পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা বিবাহ।
২৯৫

অপ্রবল মতের স্থিতিশূন্যতা দোষ পরিহার করা চিরচলিত শাস্ত্রকারীর ব্যবস্থা। আর সমাজিক নিয়মও দেখ, এক্ষণে ঔরস ও দত্তক ব্যতীত পুত্র নাই। কেহই দাস প্রভৃতির অন্ন ভোজন করে না। অতএব সর্ব্বজনপরিগৃহীত আদিপুরাণাদি বচনের অগ্রাহ্য়তা প্রতিপাদনপ্রয়াস সর্ব্বোতোভাবে অকর্ত্তব্য় ইত্যাদি বিবিধ কারণে বিধবা-বিবাহ যে এখনকার অপ্রচলনীয়, ইহা স্থিরসিদ্ধান্ত।” পরাশরসংহিতার বঙ্গানুবাদ ৭ পৃষ্ঠা।

 বিধবা-বিবাহ সংক্রান্ত দ্বিতীয় পুস্তক প্রকাশিত হইবার পর যে সব প্রতিবাদ প্রকাশিত ইয়াছিল, বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার আর প্রতিবাদ করেন নাই।

 বিধবা-বিবাহ সম্বন্ধে শাস্ত্রের বিচার বহু প্রকার হইয়াছে। সে বিচারবিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। আমি কেবল ইহার কতক ঐতিহাসিক তত্ত্ব প্রকাশ করিলাম। শাস্ত্রীয় বিচার ভিন্ন অন্য প্রকার বিচারও অনেক হইয়া গিয়াছে। এখনও হইতেছে। ১২৮৭ সালের জ্যৈষ্ঠ মাসের বঙ্গদর্শনে বিধবা-বিবাহ প্রচলনের বিপক্ষে যে মত প্রকাশিত হইয়াছে, তা সমাজহিতাকাক্ষীর পাঠ করা উচিত। সে প্রবন্ধের এই কয়টি কথা স্মরণীয়,——

 “অনেকে বলেন, বঙ্গ বিধবাগণ চিরদুঃখিনী, তাহাদের কোন কার্য্য়েই সুখ নাই, কোন প্রকার আমোদে তাহারা মিশিতে পারে না, মনের দুঃখে তারা সর্ব্বদাই দুঃখিত, তাহাদিগকে আজন্ম এইরূপ কষ্টে রাখা অতি নৃশংসের কার্য্য, যাহর দয়া নাই, মায়া নাই, যে স্নেহমমতা কাহাকে বলে জানে না, পরের দুঃখে যাহার, মন গলিয়া না যায়, সেই এইরূপ নিষ্ঠুরতাচরণ করতে সমর্থ। কিন্তু বিধবাদিগের দুঃখ যে অসহ্য়, এমত আমাদের বোধ .