বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बष्किं ब्रष्नाबव्ी অন্যাকরণ করে। কাজে কাজেই এমত স্থলে অনায্যেরা হিন্দীদিগের সব্বাঙ্গীণ অনাকরণে প্রবত্ত হইবে। আমরা এখন ইংরেজাদিগের অন্যাকরণ করিতেছি, পর্ক্সেব মসলমানদিগের অন্যাকরণ করিতাম। আমাদিগের একটি প্রাচীন ধৰ্ম্মম আছে, চারি হাজার বৎসর হইতে সেই ধৰ্ম্মম নানাবিধ কাব্য দশন ও উচ্চ নৈতিক তত্ত্বের দ্বারা অলঙ্কৃত হইয়া লোকমনোমোহন হইয়াছে, তাহার কাছে নিরাভরণ ইসলাম বা শ্ৰীম্পটীয় ধৰ্ম্মম অন্যরাগভাজন হয় না। এই জন্য আমরা এখন সব্বথা ইংরেজীদিগের অন্যাকরণ করিয়াও, ধৰ্ম্মম সম্পবন্ধে তাহদের ততটা অনাগমন করি না। কতকটা না করিতেছি, এমনও নহে। কিন্তু অনাৰ্য্যদিগের মধ্যে তেমন উত্তজবল বা শোভাবিশিস্ট কোন জাতীয় ধৰ্ম্মম নাই। অনেক স্থলে একেবারে কোন প্রকার জাতীয় ধৰ্ম্মম নাই। এমত অবস্থায় অধীন অনাৰ্য্যসমাজ প্ৰভু আৰ্য্যদিগের অন্য বিষয়ে যেমন অন্যাকরণ করিবে, ধৰ্ম্মম সম্পবন্ধেও সেইরােপ অন্যাকরণ করবে। হিন্দরা যে ঠাকুরের পজা করে, তাহারাও সেই ঠাকুরের পজা করিতে আরম্ভ করিবে। হিন্দরা যে সকল উৎসব করে, তাহারাও সেই সকল উৎসব করিতে আরম্ভ করিবে। জীবননিৰ্ব্ববাহের নিত্য নৈমিত্তিক কৰ্ম্মম সকলে হিন্দীদিগের ন্যায় আচার ব্যবহার করিতে থাকিবে। সমগ্র জাতি এইরুপ ব্যবহার করিতে থাকিলে কালক্রমে তাহারাও হিন্দ নাম ধারণ করবে। অন্য হিন্দ কেহ কখন তাহাদিগের অন্ন খাইবে না। তাহাদিগের সহিত কন্যা আদান-প্ৰদান করিবে না, অথবা অন্য কোন প্রকারে তাহাদিগের সহিত মিশিবে না-হয় তা তাহাদিগের সম্পলেট জল পৰ্যন্তও গ্রহণ করিবে না। অতএব তাহারাও একটি পথক হিন্দজাতি বলিয়া গণ্য হইবে। তাহারা আগে যেমন পথিক জাতি ছিল, এখনও তেমনি পথিক জাতি রহিল, কেবল হিন্দীদিগের আচার ব্যবহারের অন্যাকরণ গ্রহণ করিয়া হিন্দজাতি বলিয়া খ্যাত হইল। পাশ্চােত্ত্যদিগের মধ্যে একটি বিবাদের কথা আছে। কেহ কেহ বলেন যে, হিন্দী ধৰ্ম্মম 'prosclytizing’ নহে, অর্থাৎ যে জন্মাবধি হিন্দ নয়, হিন্দরা তাহাকে হিন্দ করে না। আর এক সম্প্রদায় বলেন যে, হিন্দী ধৰ্ম্ম proselytizing, অর্থাৎ অহিন্দও হিন্দ হয়। এ বিবাদের স্থলমৰ্ম্ম উপরে বাবান গেল। খীস্টান বা মসলমানদিগের proselytism এইরূপ যে, তাহারা অন্যকে ভজায়, “তুমি খীষ্টান হও, তুমি মাসলমান হও।” আহত ব্যক্তি খনীন্টান বা মসলমান হইলে তাহার সঙ্গে আহার ব্যবহার, কন্যা আদান প্ৰদান প্রভৃতি সামাজিক কাৰ্য্য সকলেই করিয়া থাকে বা করিতে পারে। হিন্দীদিগের proselytization সেরাপ নহে। হিন্দরা কাহাকেও ডাকে না যে, “তুমি স্বধৰ্ম্মম ত্যাগ করিয়া আসিয়া হিন্দ হও।” যদি কেহ স্বেচ্ছাক্রমে হিন্দধৰ্ম্মম গ্রহণ করে, তাহার সঙ্গে আহার ব্যবহার বা কোন প্রকার সামাজিক কায্য করে না, কিন্তু যে হিন্দধম্ম গ্রহণ করিয়াছে, তাহার বংশে হিন্দধৰ্ম্মম বজায় থাকিলে, তাহার হিন্দনামও লোপ করিতে পারে না। একটা সম্পণে জাতি এইরুপে হিন্দ স্বীকার করে। হিন্দীদিগের proselytism এই প্রকার। ঐ শব্দ মসলমান বা খীস্টান সম্পবন্ধে যে অৰ্থে ব্যবহৃত হইয়া থাকে, হিন্দীদিগের সম্পবন্ধে সে অৰ্থে ব্যবহৃত হয় না। প্রকৃতপ্ৰস্তাবে ಇಂದ್ಲೆ: মধ্যে proselytism নাই এবং তদৰ্থবাচক ভারতীয় কোন আৰ্য্যভাষায় কোন *7s N変 l যে অর্থে অহিন্দ হিন্দ হইতে পারে বলা গিয়াছে, সে অর্থে এখনও অনেক অনায্য জাতি হিন্দী হইতেছে। অনায্যজাতি যে আপনাদিগের অনায্যভাষা পরিত্যাগ করিয়া আয্যভাষা ও আয্যধৰ্ম্মম গ্রহণপৰিবাক হিন্দী হইয়াছে, তাহার কয়েকটি উদাহরণ দিতেছি। প্রথম। হাজারিবাগ প্রদেশে বিদ্যা নামে একটি জাতি বাস করে। বেদিয়া হইতে তাহারা পথিক। বিদ্যামাহাত্ম্য নাম তাহারা কখন কখন ধারণা করিয়া থাকে। ইহারা হিন্দি ভাষা কয় এবং হিন্দমধ্যে গণ্য; কিন্তু এই বিদ্যাগণ মন্ডজাতীয় কোল, তাহাতে কোন সংশয় নাই। চুটীয়া নাগপরের ম্যান্ডদিগের যেরােপ আকৃতি, ইহাদিগেরও সেইরােপ আকৃতি। ম্যান্ডদিগের মধ্যে পহন নামে এক একজন পরোহিত বা গ্ৰাম্য কৰ্ম্মমচারী সব্বত্র দেখা যায়, বিদ্যাগণের মধ্যেও ঐরােপ গ্রামে গ্রামে পহন আছে। মন্ডেরা লোহা প্রস্তুত করিতে সদক্ষ এবং সেই ব্যবসায় অবলম্বন করিয়া থাকে। বিদ্যাগণও সেই কাজে সািদক্ষ ও সাব্যবসায়ী। আর ম্যান্ডদিগের মধ্যে কিলী অৰ্থাৎ জাতিবিভাগ আছে, ইহাদিগেরও সেইরােপ আছে। মান্ডদিগের কিলীর যে যে 96.8