অধিবেশনের সময় নানাদেশীয় মহামহোপাধ্যায় আহূত হন। সকলেই বিধবা-বিবাহ অশাস্ত্রীয় ও অকর্ত্তব্য বলিয়া বক্তৃতা করেন। ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পক্ষ সমর্থন করিয়া উপযুক্ত ভাইপো প্রণীত “ব্রজবিলাস” এবং উপযুক্ত ভাইপোসহচরপ্রণীত “রত্নপরীক্ষা” নামক দুই খানি পুস্তক প্রকাশিত হয়। এই দু-খানি পুস্তকের প্রকৃত গ্রন্থকারের নাম নাই। রাষ্ট্র এইরূপ, স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয় ইহার প্রণেতা। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুত্র নারায়ণ বাবু আমাকে বিজ্ঞাসাগর মহাশয়ের রচিত সমুদয় পুস্তক উপহার দিয়াছেন, তাহার মধ্যে রত্নপরীক্ষা প্রাপ্ত হইয়াছি। “ব্রজবিলাস” ও “রত্ন-পরীক্ষা"য় পণ্ডিতগণের প্রতি আক্রমণ হইয়াছে। ইহাদের ভাষা-ভাব বদরসিকতায়, পূর্ণ। যদিও রাষ্ট্র, ইহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রণীত; কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ন্যায় বিজ্ঞ গম্ভীর-চরিত্র লোক এরূপ চপলতা করিবেন, ইহা প্রত্যয় করিতে প্রবৃত্তি হয় না।
যশোহর-ধর্ম্মরক্ষিণী সভায় বিধবা-বিবাহের প্রতিবাদ করিয়া যে বক্তৃতা হইয়াছিল, তাহারই প্রতিবাদ করিয়া বিনয় পত্রিকা প্রকাশিত হয়। গ্রন্থকারের নাম নাই। রাষ্ট্র, ইহাও বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচিত। ইহাতে নবদ্বীপের পণ্ডিত ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন, ভুবনমোহন বিদ্যারত্ন প্রভৃতি পণ্ডিতদিগকে আক্রমণ করা হইয়াছে। ইহার ভাষা ও ভাব আলোচনা করিলে, ইহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচিত বলিয়া বিশ্বাস হয় না। ইহাও চপলতাদোষে সম্পূর্ণ কলঙ্কিত। তবে নারায়ণ বাবুর নিকট হইতে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচিত বলিয়া যে সব পুস্তক উপহার পাইয়াছি, তাহার মধ্যে এ পুস্তকও ছিল।