পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

অসীম পুলকিত হইতেন। বছর সতের পূর্ব্বে লক্ষ্ণৌ গিয়াছিলাম—সে নবাবরা নাই, সেই ঝরোখায়-উপবিষ্টা বিদ্যুদ্দাম-স্ফুরিত-নয়নাগণও নাই, বুলবুল-কর্ত্তৃক টিকলী হরণের সে প্রথাও নাই।

 বুলবুল ভারতবর্ষের এক সুবৃহৎ পক্ষিসম্প্রদায়। বিভিন্ন প্রকারের বুলবুল হইবে তিপ্পান্ন রকমের। দেশভেদে বর্ণতারতম্য থাকিলেও ইহাদের কয়েকটি কুলগত সাদৃশ্য আছে। এই সাদৃশ্য প্রধানতঃ দুইটি বিষয়ে পরিলক্ষিত হয়। প্রথম, ইহাদের মস্তকের রোমগুলির দৈর্ঘ্য। কোনও কোনও পাখীর মস্তকের এই রোমগুলি দীর্ঘ হইয়া বেশ সু-উচ্চ ঝুঁটির আকার প্রাপ্ত হয়। কতকগুলির মাথার লোমগুলি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ, একটু উঁচু হইয়া থাকে, কিন্তু পাখী উত্তেজিত হইলে ঝুঁটির মত খাড়া হইয়া উঠে। দ্বিতীয় বিশেষত্ব হইতেছে নিম্ন অঙ্গের যে স্থানে উদর শেষ হইয়া পুচ্ছ আরম্ভ হয়, সেই স্থানের বর্ণে। এই স্থানকে বস্তিপ্রদেশ বলিতে পারি। বাংলাদেশে আমরা সচরাচর যে দুই জাতীয় বুলবুল দেখি তাহাদের উভয়েরই বস্তিপ্রদেশ টকটকে লাল। উত্তর বাংলায়, কুচবিহার ও আলীপুর দুয়ার অঞ্চলে যে বুলবুল দেখা যায় সেগুলির বস্তিপ্রদেশ কমলালেবুর মত বর্ণযুক্ত। নূতন সংস্করণ “ফনা অফ ব্রিটিশ ইণ্ডিয়া”তে ইহাদের এই দুইটি কুলগত বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ আছে।

 আমাদের দেশে যত্রতত্র যে দুইটি বুলবুল দেখা যায় তাদের একটি হইতেছে “কালো বুলবুল”। ইহাকেই পোষমানানো হয় এবং দ্বন্দ্ব প্রতিযোগিতায় নিযুক্ত করা হয়। এই বুলবুলটির মাথা, গলা, বক্ষ ও লেজ কালো, পৃষ্ঠ কালচে বাদামী, পেট এবং পৃষ্ঠদেশের শেষাংশ পুচ্ছমূল, শুভ্র। পৃষ্ঠান্তের এই শুভ্র স্থানটি বেশ সুস্পষ্ট দেখা যায়। এই বুলবুলটি চড়াই পাখীর আকার, গোলগাল এবং ধরণ ধারণে বেশ সজীব চঞ্চলতা থাকিলেও চপলতা নাই। অন্য বুলবুলটিকে কানাড়া