পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বামিত্ৰগোত্ৰ-মিত্রবংশ উত্তরপ্লাষ্ট্ৰীশ্ন কাল্পস্থ-কাণ্ড CoCo, ময়নাডালের মিত্ৰ-ঠাকুর-সংশ। প্রায় সাড়ে তিনশত বর্ষ অতীত হইল বৰ্দ্ধমান জেলার অন্তর্গত কাটোয়ার সন্নিকটস্থ রাজুর গ্রামে কালীচরণ মিত্র নামে এক মহাত্মা বাস করিতেন। তিনি দুঘর মিত্ৰবংশসস্তৃত ছিলেন ও নবাব সরকারে উচ্চপদে কৰ্ম্ম করিতেন। ঐশ্বৰ্য্য ও প্রতিপস্থির অভাব না থাকিলেও পুত্রসস্তান না থাকায় তিনি মনঃকষ্ট্রে থাকিতেন । একদা তাহার পত্নী স্নানার্থ পুষ্করিণীর ঘাটে গিয়া স্বীয় অনপত্যতার জন্য দুঃখপ্রকাশ করিতেছিলেন, এমন সময়ে বড় কান্দরী পাটের ই মঙ্গল ঠাকুর তথায় উপস্থিত হইয় তাহার মনঃকষ্ট্রের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে তিনি তাহাকে দুঃখের কারণ বলিলেন। খ্ৰীমঙ্গল ঠাকুর মহাশয় মিত্রপত্নীর কথা শুনিয়া বলিলেন, এইবার তোমার পুত্র হইবে, কিন্তু তোমার সেই পুত্রট যেন আমার নিকট মন্ত্র গ্রহণ করে । যথাকলে মিত্রপত্নী একটি পুত্র প্রসব করিলেন । পিতৃমাতৃস্নেহে পালিত ইয়া বালক বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে কালীচরণ পুত্রকে দীক্ষাপ্রদান জন্ত কুলগুরুকে নিজ বাটতে আনাইলেন । শুভদিনে দীক্ষার আয়োজন হইল। কালীচরণের পত্নীর পূর্বকথা স্মরণ ছিল না। কালীচরণ যখন পুত্রকে কুলগুরুর নিকট দীক্ষাগ্রহণ জন্য বলিলেন, তখন বালক বলিল, “আমার গুরুদেব কোথায় ?” কালীচরণ উপস্থিত কুলগুরুকে দেখাইয়া দিলে বালক বলিল, “ইনি আমার গুরুদেব নছে।” পরে মাতাকে বলিলেন, “ম তুমি পূৰ্ব্ব কথা ভুলিয়া গিয়াছ।” মাত তখন স্বীয় স্বামীর নিকট পূৰ্ব্ব বৃ হ্রাস্ত প্রকাশ করিলেন। কালীচরণ তখন বহু অর্থ ও বিনয় বাক্যে কুলগুরুকে সন্তুষ্ট করিয়া বিদায় করিলেন । এমন সময়ে বড়কান্দর হইতে শ্ৰীমঙ্গল ঠাকুর রাজুর গ্রামে উপস্থিত হইলেন । তাহার আগমনবাৰ্ত্ত শ্রবণ মাত্র মিত্ৰনন্দন ছুটিয়া গিয়া তাহীর চরণের ধূলি লইয়। তাছাকে নিজ ভবনে লইয়া গেলেন। র্যাহার কৃপায় পুত্ৰমুখ দর্শন করিয়াছেন, তিনি কৃপা করিয়া স্বয়ং তাহাদিগের গৃহে উপস্থিত হইয়াছেন দেখিয়া মিত্রদম্পতী আহলাদিত হইলেন। ঠাকুর মহাশয় যথাকালে বালককে দীক্ষা প্রদান করিলেন ও তাহার নাম রাখিলেন নৃসিংহবল্লভ | দীক্ষামন্ত্র প্রাপ্তি মাত্র নৃসিংহবল্লভ আনন্দে বিভোর হইয়া নৃত্য করিতে লাগিলেন। ঠাকুর মঙ্গল আর তথায় অপেক্ষ, না করিয়া স্বীয় গন্তব্য স্থানে গমন করিলেন। এদিকে নৃসিংহবল্লভ উন্মাদের স্তায় বেড়াইতে লাগিলেন । নৃসিংহবর্মভের এইরূপ বিষয়বৈরাগ্যভাব দেখিয়া পিতামাতার মনে পুনৰ্ব্বার মিরানন্দের আবির্ভাব হইল। কিছুকাল এইরূপে অতিবাহিত হইলে তাহারা উভয়েই পরলে কগমন করিলেন। নৃসিংহুবল্লভ প্রচুর অর্থব্যয় করিয়া অতি যত্ন সহকাবুে তাহদের শ্রাদ্ধাদি করিলেন ও স্বীয় সম্পত্তি পরিত্যাগ করিয়া প্রেমোন্মত্ত ভাবে দেশে দেশে পরিভ্রমণ করিতে লাগিলেন। একদা বীরভূম জিলার অন্তর্গত ময়নাডাল গ্রামের বহির্ভাগে উপস্থিত হইয়া একটা বৃক্ষমূলে বিশ্রামকালে স্বপ্নে দেখিলেন, মহাপ্রভু তাছাকে আদেশ করিতেছেন যে, এই ময়না