বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बस्किम ब्राष्नावली অপরাধীর জন্য অন্য বিচারালয়। দেশী লোক ইংরেজ কর্তৃক দন্ডিত হইতে পারে, কিন্তু ইংরেজ দেশী বিচারক কত্ত্বক দণিডত হইতে পারে না। ইহা ভিন্ন ব্যবস্থাগত বৈষম্য আর বড় নাই। কিন্তু ইহা অপেক্ষা কত গরতের বৈষম্য ব্রাহ্মণরাজ্যে দেখা যায়। ইংরেজের জন্য পথক। বিচারালয় হউক, কিন্তু আইন পথক নহে। যেমন একজন দেশীয় লোক ইংরেজ বধ করিলে বধাহী, ইংরেজ দেশী লোককে বধ কারলে আইন অনসারে সেইরাপ বাধাহ। কিন্তু ব্ৰাহ্মণরাজ্যে শব্দুহস্তা ব্ৰাহ্মণের এবং ব্রাহ্মণহস্তা শদ্রের দন্ডের কত বৈষম্য! কে বলিবে, এ বিষয়ে প্রাচীন ভারতবর্ষ হইতে আধনিক ভারতবর্ষ নিকৃষ্ঠািট ? ইংরেজের রাজ্যে যেমন ইংরেজ দেশী লোক কর্তৃক দণ্ডিত হইতে পারে না, প্রাচীন ভারতেও সেইরােপ ব্ৰাহ্মণ শদ্রে কর্তৃক দন্ডিত হইতে পারিত না। বাবা দ্বারকানাথ মিত্র প্রধানতম বিচারালয়ে বসিয়া আধনিক ভারতবর্ষের মখোেজবল করিয়াছেন—“রামরাজ্যে” তিনি কোথা থাকিতেন ? ২য়। ইংরেজের রাজ্যে রাজপ্ৰসাদ প্রায় ইংরেজরই প্রাপ্য, কিন্তু কিয়ৎপরিমাণে দেশীয়েরাও উচ্চ পদে প্রতিষ্ঠিত। ব্রাহ্মণরাজ্যে শব্দ্রদিগের ততটা ঘটিত কি না সন্দেহ। কিন্তু যখন শািন্দ্র, কখন কখন রাজসিংহাসনারোহণ করিতে সক্ষম হইয়াছিল, তখন অন্যান্য উচ্চ পদও যে শদ্রেরা সময়ে সময়ে অধিকৃত করিত, তাহার সন্দেহ নাই। এক্ষণে দেখা যাইতেছে যে, আধনিক ভারতে প্রাথমিক বিচারকাষ্য প্রায় দেশীয় লোকের দ্বারাই হইয়া থাকে,-প্রাচীন ভারতে কি প্রাথমিক বিচারকাৰ্য্য শদ্রের দ্বারা হইত ? আমরা প্রাচীন ভারতবর্ষ সম্পবন্ধে এত অলপই জানি যে, এ স্থির বলিতে পারি না। অনেক বিচারকায্য গ্ৰাম্য সমাজের দ্বারা নিৰ্ব্ববাহ হইত বোধ হয়। সাধারণতঃ কি বিচার, কি সৈনাপত্য, কি অন্যান্য প্রধান পদসকল যে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্ৰিয়ের হস্তে ছিল, তাহা প্রাচীন গ্রন্থাদি পাঠে বোধ হয়। অনেকেই বলিবেন, ইংরেজের প্রাধান্য এবং ব্রাহ্মণ ক্ষত্ৰিয়ের প্রাধান্যে সাদশ্যে কলপনা। সকলপনা নহে; কেন না, ব্ৰাহ্মণ ক্ষত্ৰিয় শব্দ্রপীড়ক হইলেও সবজাতি—ইংরেজেরা ভিন্ন জাতি। ইহার এইরূপ উত্তর দিতে ইচ্ছা করে যে, যে পীড়িত হয়, তাহার পক্ষে সবজাতির পীড়ন ও ভিন্ন জাতির পীড়ন, উভয়ই সমান। সবজাতীয়ের হস্তে পীড়া কিছ মিন্ট, পরজাতীয়ের কৃত পীড়া কিছ তিক্ত লাগে, এমত বোধ হয় না। কিন্তু আমরা সে উত্তর দিতে চাহি না। যদি সবজাতীয়ের কৃত পীড়ায় কাহারও প্রীতি থাকে, তাহাতে আমাদিগের আপত্তি নাই। আমাদিগের এইমাত্র বলিবার উদ্দেশ্য যে, আধনিক ভারতের জাতিপ্রাধান্যের স্থানে প্রাচীন ভারতে বণ্যপ্রাধান্য ছিল। অধিকাংশ লোকের পক্ষে উভয়ই সমান। তবে ইহা অবশ্য সবীকার করিতে হইবে যে, পরাধীন ভারতবর্ষে উচ্চশ্রেণীস্থ লোকে স্বীয় বদ্ধি, শিক্ষা, বংশ, এবং ময্যাদানসারে প্রাধান্য লাভ করিতে পারেন না। যাহার বিদ্যা এবং বদ্ধি আছে, তাহাকে যদি বদ্ধিসঞ্চালনের এবং বিদ্যার ফলোৎপত্তির স্থল না দেওয়া যায়, তবে তাহার প্রতি গরতের অত্যাচার করা হয়। আধনিক ভারতবর্ষে এরাপ ঘটিতেছে। প্রাচীন ভারতবর্ষে বর্ণবৈষম্য গণে তাহাও ছিল, কিন্তু এ পরিমাণে ছিল না। আর এক্ষণে রাজকাৰ্য্যাদি সকল ইংরেজের হস্তে-আমরা পরহস্তরক্ষিত বলিয়া নিজে কোন কায্য করিতে পারিতেছি না। তাহাতে আমাদিগের রােজ্যরক্ষা ও রাজ্যপালনবিদ্যা শিক্ষা হইতেছে না-জাতীয় গণের সম্ৰফৰ্ত্তি হইতেছে না। অতএব সবীকার করিতে হইবে, পরাধীনতা এদিকে উন্নতিরোধক। তেমন আমরা ইউরোপীয় সাহিত্য ও বিজ্ঞানে শিক্ষালাভ করিতেছি। ইউরোপীয় জাতির অধীন না হইলে আমাদিগের কপালে এ সখি ঘটিত না। অতএব আমাদিগের পরাধীনতায় যেমন এক দিকে ক্ষতি, তেমন আর এক দিকে উন্নতি হইতেছে। অতএব ইহাই বাবা যায় যে, আধনিক্যাপেক্ষা প্রাচীন ভারতবর্ষে উচ্চ শ্রেণীর লোকের স্বাধীনতাজনিত কিছু সখি ছিল। কিন্তু অধিকাংশ লোকের পক্ষে প্রায় দাই তুল্য, বরং আধনিক ভারতবষী ভাল। তুলনায় আমরা যাহা পাইলাম, তাহা সংক্ষেপে পনিরক্ত করিতেছি, অনেকের বঝিবার जविक्षा देव। ১। ভিন্নজাতীয় রাজা হইলেই রাজ্য পারতািন্ত্র বা পরাধীন হইল না। ভিক্ষজাতীয় রাজার অধীন রাজ্যকেও সর্বতন্ত্র ও স্বাধীন বলা যাইতে পারে। R88 .