পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৮৫
থাকে না। তাহারা যে কেবল জ্ঞানার্জনের জন্যই ছেলেদের লেখাপড়া শিখাইবে, এ আশা করিতে পারা যায় না,— বিশেষতঃ উচ্চশ্রেণীর লোকেরাই যখন শিক্ষার সুফলের কথা এখনও প্রকৃতরূপে ধারণা করিতে পারে না। এরূপ অবস্থায় শ্রমিক-শ্রেণীর শিক্ষা-ব্যবস্থার চেষ্টায় কোনো কাজ হইবে না। এ-বিষয়ে পরীক্ষা করা সরকারের উদ্দেশ্য হয়, তাহা হইলে সরকার যেন অবৈতনিকভাবে শিক্ষা দিতে প্রস্তুত থাকেন। এস্থলে উল্লেখ করা যাইতে পারে,এরূপ পরীক্ষা ব্যক্তিগত এবং বে-সরকারীভাবে করা হইয়াছে, কিন্তু সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায় নাই।
“বিলাতে এবং এদেশে এমনি একটা ধারণা জন্মিয়াছে যে উচ্চশ্রেণীর শিক্ষার জন্য যথেষ্ট করা হইয়াছে, এখন জনসাধারণের শিক্ষার দিকে মন ফিরাইতে হইবে। শিক্ষা-সংক্রান্ত রিপোর্ট ও মিনিটগুলি অত্যন্ত অনুকুল ভাবের হওয়ায় বোঝা যাইতেছে এই ধারণার সৃষ্টি হইয়াছে। কিন্তু এ-বিষয়ে অনুসন্ধান করিলে ভিন্ন অবস্থার কথা প্রকাশ পাইবে।
“একমাত্র কার্যকর উপায় না হইলেও বঙ্গে শিক্ষা বিস্তারের শ্রেষ্ঠ উপায়স্বরূপ সরকার, আমার মতে, উচ্চশ্রেণীর মধ্যে ব্যাপকভাবে শিক্ষাবিস্তার-কার্যে নিজেকে বদ্ধ রাখিবেন। একশত বালককে লিখনপঠন এবং কিছু অঙ্ক শেখানো অপেক্ষা একটিমাত্র ছেলেকে উপযুক্ত রূপে শিক্ষিত করিয়া তুলিতে পারিলে প্রজাদের মধ্যে প্রকৃত শিক্ষাপ্রচারে সরকার অধিকতর সহায়তা করিবেন। সমস্ত দেশটাকে শিক্ষিত করিয়া তোলা নিশ্চয় বাঞ্ছনীয়, কিন্তু কোনো রাজসরকার এরূপ কার্যভার গ্রহণ করিতে অথবা সাধন করিতে পারে কিনা সন্দেহ। বলা যাইতে পারে, বিলাতে সভ্যতার অবস্থা অতি উন্নত হইলেও, শিক্ষা-বিষয়ে তথাকার জনসাধারণের অবস্থা তাহাদের