বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

mida অষ্টম পরিচ্ছেদ-ব্ৰজগোপী-ভাগবত R বস্ত্রহরণের নিগঢ়ি তাৎপৰ্য্য আমি যেরপ বােব ইয়াছি, তৎসম্পবন্ধে একটা কথা বাকি আছে। “যৎ করোষি যদর্শনাসি যজ্ঞজহোষি দদাসি যৎ । যত্তপস্যসি কৌন্তেয় তং কুরস্ব মদপণম৷ ইতি বাক্যের অন্যবিত্তী হইয়া যে জগদীশ্বরে সব্বস্ব অপণ করিতে পারে, সেই ঈশ্বরকে পাইবার অধিকারী হয়। বস্ত্রহরণকালে ব্ৰজগোপীগণ শ্ৰীকৃষ্ণে সৰ্ব্ববাসস্বাপণ ক্ষমতা দেখাইল, এজন্য তাহারা কৃষ্ণকে পাইবার অধিকারিণী হইল। আর একটি উপন্যাস রচনা করিয়া ভাগবতকার এই তত্ত্ব আরও পরিস্কৃত করিয়াছেন। সে উপন্যাস এই-- একদা গোচরণকালে বনমধ্যস্থ গোপালগণ অত্যন্ত ক্ষধাত্ত হইয়া কৃষ্ণের নিকট আহায্য প্রার্থনা করিল। অন্দরবত্তী কোন স্থানে কতকগলি ব্ৰাহ্মণ যজ্ঞ করিতেছিলেন। কৃষ্ণ গোপালগণকে উপদেশ করিলেন যে, সেইখানে গিয়া আমার নাম করিয়া অঙ্কনভিক্ষা চাও । গোপালেরা যজ্ঞস্থলে গিয়া কৃষ্ণের নাম করিয়া অন্নভিক্ষা চাহিল। ব্ৰাহ্মণেরা তাহাদিগকে কিছ না দিয়া তাড়াইয়া দিল। গোপালগণ। কৃষ্ণের নিকট প্রত্যাগমন করিয়া সেই সকল কথা জানাইল । কৃষ্ণ তখন বলিলেন যে, তোমরা পনেকবার যজ্ঞস্থলে গিয়া অন্তঃপরিবাসিনী ব্ৰাহ্মণকন্যাদিগের নিকট আমার নাম করিয়া অন্ন ভিক্ষা চাও । গোপালের তাহাঁই করিল। ব্ৰাহ্মণকন্যাগণ কৃষ্ণের নাম শনিয়া গোপালাদিগকে প্রভূত অন্নব্যঞ্জন প্ৰদান করিল, এবং কৃষ্ণ আদরে আছেন শনিয়া তাঁহার দশনে আসিল । তাহারা কৃষ্ণকে ঈশ্বর বলিয়া জানিয়াছিল। তাহারা কৃষ্ণকে দশন করিলে কৃষ্ণ তাহাদিগকে গহে যাইতে অনািমতি করিলেন। ব্ৰাহ্মণকন্যাগণ বললেন, “আমরা আপনার ভক্ত, আমরা পিতা, মাতা, ভ্রাতা, পত্ৰিাদি ত্যাগ করিয়া আসিয়াছি--তাঁহারা আর আমাদিগকে গ্রহণ করবেন না। আমরা আপনার পাদাগ্রে পতিত হইতেছি, আমাদিগের অন্যা গতি আপনি বিধান করনি।” কৃষ্ণ তাঁহাদিগকে গ্রহণ করিলেন না, বলিলেন, “দেখ, অঙ্গসঙ্গই কেবল অন্যরাগের কারণ নহে। তোমরা আমাতে চিত্ত নিবিশিষ্ট কর, আমাকে অচিরে প্রাপ্ত হইবে । আমার শ্রবণ, দশন, ধান, অনাকীত্তনে আমাকে পাইবো –সন্নিকষে সেরাপ পাইবে না। অতএব তোমরা গহে ফিরিয়া যাও ।” তাহারা ফিরিয়া গেল । এখন এই ব্ৰাহ্মণকন্যাগণ কৃষ্ণকে পাইবার যোগ্য কি করিয়াছিলেন ? কেবলমাত্র পিত্ৰাদি স্বজন ত্যাগ করিয়া আসিয়াছিলেন। কুলটাগণ সামান্য জারান গমনাথেও তাহা করিয়া থাকে। ভগবানে সব্বস্বাপণ। তাঁহাদিগের হয় নাই, সিদ্ধ হইবার তাঁহারা অধিকারিণী হন নাই । অতএব সিদ্ধ হইবার প্রথম সোপান শ্রবণ-মনন-নিদিধ্যাসনাদির জন্য তাঁহাদিগকে উপবিট করিয়া কৃষ্ণ তাঁহাদিগকে প্রত্যাখ্যান করিলেন। পবিত্ৰৱাহ্মণকুলোদ্ভূত সাধনাভাবে যাহাতে অধিকারিণী হইল। না, সাধনাপ্রভাবে গোপকন্যাগণ তাহাতে অধিকারিণী হইল। পরবরাগবাণ নস্থলে, ভাগবতকার গোপকন্যাদিগের শ্রবণ মনন নিদিধ্যাসন সবিস্তারে বাবাইয়াছেন। এক্ষণে আমরা ভাগবতে বিখ্যাত রাসপঞ্চাধ্যায়ে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। কিন্তু এই রাসলীলাতত্ত্ব বস্ত্রহরণোপলক্ষে আমি এত সবিস্তারে বঝোইয়াছি যে, এই রাসপঞ্চাধ্যায্যের কথা অতি সংক্ষেপে বলিলেই চলিবে । নবম পরিচ্ছেদ-ব্ৰজগোপী-ভাগবত রাসলীলা ভাগবতের দশম সকন্ধে ২৯ । ৩o ৷৷ ৩১ ৷৷ ৩২ ৷৷ ৩৩ এই পাঁচ অধ্যায়ে রাসপণ9াধ্যায়। প্রথম অর্থাৎ উনত্রিংশ অধ্যায়ে শারদ পণিমা-রজনীতে শ্ৰীকৃষ্ণ মধরে বেণীবাদন করিলেন। পাঠকের সমরণ হইবে যে, বিষ্ণপরিাণে আছে, তিনি কলপাদ অর্থাৎ অসফটপদ গীত করিলেন। ভাগবতকার সেই ‘কাল’ শব্দ রাখিয়াছেন, যথা ‘জগেী কলম”। টীকাকার বিশ্বনাথ চক্রবত্তীর্ণ এই ‘কাল’ শব্দ 8●é

  • S-OO