পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sb" বাংলায় ভ্রমণ লইয়া দসু্যদলের সম্মুখীন হন এবং বীর বিক্রমে তাহাদিগকে তাড়াইয়া দেন। এই অদ্ভূত কার্যোর জন্য তিনি জনসমাজে আশানন্দ টেকি নামে পরিচিত হন। র্তাহার বীরত্ব সম্বন্ধে এইরূপ বহু অদ্ভূত কাহিনী প্রচলিত আছে। কয়েক বৎসর হইল বীর আশানন্দের স্মৃতি রক্ষা কল্পে তদীয় বাসভবনে একটি স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। স্বজাতি প্রেমিক বাঙালী মাত্রেরই এই মহাবীরের স্মৃতিস্তম্ভমূলে শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত। বর্তমান যুগের অন্যতম মহাপুরুষ বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী শান্তিপুরের স্থবিখাত অদ্বৈত বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ১২৫১ বঙ্গাব্দে র্তাহার জন্ম হয়। যৌবনে তিনি ব্রাহ্মধৰ্ম্ম অবলম্বন করেন এবং তজ্জন্ত গুহ হইতে বিতাড়িত হইয়া কলিকাতায় আসিয়া মহর্ষি দেবেন্দ্ৰ নাথ ঠাকুরের আশ্রয় গ্রহণ করেন। দেবেন্দ্র নাথ তাহাকে ব্রাহ্ম সমাজের প্রচারকের পদে নিযুক্ত করেন। একবার গয়ায় ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করিতে গিয়া বিজয়কৃষ্ণ একজন সিদ্ধ যোগী পুরুষের সাক্ষাৎ লাভ করেন এবং তাহাকেই গুরুরূপে বরণ করেন। যোগীর নিকট হইতে দীক্ষা গ্রহণ করিয়া বিজয়কৃষ্ণ পুনরায় সনাতন হিন্দুধৰ্ম্মে ফিরিয়া আসেন। ইহার পর তিনি গৈরিক বাস পরিধান করিলেন, জটাজুট রাখিলেন, মালা ধরিলেন এবং হরিপ্রেমে মাতোয়ারা হইয়া উঠিলেন । র্তাহার অলৌকিক যোগপ্রভাব সম্বন্ধে তাহার জীবনী-লেখকগণ বহু কাহিনী লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । র্তাহার বহু শিষ্য প্রশিষ্য এখনও বর্তমান আছেন । শেষ বয়সে বিজয়কৃষ্ণ পুরাধামে বাস করিতেন। সেখানে তিনি “জটিয়া বাব!” নামে পরিচিত হন । পুরীধামের নরেন্দ্র সরোবরের তীরে র্তাহার সমাধি ও মঠ বিরাজিত আছে । শান্তিপুরবাসী হরিমোহন প্রামাণিক মহাশয় সংস্কৃত ভাষায় “কোকিল দূতম ” নামক কাব্য ও “কমলা করুণা বিলাসম” নামক নাটক লিখিয়া যশস্বী হন। পল্লীগ্রাম হইলেও শান্তিপুর একটি শহর বিশেষ। এখানে মিউনিসিপালিটি আছে। এখানকার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রিভার টমসন হল, শান্তিপুর সাহিত্য পরিষং, খোন্দকারদিগের স্থাপিত দাতব্য চিকিৎসালয়, গোস্বামীদের নাটমন্দির, পঞ্চরত্ব মন্দির ও মিউনিসিপ্যাল অফিস প্রভৃতি প্রধান। - শান্তিপুর হইয়া বড়মাপের লাইনের উপর অবস্থিত কৃষ্ণনগর দিয়া একটি লাইট রেলওয়ে ১৮ মাইল দূরবর্তী নবদ্বীপঘাট পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। (কৃষ্ণনগর সিটি দ্রষ্টব্য )। শান্তিপুরের নিকটস্থ অম্বিকা গ্রামে প্রসিদ্ধ পদকৰ্ত্ত গেীরদাস পণ্ডিত জন্মগ্রহণ করেন। ইনি চৈতন্যদেবের বিশেষ অনুরক্ত ভক্ত ছিলেন ; শ্রীচৈতন্তের নিজ হাতে লেখা একখানি গীতা ইহার নিকট রক্ষিত ছিল। অস্বিকাগ্রামে ইনি চৈতন্যদেবের একটি নিম কাঠের বিগ্রহ স্থাপিত করিয়াছিলেন । f শান্তিপুরের নিকটবৰ্ত্ত বাগ অণচড়া গ্রামে বাগদেবীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছে। কথিত আছে, ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে রঘুনন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় নামক জনৈক সাধক এই বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করেন। বাগ আঁচড়ার পাশ্ববর্তী ব্ৰহ্মশাসন গ্রামে প্রায় চারিশত বৎসর পূৰ্ব্বে প্রতিষ্ঠিত একটি ভগ্নপ্রায় শিবমন্দির আছে । চাদ রায় নামক জনৈক ব্যক্তি এই মন্দিরের 7a