বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলৈারাডো S&S এই সহরের হোটেল, দোকান, রেল, ট্রাম ও মোটরওয়ালাদের যথেষ্ট আয় হয়। এতে ষ্ট্রে গবর্ণমেণ্টের অংশ আছে, তা’ ছাড়া ইনকাম ট্যাক্স প্রভৃতি আরও নানাপ্রকার আয়ের উপায় আছে। যাত্রীদের যাতায়াত সুগম করবার জন্য ষ্ট্রে গভৰ্ণমেণ্টের ক্ৰটী নেই। কারণ তাদের আকৃষ্ট করে এখানে আনার উপরে ষ্টেটের সাফল্য অনেক পরিমাণে নির্ভর করছে। এ জন্য ডেনভার সহরে মোটরের ভাড়াও খুব সস্তা করে দেওয়া হয়েছে। ইলেকট্রিক টেনেও খুব সস্তা ভাড়ায় পৰ্ব্বতের পাদমূল পৰ্য্যন্ত যাওয়া যায়। ডেনভার সহরে ৪২টি পার্ক আছে। এদের মধ্যে সিটি পার্ক সকলের চেয়ে বড়, এই পার্কের মধ্যে একটি পশুশালা ও একটি ইলেক্‌টুক্‌ ফোয়ারা আছে। পরিষ্কার দিনে সিটিপার্ক থেকে রকি পৰ্বতমালার সম্মুখভাগের সমস্ত অংশটা এক নজরে দেখা যায় { ডেনভারে প্রায় ১৫০টি হোটেল ও সস্তাদরের ১০০০ বোডিং আছে। গভর্ণমেণ্ট থেকে এদের রেটুি বেঁধে দেওয়া আছে, যার যা ইচ্ছা আদায় করবার যে নেই। সহরের একটা বড় রেলষ্টেশনে ( এখানে ৩৪টা রেলষ্টেশন ) গভর্ণমেণ্টের খরচে একটা Bureau of information রেখেছেন, ভ্রমণ-সংক্রান্ত সমস্ত সংবাদ এখানে বিনামূল্যে যাত্রীদের সরবরাহ করা হয় । ডেনভার সহরের ৭৫ মাইল দূরে বিখ্যাত পাইক্স পিক্‌। এই পৰ্ব্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ১৪১০৯ ফুট-রেলে ও মোটরে এর উপরে উঠা যায়। পাইকস পিকের উপরে ষ্ট্রে গভর্ণমেণ্টের তৈরী একটা বিশ্রামাগার আছে। কলোরাডো অঞ্চলে রকি পৰ্ব্বতের যতগুলি ছোট বড় শৃঙ্গ আছে, পাইকস পিকের উপর উঠলে তার সবগুলি দেখতে পাওয়া যায় । যেখান থেকে পাইক্স পিকে উঠা আরম্ভ হয়, সেটা একটা ছোট সহর। এর কাছেই একটা পাৰ্বত্য ঝরণা আছে, যার জল বাতিরোগের পক্ষে মহোপকারী। জলে সোডা, ম্যাগনেসিয়া, গন্ধক, পটাস ও লিথিয়া মিশ্ৰিত আছে। টাউনটা এক রকম গড়ে উঠেছে বাতিরোগীদের ভিড়ে । ইউরোপীয়দের আগমনের অনেক পূর্বে ইণ্ডিয়ান অধিবাসীরা এই ঝরণার জলের গুণ অবগত ছিল। ঝরণার নিকটেই উত্তর-পশ্চিম দিকে একটা সুন্দর স্থান আছে, সেটা বৰ্ত্তমানে একটা ন্যাশন্যাল পার্ক । ইণ্ডিয়ানরা তার নাম দিয়াছিল ‘ভগবানের বাগান’-এখনও এই নামই প্রচলিত। অনেকটা জায়গা জুড়ে লাল বেলে পাথরের নানা রকম শৃঙ্গ, স্তুপ ইত্যাদি এখানে দেখা যায়। কোথাও যেন অবিকল একটা পাথরের ধাড় কি কৃষ্ণসার হরিণ, কোথাও একটা গির্জার চুড়া। ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত ও রৌদ্রের প্রভাবে নরম বেলেপাথর বহুকাল ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ঐ রকম হয়ে দাড়িয়েছে। প্রাচীনকালে মানুষ এখানে পাহাড়ের গায়ে গৰ্ত্ত খুড়ে বাস করত। এখনও একদল পুয়েরো ইণ্ডিয়ান সেই সব গৰ্ত্তে বাস করে। কিন্তু এরা সত্যিকার গুহাবাসী মানুষ নয়। ভ্ৰমণকারীদের নয়নের তৃপ্তিদান করবার উদ্দেশ্যেই ষ্টেটু থেকে এদের এই গৰ্ত্তে থাকবার ব্যবস্থা করা হয় । কিন্তু কলোরাডো ষ্ট্রেটে সত্যই একটা প্ৰাচীন স্থান আছে, যেখানে গুহাবাসী মানুষদের আবাস ছিল। সেটাও এখন ন্যাশন্যাল পার্ক, পার্কটির নাম ‘মেসা ভার্ড ন্যাশন্যাল পাৰ্ক’ । ‘মেসা ভার্ড ন্যাশন্যাল পাৰ্ক’ প্ৰাগৈতিহাসিক মানবের আকৃত্রিম আবাসভূমি হিসাবে যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটা বিখ্যাত স্থান। অনেক ছাত্র, অধ্যাপক ও ভ্রমণকারীরা প্ৰতি বৎসর পার্কটি দেখতে আসে। প্ৰধান দ্রষ্টব্য জিনিষগুলি সংরক্ষণের জন্যই আইন দ্বারা স্থানটাকে ন্যাশন্তাল পার্ক করা হয়েছে। ‘মেলা” (Mesa ) কথাটার অর্থ পাহাড়ে মাথার উপরের সমতল ভূমি। প্রাচীনকালে মানুষ গৰ্ত্ত কেটে বাসস্থান তৈরী করেছিল এই মালভূমির নীচে পাহাড়ের সানুর গায়ে। এরা অনেক দিন আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু