বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী অন্যান্য নক্ষত্রগণও তদুপ। বরং অনেক নক্ষত্রের বেগ সৰ্য্যোপেক্ষা প্রচন্ডতর। সিরিয়সের গতি প্রতি সেকেন্ডে ২০ মাইল, ঘণ্টায় ৭২.ooo মাইল। বেগা নামক উক্তজবল নক্ষত্রের বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৫o মাইল, ঘণ্টায় ১৮o,olool মাইল, কস্তার প্রতি সেকেন্ডে ২৫ মাইল, ঘণ্টায় ৯oooo মাইল। পোলাক্সের গতি সেকেন্ডে ৪৯ মাইল, প্রায় বেগার ন্যায়। সপ্তষিার মধ্যের পাঁচটির গতি সিরিয়সের ন্যায়, একটির গতি বেগার ন্যায়। এই বেগ অতি ভয়ঙ্কর, বিশেষ যখন মনে করা যায় যে, এই সকল প্রচন্ডবেগশালী পদার্থের আকার অতি প্রকান্ড(সিরিয়াস সৰ্য্যোপেক্ষা সহস্র গণ বাহৎ), তখন বিস্ময়ের আর সীমা থাকে না। নক্ষত্ৰসকল অদ্ভুত গতিবিশিষ্ট হইলেও, চারি সহস্ৰ বৎসরেও তত্তাবতের স্থানভ্রংশ মনষ্যেচক্ষে লক্ষিত হয় নাই। ঐ সকল নক্ষত্রের অসীম দারতাই ইহার কারণ। উৎকৃষ্ট দরবীক্ষণ সাহায্যে, আশ্চৰ্য্য মান-যন্ত্র ও বিদ্যা-কৌশলের বলে আধনিক জ্যোতিবিদেরা কিঞ্চিৎ স্থানচ্যুতি পৰ্যবেক্ষণ করিয়াছেন। তাহাতেই ঐ সকল গতি স্থিরীকৃত হইয়াছে। নাক্ষত্রিক গতিতত্ত্ব অতি আশ্চৰ্য্য। গগনের একদেশে স্থিত নক্ষত্রও এক দিকেই ধাবমান না হইয়াও নানা দিকে ধাবমান। কখন বা একদিকেই ধাবমান। কোথায় ধাবমান ? কেন ধাবমান ? সে সকল তত্ত্বের আলোচনা এ স্থলে নিম্পপ্রয়োজনীয়, এবং এক প্রকার অসাধ্য। যাহা বলা গেল, তাহাতে প্রতীয়মান হইতেছে যে, গতিই জাগতিক নিয়ম-স্থিতি নিয়ম রোধের ফলমাত্র। জগৎ সববািন্ত্র, সব্বদা চঞ্চল। সেই চাঞ্চল্য বিশেষ করিয়া বঝিতে গেলে, অতি বিসময়কর বোধ হয়। জীবনধারে শোণিতান্দির চাশgল্যই জীবন । হৃৎপিন্ড বা শ্বাস্যযন্ত্রের চাণ8ল্য রহিত হইলেই মাতৃত্যু উপস্থিত হয়। মাতৃত্যু হইলে পরেও, দৈহিক পরমাণমধ্যে রাসায়নিক চাঞ্চল্য সঞ্জার হইয়া, দেহ ধবংস হয়। যেখানে দাল্টিপাত করিব, সেইখানে চাঞ্চল্য, সেই চাঞ্চল্য মঙ্গলকর। যে বদ্ধি চড়িলা, সেই বদ্ধি চিন্তাশালিনী। যে সমাজ গতিবিশিস্ট, সেই সমাজ উন্নতিশীল। বরং সমাজের উচ্ছঙ্খলতা ভাল, তথাপি স্থিরতা ভাল নহে। কত কাল মনষ্যে ? জলে যেরপে বদ্বদ উঠিয়া তখনই বিলীন হয়, পথিবীতে মনষ্যে সেইরােপ জন্মিতেছে ও মরিতেছে। পত্রের পিতা ছিল, তাহার পিতা ছিল, এইরপ অনন্ত মনষয়শ্রেণী:পরম্পরা সম্ৰাট এবং গত হইয়াছে, হইতেছে এবং যতদর বাবা যায়, ভবিষ্যতেও হইবে। ইহার আদি কোথা ? জগদ্দাদির সঙ্গে কি মনষ্যের আদি, না পথিবীর সন্টির বহর পরে প্রথম মনষ্যের সন্টি হইয়াছে ? পথিবীতে মনষ্য কত কাল আছে ? খ্রীস্টানীদিগের প্রাচীন গ্রন্থানসারে মনষ্যের সস্টি এবং জগতের সলিট কালি পরশ্ব হইয়াছে। যে দিন জগদীশ্বর কুম্ভকাররাপে কাদা ছানিয়া পথিবী গড়িয়া, ছয় দিনে তাহাতে মনষ্যাদি পত্তল সাজাইয়াছিলেন, খ্রীস্টানেরা অনামান করেন যে, ছয় সহস্ৰ বৎসর পকেব। এ কথা শ্ৰীস্টানেরাও আর বিশ্বাস করেন না। আমাদিগের ধৰ্ম্ম-পস্তকের কথার প্রতি আমরাও সেইরাপ হতশ্রদ্ধ হইয়াছি। বিজ্ঞানের প্রবাহে সৰ্ব্বত্রই ধৰ্ম্মম-পস্তকসকল ভাসিয়া যাইতেছে। কিন্তু আমাদিগের ধৰ্ম্ম-গ্রন্থে এমন কোন কথা নাই যে, তাহাতে বকায় যে, আমি কালি বা ছয় শত বৎসর বা ছয় সহস্ৰ বৎসর বা ছয় বৎসর পকেব। এই ব্ৰহ্মান্ডের সাজন হইয়াছে। হিন্দ শাস্ত্রানসারে কোটি কোটি বৎসর পকেব, অথবা অনন্ত কাল পৰেব জগতের সন্টি। আধনিক ইউরোপীয় বিজ্ঞানেরও সেই মত। তবে জগতের আদি আছে কি না, কেহ কেহ এই তক তুলিয়া থাকেন। সন্টি অনাদি, এ জগৎ নিত্য; ও সকল কথায় বঝোয় যে, সন্টির আরম্ভ নাই। কিন্তু সন্টি একটি ক্রিয়া-ক্রিয়া মাত্র, কোন বিশেষ সময়ে কৃত হইয়াছে; অতএব সন্টি কোন কালবিশেষে হইয়া থাকিবে। অতএব সন্টি অনাদি বলিলে, অৰ্থ হয় না। যাঁহারা বলেন, সন্টি হইতেছে, যাইতেছে, আবার হইতেছে, এইরূপ অনাদি কাল হইতে হইতেছে, তাঁহারা প্ৰমাণশান্য বিষয়ে বিশ্বাস করেন। এ কথার নৈসগিক প্রমাণ নাই। “অসজচ্চ জগং সব্বং সহ পত্ৰৈ কৃতাত্মভিঃ” ইত্যাদি বাক্যের দ্বারা সচিত হয় যে, জগৎসন্টি এবং মনষ্যে বা মনীষা-জনকদিগের সন্টি এক কালেই श्श्शौंक्षल। এরপ বাক্য 8S