বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

që log vy পরিমাণের হেতু, (১) সােয্য চন্দ্রের গরত্ন, (২) তদীয় দারতা, (৩) তদীয় সম্পবিত্তনকাল, (৪) সমদ্রের গভীরতা। প্রথম, দ্বিতীয়, এবং তৃতীয় তত্ত্ব আমরা জ্ঞাত আছি; চতুর্থ আমরা জানি না, কিন্তু চারিটির সমবায়ের ফল, অর্থাৎ জলোচ্ছবাসের পরিমাণ, আমরা জ্ঞাত আছি। অতএব অজ্ঞাত চতুৰ্থ সমবায়ী কারণ অনায়াসেই গণনা করা যাইতে পারে। আচাৰ্য্য হাটন এই প্রকারে গণনা করিয়া স্থির করিয়াছেন যে, সমদ্র গড়ে ৫, ১২ মাইল, অর্থাৎ পাঁচ মাইলের কিছ: অধিক মাত্র গভীর। লাপ্লাস ব্রেন্ট নগরে জলোচ্ছবাস পৰ্য্যবেক্ষণের বলে যে ‘Ratio of Semidiurnal Coefficients” স্থির করিয়াছিলেন, তাহা হইতেও এইরহপ উপলব্ধি করা যায়। (শব্দ) সচরাচর শব্দ প্রতি সেকেন্ডে ১০৩৮ ফিট গিয়া থাকে বটে, কিন্তু বেথোম ও ব্রেগেট নামক বিজ্ঞানবিং পন্ডিতেরা বৈদ্যুতিক তারে প্রতি সেকেন্ডে, ১১,৪৫৬ ফিট বেগে শব্দ প্রেরণ করিয়াছিলেন। অতএব তারে কেবল পত্র প্রেরণ হয়, এমত নহে; বৈজ্ঞানিক শিলপ আরও কিছ উন্নতি প্রাপ্ত হইলে মনষ্যে তারে কথোপকথন করিতে পারিবে I* মনষ্যের কন্ঠস্বর কত দরে যায় ? বলা যায় না। কোন কোন যাবতীর ব্ৰীড়ারদ্ধ কন্ঠস্বর শনিবার সময়ে, বিরক্তিক্ৰমে ইচ্ছা করে যে, নাকের চাসমা খালিয়া কাণে পরি, কোন কোন প্রাচীনার চীৎকারে বোধ হয়, গ্রামান্তরে পলাইলেও নিম্প্রকৃতি নাই। বিজ্ঞানবিদেরা ও বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, দেখা যাউক । প্রাচীন মতে আকাশ শব্দবহ; আধনিক মতে বায় শব্দবহ। বায়ার তরঙ্গে শব্দের সন্টি ও বহন হয়। অতএব যেখানে বায়, তরল ও ক্ষীণ, সেখানে শব্দের অস্পষ্টতা সম্ভব। ব্লাঙৰ ছড়িলে পটকার মত শব্দ হয়; এবং শ্যাম্পেন্ন খলিলে কাকের শব্দ প্রায় শনিতে পাওয়া যায় না। কিন্তু মাশ্যাস বলেন যে, তিনি সেই শঙ্গোপরেই ১৩৪০ ফিট হইতে মনষ্যে-কণ্ঠ শনিয়াছিলেন। এ বিষয়ে “গগনপয্যটন” প্রবন্ধে কিঞ্চিৎ লেখা হইয়াছে। যদি শব্দবহ বায়কে চোঙ্গার ভিতরে রদ্ধ করা যায়, তবে মনষ্যে-কণ্ঠ যে অনেক দরি হইতে শােনা যাইবে, ইহা বিচিত্র নহে। কেন না, শব্দ-তরঙ্গসকল ছড়াইয়া পড়িবে না। স্থির জল, চোঙ্গার কাজ করে। ক্ষদ্র ক্ষদ্র উচ্চতায় বায় প্রতিহত হইতে পায় না—এজন্য শব্দ-তরঙ্গসকল, ভগ্ন হইয়া নানা দিক দিগন্তরে বিকীর্ণ হয় না। এই জন্য প্রশস্ত নদীর এপার হইতে ডাকিলে ওপারে শনিতে পায়। বিখ্যাত হিমকেন্দ্রনসারী পৰ্যটক পারির সমভিব্যাহারী লেপ্টেনাণ্ট ফন্টর লিখেন যে, তিনি পোর্ট বৌয়েনের এপার হইতে পরপারে স্থিত মনষ্যের সহিত কথোপকথন করিয়াছিলেন। উভয়ের মধ্যে ১০ মাইল ব্যবধান। ইহা আশ্চৰ্য্য বটে। কিন্তু সব্বাপেক্ষা বিস্ময়কর ব্যাপার ডাক্তার ইয়ং কর্তৃক লিখিত হইয়াছে। তিনি বলেন যে, জিৱলটরে দশ মাইল হইতে মনষ্যে-কণ্ঠ শনা গিয়াছে। কথা বিশ্বাসযোগ্য কি ? (জ্যোতিস্তরঙ্গ) প্রবন্ধান্তরে কথিত হইয়াছে যে, আলোক ইথর নামপ্রাপ্ত বিশ্বব্যাপী জাগতিক তরল পদার্থের আন্দোলনের ফল মাত্র। সয্যালোক সপ্ত বণের সমবায়; সেই সপ্ত বৰ্ণ ইন্দ্ৰধন, অথবা সাফাটিক প্রেরিত আলোকে লক্ষিত হয়। প্রত্যেক বণের তরঙ্গসকল পথক পথক ; তাহাদিগের প্রাকৃতিক সমবায়ের ফলে, শ্বেত রৌদ্র। এই সকল জ্যোতিস্তরঙ্গ-বৈচিত্ৰ্যই জগতের বর্ণবৈচিত্র্যের কারণ। কোন কোন পদাৰ্থ, কোন কোন বণের তরঙ্গসকল রদ্ধ করিয়া, অবশিস্টগলি প্রতিহত করে। আমরা সে সকল দ্রব্যকে প্রতিহত তরঙ্গের বণ বিশিস্ট দেখি। তবে তরঙ্গেরই বা বর্ণ-বৈষম্য কেন ? কোন তরঙ্গ রক্ত, কোন তরঙ্গ পীত, কোন তরঙ্গ নীল কেন ? ইহা কেবল তরঙ্গের বেগের তারতম্য। প্রতি ইঞ্চি স্থান মধ্যে একটি নিদিষ্ট সংখ্যার তরঙ্গের উৎপত্তি হইলে, তরঙ্গ রক্তবর্ণ, অন্য নিদিষ্ট সংখ্যায় তরঙ্গ পীতবর্ণ, ইত্যাদি। যে জ্যোতিস্তরঙ্গ এক ইঞ্চি মধ্যে ৩৭,৬৪০ বার প্রক্ষিপ্ত হয়, এবং প্রতি সেকেন্ডে

  • এই প্ৰবন্ধ লিখিত হওয়ার পরে টেলিফোনের আবিক্রিয়া।

Sc st