পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মাছরাঙা
৬৩

স্থির হইয়া উড্ডীন অবস্থায় থাকিতে পারে না। বোধ হয় কোনও মাছের গতিবিধি লক্ষ্য করে। হঠাৎ পক্ষবিধুনন বন্ধ করিয়া জলের দিকে তীব্র বেগে নামিয়া আসে। মাঝে মাঝে মাছটী অপসৃত হওয়ায় আবার ডান মেলিয়া উড়িয়া চলে। এইভাবে উড়িতে উড়িতে এক এক সময়ে সবেগে নিক্ষিপ্ত লোষ্ট্রখণ্ডের মত জলের মধ্যে ঝুপ্‌ করিয়া গিয়া পড়ে। মাঝে মাঝে জলমধ্যে একেবারে তলাইয়া যায়। বোধ হয় মাছের পিছনে খানিকটা ধাওয়া করিতে হয়। ক্ষুদে মাছরাঙা কিন্তু জলে পড়িয়াই উঠিয়া পড়ে, এক লহমাও জলমধ্যে থাকে না। ডোরাদার মাছরাঙা সারাদিন খুব ডাকে, ইহাদের স্বর খুব তীব্র ও ধ্বনি গিটকিরীর মত কাঁপিয়া কাঁপিয়া যায়। কিন্তু ক্ষুদে মাছরাঙার মত অতটা কর্কশ গলা ইহাদের নহে।

 আর এক জাতীয় মাছরাঙা আমাদের দেশে যথেষ্ট সংখ্যায় দেখা যায়। ইহার কণ্ঠ ও বুকের সম্মুখ ভাগ সাদা। মাথা, ঘাড় ও নিম্ন অঙ্গের বক্ষ ব্যতীত, অন্য অংশ লালচে বাদামী। দেহের ঊর্দ্ধভাগ নীল— ডানাতে কিছু সাদা, লাল ও কালো রং আছে, চঞ্চুটি গাঢ় লাল ও পদদ্বয় টক্‌টকে লাল। সুতরাং ইহার দেহে বহুবর্ণের সমাবেশ রছিয়াছে। ইহার ইংরাজী নাম “দি হোয়াইট-ব্রেষ্টেড কিং-ফিসার”; ইহার ডানার নীচে মধ্যভাগের পতত্রগুলি সাদা হওয়ায় উড়িবার সময় ডানায় একটা স্পষ্ট শুভ্র দাগ লক্ষিত হয়। শালিকের ডানাতেও উড়িবার সময় এইরূপ শ্বেত রেখা চোখে পড়ে। পণ্ডিতরা বলেন যে অনেকগুলি শালিক একত্র যখন মাঠের এদিকে ওদিকে আহার অন্বেষণে রত থাকে, তখন যে কোনও একটী পাখী যদি বিপদের আভাষ পায় সে তখন একরূপ শব্দ করিয়া উড্ডীয়মান হয়। যেই সে পাখা মেলিয়া শূন্যে উত্থিত হয় অমনি এই সুস্পষ্ট সাদা রেখাটা সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। সব পাখীগুলিই এই সাদা রেখার ইঙ্গিতে বুঝিতে