পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s معیا झु সপ্তদশ পরিচ্ছেদ ফাসির পর মোকদমার তদারক আমরা কলিকাতায় দিন কতক সুখে স্বচ্ছন্দে রছিলাম । তার পর দেখিলাম, স্বামী এক দিন একখানা চিঠি হাতে করিয়া অত্যন্ত বিষঃভাবে রহিয়াছেন । জিজ্ঞাসা করিলাম, “এত বিমর্য কেন ?" তিনি বলিলেন, “বাড়ী হইতে চিঠি আসিয়াছে, বাড়ী যাইতে হইবে।” আমি হঠাৎ বলিয়া ফেলিলাম, “আমি ?” আমি দাড়াইয়া ছিলাম—মাটীতে বসিয়া পড়িলাম । চক্ষু দিয়া দরবিগলিত ধারা পড়িতে লাগিল । তিনি সস্নেহে হাত ধরিয়া অামায় তুলির মুখ চুম্বন করিয়৷ অশ্রজল মুছইয়া দিলেন। বলিলেন, “সেই কথাই আমিও ভাবিতেছিলাম । তোমায় ছাড়িয়া যাইতে পারিব ন৷ ” আমি । সেখানে আমাকে কি বলিয়া পরিচিত করিবে ? –কি প্রকারে, কোথায় রাখিবে ? তিনি। তাই ভাবিতেছি । সহর নয় যে, আর একটা জায়গায় রাখিব, কেহ জানিতে পরিবে না । বাপ-মা'র চক্ষের উপর তোমায়ু কোথায় রাখিব ? আমি । না গেলেই কি নয় ? তিনি । না গেলেই নয় । আমি । কস্ত দিনে ফিরবে ? শীঘ্র ফের যদি, তবে আমাকে না হয় এইখানেই রাখিয়া ষাও । তিনি । শীঘ্র ফিরিতে পারিব, এমন ভরসা নাই । কলিকাতায় আমরা কালে ভদ্ৰে আসি ৷ আমি । তুমি যাও—আমি তোমার জঞ্জাল হইব না । ( বিস্তর কাদিতে কঁাদিতে এই কথা বলিলাম ) আমার কপালে য। থাকে, তাই ঘটবে। তিনি । কিন্তু আমি যে তোমায়-না দেখিলে পাগল হইব । আমি । দেখ, আমি তোমার বিবাহিতা স্ত্রী নহি-(স্বামী মহাশয় একটু নড়িয়া উঠিলেন )— তোমার উপর আমার কোন অধিকার নাই । আমাকে তুমি এ সময় বিদায়— তিনি আমাকে আর কথা কহিতে দিলেন ন । বলিলেন, “আজ আর এ কথায় কাজ নাই । আজ ভাবি । যা ভাবিয়া স্থির করিব, কা’ল বলিব ।” বৈকালে তিনি রমণবাবুকে আসিতে লিখিলেন । লিথিলেন, “গোপনীয় কথা আছে। এখানে না আসিলে বলা হুইবে না ।” রমণবাবু আসিলেন । আমি কপাটের আড়াল হইতে শুনিতে লাগিলাম, কি কথ। হয় । স্বামী বলিলেন--"আপনাদিগের সেই পাচিকাটি—যে অল্পবয়সী –তাহার নাম কি ?” রমণ । কুমুদিনী । উপেন্দ্র । তাহার বাড়ী কোথায় ? রমণ । এখন বলিতে পারি না । উ। সধবা না বিধবা ? র । সধবা । উ। তাহার স্বামী কে জানেন ? র। জানি । উ 1 কে ? র। এক্ষণে বলিবার আমার অধিকার নাই । উ। কোন কিছু গুপ্ত-রহস্ত আছে না কি ? র । অাছে । উ । আপনার উষ্ঠাকে কোথায় পাইলেন ? র। আমার স্ত্রী তাহার মাসীর কাছে উহাকে পাইয়াছেন । উ। যাকৃ—এ সব বাজে কথা । উহার চরিত্র কেমন ? র। অনিন্দনীয়। আমাদের বুড়ী রাধুনীকে বড় ক্ষেপাইত । তা ছাড়া একটি দোষও নাই । উ । স্ত্রীলোকের চরিত্রদোষের কথা জিজ্ঞাসা করিতেছি । র। এমন উৎকৃষ্ট চরিত্র দেখা যায় না । উ । উহার বাড়ী কোথায়, কেন বলিতেছেন না ? র। বলিবার অধিকার নাই । উ স্বামীর বাড়া কোথায় ? র । ঐ উত্তর । উ স্বামী জীবিত আছে ? র 1 আছে ৷ উ। আপনি তাহাকে চিনেন ? র । চিনি । উ । ঐ স্ত্রীলোকটি এখন কোথায় ? র । আপনার এই বাড়ীতে । স্বামী মহাশয় চমকিয়া উঠিলেন । হইয়া জিজ্ঞাসা জানিলেন ?” র । আমার বলিবার অধিকার নাই । আপনার জেরা কি ফুরাইল ? উ। ফুরাইল । কিন্তু আপনি ত জিজ্ঞাসা করিলেন না যে, আমি কেন আপনাকে এ কথা জিজ্ঞাসা করিলাম ? বিস্মিত করিলেন, “আপনি কি প্রকারে