বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যবদ্বীপের আগ্নেয়গিরি SVS একজন ডাচ রাজকৰ্ম্মচারীকে জিজ্ঞাসা করলাম-এত পার্থী পোষে কারা ? এদেশের গ্রাম কোথায় ? ভদ্রলোক হেসে বললেন- এদেশের গ্রাম ঐ সব বঁাশবন ও সুপারিবনের আড়ালে। বাহির থেকে দেখা যাবে না। গ্রামের লোকেই পাখী পোষে । -অত উচুতে সারাদিন পাখীর খাঁচা ঝুলিয়ে রাখার তাৎপৰ্য্য কি ? -হাওয়া খাওয়াচ্ছে । সন্ধ্যার পরেই সব নামিয়ে নেবে। এই এ দেশের নিয়ম। - এদের বাড়ী তৈরী করতে কোনও হাঙ্গামা নেই। বাঁশের জাফীর বেড়া আর গোলপাতার ছাউনি প্ৰায় সব ঘুরেই। এত অল্পে সন্তুষ্ট জাতি আর দেখেছি কি না সন্দেহ। একখানা কি দুখানা গোলপাতার ঘর, এক জোড়া মহিষ, সামান্য কিছু ধানের জমি, এদের সকল পার্থিব সম্পদ, এতেই এরা মহা খুসি, এর বেশী যদি কিছু চাইবার থাকে, তবে একটী স্বাস্থ্যবতী, গৃহকৰ্ম্ম-নিপুণা স্ত্রী ও দু একটী ছেলেমেয়ে। জাভায় প্রায় সকলেই মুসলমান ধৰ্ম্মাবলম্বী। পূর্ব-জাভায় কিন্তু হিন্দু ধৰ্ম্ম প্রচলিত আছে। জাভার নিকটবৰ্ত্ত বলীদ্বীপে শতকরা আশীজন হিন্দু। একদিন আমরা সুপ্ৰসিদ্ধ বৌদ্ধকীৰ্ত্তি বুরোবন্দর দেখতে গেলাম। মোটরযোগে ছাব্বিশ মাইল রাস্তা। সবুজ আমি ও ধানের ক্ষেতের রাস্তা দিয়ে আমরা তালীবন শ্রেণীর আড়ালে অবস্থিত একটা ছোট পাহাড় দূর থেকে দেখলাম এবং শুনলাম, ওই পাহাড়ে খোদাই করে বুরোবন্দরের মন্দির তৈরী। যত কাছে গেলাম, বুরোবন্দর ততই বিশাল বলে মনে হতে লাগল এবং একেবারে পাহাড়ের নীচে গিয়ে পৌঁছেছি, এই প্রাচীন বৌদ্ধস্তুপের বিশালতা, কারুকাৰ্য্য ও মহিমায় আমরা বিক্ষিত ও অভিভূত হয়ে পড়লাম। কিন্তু বুরোবন্দরের সম্বন্ধে অনেক কথা লেখা হয়েছে, তা ছাড়া আমি বৌদ্ধ স্থাপত্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সমালোচক নাই-সুতরাং এখানেই এ কথা শেষ করি।