বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SAR विष्द्धि-छ१९ ও-পথে । দ্বিতীয় পথেও যাওয়া অসম্ভব-পশ্চিম মঙ্গোলিয়ায় উপজাতিসমূহের মধ্যে আজকাল বলশেভিক রাশিয়ার প্রভাব খুব বেশী, তারা কোন বিদেশীকে তাদের দেশে প্রবেশ করতেই দেবে না। অনেক সন্ধানের পরে অবশেষে আমি মরুভূমির মধ্যে দিয়ে তুর্কিস্থানে যাবার একটি পথের সংবাদ পেলাম। এ পথ ব্যবসায়ীদেরই দ্বারা আবিষ্কৃত, তারা পশ্চিম মঙ্গোলিয়ার উপজাতিদের, চীনা দসু্যদের কবলেও পড়তে চায় ন।-সুতরাং তারা মঙ্গোলিয়ার সর্বাপেক্ষ। উষর ও নির্জন অঞ্চল দিয়ে তুর্কিস্থানে যাবার একটি পথ বার করেছে-এ পথ যেমনি অজ্ঞাত, তেমনি দুৰ্গম, খুব কম লোকেই এ পথের খবর রাখে, যাতায়াত করে আরও অনেক কম লোকে। অবশেষে এই পথেই যাব ঠিক হ’ল । ওই অঞ্চল। কখনও দেখিনি, ওখানকার অধিবাসীদের রীতিনীতি, আচার-ব্যবহার লক্ষ্য করবারও একটা ইচ্ছা ছিল অনেকদিন ধরে। একদিন ওই পথ ধরেই গিয়েছিল যাযাবর হন ও শক জাতি তাদের বিরাট দিগ্বিজয়ের অভিযানে। পথের দুর্গমতা আমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে তুললে। --- . . . . . . . . . . ; অতি কষ্টে ভ্রমণের উপযোগী উট যোগাড় হ’ল। একটি - ব্যবসায়ী দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে রওনা হওয়াই শ্ৰেয়ঃ মনে করে সুইয়ান যাত্রা করলাম। সে রকম একটা দল মিলেও গেল। আমি তাদেরই একজন হয়ে তাদের মধ্যে বাস করেছি, বেশভূষায়, আহার, ব্যবহারে আমি কখনো দেখাই নি যে আমি বিদেশী । রাত্রে আমরা চলতাম। দিনে তঁবু খাটিয়ে নিজের রান্নাবান্নার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, উটের দল ছেড়ে দেওয়া হ’ত ইতস্ততঃ চরে বেড়াবার জন্যে-একজন লোক সব সময় সঙ্গে থাকত-উটেরা পালিয়ে না যায় বা কেউ তাদের চুরি করে, তাই পাহারা দিতে । বেলা পড়লে আমাদের যাত্রা সুরু হ’ত, নিশীথ-রাত্রে আবার তঁাবু ফেলে বিশ্রাম করতাম।--সাত আট ঘণ্টার বেশী উটেরা একাদিক্ৰমে চলতে পারে না-বিশেষ করে আমাদের উটদলের প্ৰত্যেকটার পিঠে পাঁচমণ করে ভারী বোঝা ছিল। । সকালে আমাদের চা হ’ত ‘চায়ের ইট’ থেকে । এই মরুভূমির মধ্যে উটকে খাওয়ানো—২৪ ঘণ্টার পাদ্য এক মুঠা ছোলা কি “চায়ের ইট” একটি অদ্ভুত পদার্থ। এক ধরণের কড়া ও বার্সি! বিস্বাদ চা থেকে এই “চায়ের ইট” তৈরী হয়-চীনের হানুকাউ ও টিয়েন্‌সিনএ চায়ের ইট’এর বড় কারখানা আছে। তিব্বত, মঙ্গোলিয়া, সাইবিরিয়া ও তুর্কীস্থানের অনেক স্থানে “চায়ের ইট” মুদ্রার কাজ করে। বড় বড় ইটের ওজন বাধা আছে- কিন্তু অনেক সময় খুচরো খরিদ-বিক্রয়ের জন্তে বড় ইটের খণ্ড ভেঙে নিয়ে ওজন করে কমদামের জিনিষের পরিবৰ্ত্তে দেওয়া নেওয়া হয়ে থাকে। এই ‘ইট চা’ থেকে, প্ৰস্তুত চায়ের রং ঘোর কালো, চিনি এবং উটের দুধ মিশিয়ে খেতে হয়। যাদের অভ্যোস নেই, তারা এ চা মুখে দিতে পারবে না। মরুভূমিতে জল দুপ্রাপ্য বলে আমরা চা খেতাম খুব বেশী। নদী বা ঝর্ণ মরুভূমিতে একেবারেই নেই, মাঝে মাঝে কুপ আছে, তাও সত্তর আশী মাইল অন্তর অন্তর। অনেক সময়েই এই সব কূপের জল অধিক পরিমাণে নুন ও সোডা মিশ্ৰিত-সুতরাং সুপেয় পানীয় নয়। উটের পিঠে ছ’ সাত পিপে বোঝাই জল আমরা নিয়ে পথে