১৮০২ খৃষ্টাব্দে রামরাম বসুর লিখিত “লিপিমালা” প্রকাশিত হয়। পত্রের উত্তর-প্রত্যুত্তরচ্ছলে সকল প্রবন্ধই লিখিত। লিখনপ্রণালী প্রায়ই পূর্ব্বোক্তরূপ। তবে অপেক্ষাকৃত মার্জিত; কিন্তু ভাষা জটিল। নমুনা এই—
“তোমাদিগের মঙ্গলাদি সমাচার অনেক দিবস পাই নাই, তাহাতেই ভাবিত আছি, সমাচার বিশেষরূপ লিখিবা। চিরকাল হইল তোমার খুল্লতাত গঙ্গা পৃথিবীতে আগমন হেতু সমাচার প্রশ্ন করিয়াছিলেন, তখন তাহার বিশেষণ প্রাপ্ত হইতে পারেন নাই।”
১৮০৪ খৃষ্টাব্দে “রাজাবলী” নামে গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। কতকগুলি হিন্দু ও মুসলমান রাজার সংক্ষিপ্ত বিবরণ লইয়া ইহা লিখিত। ইহার ভাষা কতকটা পুষ্টতর বটে; কিন্তু দূরান্বয়তাপ্রযুক্ত শ্রুতিকঠোর। নমুনা,—
‘শকাদি পাহাড়ী রাজার অধর্ম্ম ব্যবহার শুনিয়া, উজ্জয়িনীর রাজা বিক্রজাদিত্য সসৈন্য দিল্লিতে আসিয়া শকাদিত্য রাজার সহিত যুদ্ধ করিয়া তাহাকে যুদ্ধে জয় করিয়া, আপনি দিল্লীতে সম্রাট্ হইলেন। * * এক দিবস ধাররাজ বিক্রমাদিত্যকে ও ভৃত্য হরিকে আপন নিকটে আনাইয়া উপদেশ করিতে লাগিলেন, অরে বাছারা, বিদ্যাহীন যে মনুষ্য সে পশু; অতএব নানা শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদিগকে যত্নেতে প্রসন্ন করিয়া তাঁহাদের প্রমুখাৎ আপনার হিত শুনিয়া ও বেদ ও ব্যাকরণাদি বেদাঙ্গ ও ধর্ম্মশাস্ত্র ও জ্ঞানশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্র ও ধনুর্ব্বেদ ও গন্ধর্ব্ববিদ্যা ও নানাবিধ শিল্পবিদ্যা উত্তমরূপে অধ্যয়ন কর, এই সকল বিদ্যাতে বিলক্ষণ বিচক্ষণ হও; ক্ষণমাত্র বৃথা কালক্ষেপ করিও না ও হস্তি,