গের মোগ্য নহি ”—ঐ কঁাদিতে লাগিল । সীতারাম বলিলেন, “এত দিনের পর কেন আসিয়াছ ? আসিয়াছ ত অত কঁাদিতেছ কেন ?” শ্ৰী তৰু কাদে –কথ। কঙ্গে ন! সীতারাম বলিল, “নিকটে এসে " তখন শ্ৰী অতি মুড়স্বরে বলিল, “আমি বিছানা । মাড়াইব ন—আমার অশৌচ ৷” সীতা । সে কি ? গদগদম্বরে অশপূণলোচনে শ্ৰী বলিতে লাগিল, “আজ আমার ম| মরিয়াছেন ।" সীতা । সেই বিপদে পড়িয়৷ কি তুমি আজ আমার কাছে অসিয়াছ ? শ্ৰী । ন! –আমার মা'র কাজ আমি যথাসাধ্য করিব । সে জন্য তোমায় গুঃখ দিব না । কিন্তু আজ আমার ভারী বিপদ । সীতা । আর কি বিপদ ? শ্ৰী । আমার ভাই যায় । কাজী সাহেব তাহার জায়ন্তে কবরের হুকুম দিয়াছেন । সে এখন হাবুজথানায় আছে । সীতা । সে কি ? কি করেছে ? তখন ঐ লাহা যাহা শুনিয়াছিল এবং যাহা যাহ। দেখিয়াছিল, তাহ মূঢ়স্বরে কাদিতে কাদিতে আছে|পাস্ত বলিল শুনিয়া দীঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া সীতারাম বলিলেন- “এখন উপায় ?” শ্ৰী। এখন উপায় তুমি! তাই এত বৎসরের পর এসেছি । সীতা । আমি কি করিব ? শ্ৰী । তুমি কি করিবে ? তবে কে করিবে ? আমি জানি, তুমি সব পার । সীতা । দিল্লীর বাদশাহের চাকর এই কাজী । দিল্লীর বাদশাহের সঙ্গে বিরোধ করে কার সাধ্য ? শ্ৰী বলিল, “তবে কি কোন উপায় নাই ?” সীতারাম অনেক ভাবিয়া বলিলেন, “উপায় আছে । তোমার ভাইকে বাচাইতে পারি, কিন্তু আমি মরিব ।” শ্ৰী । দেখ, দেবতা আছেন, ধৰ্ম্ম আছেন, নারায়ণ আছেন। কিছুই মিথ্যা নয় । তুমি দীনদুঃখীকে