বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উনবিংশ পুত্তলিকা।
১৩৫

ব্রাহ্মণ অধোবদন হইয়া মৌন থাকিলেন। মনে মনে কহিতে লাগিলেন এখন গ্রন্থ সকল অনলে সমর্পণ করিয়া সংসার পরিত্যাগ পূর্ব্বক সন্ন্যাসী বেশে দেশে দেশে ভ্রমণ করাই কর্ত্তব্য। ইহা চিন্তা করিতেছেন এমত সময়ে রাজা তাঁহাকে জিজ্ঞাসিলেন, হে পণ্ডিতাগ্রগণ্য, তুমি কি জন্য ক্রোধ করিয়াছ, এবং এ প্রকার অভোবদন হইয়া থাকিবার কারণ কি। তোমার মনের কথা প্রকাশ করিয়া কহ, তুমি কি চিন্তা করিতেছ। ব্রাহ্মণ বলিলেন হে রাজরাজেশ্বর, আমি দ্বাদশ বৎসর সামদ্রিক শাস্ত্র পাঠ করিয়াছিলাম, কিন্তু সে পরিশ্রম আমার নিষ্ফল হইয়াছে, এই জন্য আমার মন বিকল হইয়াছে। রাজা বলিলেন তুমি ইহার প্রমাণ কি প্রকারে পাইলে। ব্রাহ্মণ বলিলেন মহারাজ আমি এক ব্যক্তির চরণে উর্দ্ধরেখা ও পদ্ম চিনু দেখিলাম, কিন্তু সে ব্যক্তি অতি দুঃখী, অরণ্য হইতে কাষ্ঠ আনিয়া উদরপূর্ত্তি করে। অনন্তর তোমারও পদ সৃষ্টি করিলাম, ইহাতেও উত্তম চিত্ন নাই, অথচ তুমি ভূপতি। এই জন্য আমার অন্তঃকরণে ক্রোধোদয় হইয়াছে, আমি পাজি পুথি সকল অনলে সমর্পণ করিয়া সংসার পরিত্যাগ করিব।

 ভূপাল বলিলেন হে বিপ্রবর তুমি ব্যস্ত হইওনা, এই লক্ষণ কোন ব্যক্তির গুপ্ত, কাহারো দৃশ্যমান থাকে। ব্রাহ্মণ কহিলেন ইহা আমি কি প্রকারে জানিব। তখন রাজা অস্ত্র আনাইয়া আপন চরণের চর্ম উঠাইলেন। ব্রাহ্মণ দেখিলেন তাহাতে কমল ও উর্দ্ধরেখা আছে।