তর্কবাচস্পতি মহাশয়ের এই সিদ্ধান্ত শাস্ত্রানুযায়ী নহে। মিতাক্ষরাধৃত একমাত্র বচনের যথাশ্রুত অর্থ অবলম্বন করিয়া, এরূপ অপসিদ্ধান্ত প্রচার করা তাদৃশ প্রসিদ্ধ পণ্ডিতের পক্ষে সদ্বিবেচনার কর্ম্ম হয় নাই। কোনও বিষয়ে শাস্ত্রের মীমাংসায় প্রবৃত্ত হইলে, সে বিষয়ে কি কি প্রমাণ আছে, সবিশেষ অনুসন্ধান করিয়া দেখা আবশ্যক। আপন অভিপ্রায়ের অনুকূল একমাত্র প্রমাণ অবলম্বন করিয়া মীমাংসা করায়, স্বীয় অনভিজ্ঞতাপ্রদর্শন ব্যতীত আর কোনও ফল দেখিতে পাওয়া যায় না। যাহা হউক, আশ্রম সকল নিত্য কি না, তাহার মীমাংসা করিতে হইলে, নিত্য কাহাকে বলে, অগ্রে তাহার নিরূপণ করা আবশ্যক। যে সকল হেতুতে নিত্যত্ব সিদ্ধি হয়, প্রসিদ্ধ প্রাচীন প্রামাণিক সংগ্রহকার তৎসমুদয়ের নিরূপণ করিয়া গিয়াছেন। যথা,
নিত্যং সদা যাবদায়ুর্ন কদাচিদতিক্রমেৎ।
ইত্যুক্ত্যাতিক্রমে দোষশ্রুতেরত্যাগচোদনাৎ।
ফলাশ্রুতের্বীপ্সয়া চ তন্নিত্যমিতি কীর্ত্তিতম্॥
যে বিধিবাক্যে নিত্যশব্দ বা সদাশব্দ থাকে, যাবজ্জীবন করিবেক অথবা কদাচ লঙ্ঘন করিবেক না এরূপ নির্দ্দেশ থাকে, লঙ্ঘনে দোষশ্রুতি থাকে, ত্যাগ করিবেক না এরূপ নির্দ্দেশ থাকে, ফলশ্রুতি না থাকে, অথবা বীপ্সা অর্থাৎ এক শব্দের দুইবার প্রয়োগ থাকে তাহাকে নিত্য বলে।
উদাহরণ,—
১। নিত্যং স্নাত্বা শুচিঃ কুর্য্যাদ্দেবর্ষিপিতৃতর্পণম্।২।১৬৭।(২)।[১]
স্নান করিয়া শুচি হইয়া নিত্য দেবতর্পণ, ঋষিতর্পণ ও পিতৃতর্পণ করিবেক।
- ↑ মনুসংহিতা।