পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ 以创 পাটের কারবারের জন্য বিখ্যাত। সিরাজগঞ্জঘাট-জগন্নাথগঞ্জ স্টীমার পথে ময়মনসিংহ জেলায় পিংনায় একটি স্টীমার স্টেশন আছে। ইহাও একটি পাটের বড় কেন্দ্র। সিংহজানি স্টেশনে ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমা অবস্থিত। ইংরেজ শাসনের প্রথম দিকে জামালপুরে একটি সেনানিবাস ছিল। সেই সেনানিবাসের কৰ্ম্মচারিগণের সমাধিস্থল এখনও জামালপুর শহরের একপ্রান্তে বিদ্যমান আছে। সন্ন্যাসীরা আসাম হইতে আসিয়া ময়মনসিংহ জেলায় ভীষণ উপদ্রব করিত বলিয়া ১৮২৩ খৃষ্টাব্দে সেনানিবাসটি স্থাপিত হয় এবং সিপাহী বিদ্রোহের বৎসরে ইহা উঠিয়া যায়। yনন্দকৃষ্ণ বস্তু যখন জামালপুর মহকুমার হাকিম তখন হইতে (১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে) তাহার চেষ্টায় এখানে একটি মেলা আরম্ভ হইয়াছে । সেই মেলা নিয়মিত ভাবে এখনও প্রতিবৎসর হইয়া থাকে | সিংহজানি বা জামালপুর হইতে ৯ মাইল উত্তরে শেরপুর শহর অবস্থিত। এখানে বৈদ্যবংশীয় কয়েকটি জমিদারের বাস আছে। প্রসিদ্ধ পণ্ডিত মহামহোপাধ্যায় চন্দ্রকান্ত তর্কালঙ্কার মহাশয় এই স্থানের অধিবাসী ছিলেন। শেরপুর হইতে ৮ মাইল উত্তর-পশ্চিমে গড়-জরিপ নামক স্থানে একটি বৃহৎ গড়ের ধূংসাবশেষ বিদ্যমান। ৪৫ ফুট উচচ ও ৭৫ ফুট চওড়া ইহার পর ৭টি প্রাচীর ছিল। ইহা কোচ বংশীয় দলিপ সামন্ত কর্তৃক গারোদের আক্রমণ প্রতিহত করিবার জন্য নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল এবং ১৩৭০ খৃষ্টাব্দে ইহা মুসলমানগণের অধিকারে আসে। সিংহজানি স্টেশন হইতে প্রায় ২২ মাইল দক্ষিণে মধুপুর গ্রামে পুঁটিয়ার রাণী হেমন্তকুমারী দেবী প্রতিষ্ঠিত একটি মদন গোপাল বিগ্রহ আছে। ১৭৮৭ খৃষ্টাব্দ বরাবর সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময়ে এই স্থানে একদল সন্ন্যাসীর কেন্দ্র ছিল। সিংহজানি স্টেশন হইতে প্রায় ৫০ মাইল দক্ষিণে ময়মনসিংহ জেলার টাঙ্গাইল মহকুমা অবস্থিত। আসাম-মুন্দরবন সীমার পথের পোড়াবাড়ী স্টেশন ব্ৰহ্মপুত্র তীরে এখান হইতে ৮ মাইল পশ্চিমে। টাঙ্গাইলের সুন্দর রঙীন শাড়ী বাংলার সবর্বত্র পরিচিত। টাঙ্গাইলের ২ মাইল পশ্চিমে সুপ্রসিদ্ধ কাগমারী জমিদারগণের বাসস্থান সন্তোষ গ্রাম অবস্থিত। টাঙ্গাইলের ৬ মাইল পূবর্বদিকে করটিয়া গ্রামে পানি বংশীয় প্রসিদ্ধ মুসলমান জমিদারগণের বাস। এখানে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ প্রতিষ্ঠিত আছে। টাঙ্গাইল হইতে ৭ মাইল দক্ষিণ-পূবেৰ্ব দিলদুয়ার গ্রামে স্বপ্রসিদ্ধ গজনবীবংশীয় জমিদারগণের বাস। টাঙ্গাইলের ৭ মাইল দক্ষিণে এলাশিন একটি প্রসিদ্ধ পাটের গঞ্জ । ইহার নিকট হইতেই ধলেশ্বরী নদী ব্ৰহ্মপুত্র হইতে নির্গত হইয়াছে। বাহাদুরাবাদ–নারয়ণগঞ্জ হইতে কিঞ্চিদধিক ১৪৪ মাইল দুর। ব্ৰহ্মপুত্র নদের উপর অবস্থিত ইহা এই শাখার শেষ স্টেশন। এই স্থান হইতে পূবর্ব-বঙ্গ রেলপথের নিজ খেয়া জাহাজে