পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ।
১৭১

উক্তিগুলি প্রকৃত ইতিহাসরূপে পরিগণিত হইবার যোগ্য নহে। তিনি পালবংশীয় দশজন রাজার নাম করিয়াছেন, কিন্তু তন্মধ্যে দেবপাল ও রাজ্যপাল ব্যতীত অপর কাহারও নাম পালরাজগণের খোদিতলিপিমালায় দেখিতে পাওয়া যায় না[১]

 দয়িতবিষ্ণুর পৌত্র, রণনীতিকুশল বপ্যটের পুত্র গোপাল, প্রজাবৃন্দ-কর্ত্তৃক নির্ব্বাচিত হইয়া গৌড়-মগধের সিংহাসন লাভ করিয়াছিলেন। ইনি ইতিহাসে প্রথম গোপালদেব নামে বিখ্যাত। গোপালদেবের পুত্র ধর্ম্মপালদেবের খালিমপুরে আবিষ্কৃত তাম্রশাসনে দেখিতে পাওয়া যায় যে, “মাৎস্যন্যায় দূর করিবার অভিপ্রায়ে, প্রকৃতিপুঞ্জ যাঁহাকে রাজলক্ষ্মীর করগ্রহণ করাইয়াছিল, পূর্ণিমা রজনীর জ্যোৎস্নারাশির অতিমাত্র ধবলতাই যাঁহার স্থায়ী যশোরাশির অনুকরণ করিতে পারিত, নরপাল-কুলচূড়ামণি গোপাল নামক সেই প্রসিদ্ধ রাজা বপ্যট হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন[২]।” ‘মাৎস্যন্যায়’ বলিতে অরাজকতা বুঝায়। মৌর্য্যবংশীয় প্রথম সম্রাট্ চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রী কৌটিল্য বা চাণক্য তাঁহার “অর্থশাস্ত্র” নামক প্রসিদ্ধ গ্রন্থে মাৎস্যন্যায়ের নিম্নলিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করিয়াছেন:—

  1. Col. H. S. Jarrett’s Translation of the Ain-i-Akbari, (Bibliotheca Indica), Vol. II, p. 145.
  2. মাৎস্যন্যায়মপোহিতুং প্রকৃতিভির্লক্ষ্ম্যাঃ করং গ্রাহিতঃ
     শ্রীগোপাল ইতি ক্ষিতীশ-শিরসাং চূড়ামণিস্তৎসুতঃ।
    যস্যানুক্রিয়তে সনাতন-যশোরাশির্দিশামাশয়ে
     শ্বেতিম্না যদি পৌর্ণমাস-রজনী জ্যোৎস্নাতিভারশ্রিয়া॥৪॥
     —ধর্ম্মপালের খালিমপুরের তাম্রশাসন,—গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১২।