উথাপিত হয় নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মতে কৌলীন্যসম্মত বহুবিবাহ পাপাবহ ও শাস্ত্রবিরুদ্ধ। এতৎ-প্রমাণার্থ তিনি সাধ্যানুসারে চেষ্টা করিয়াছেন।
কোন আত্মীয় কন্যার কষ্টানুভবে তিনি বহু-বিবাহ রহিত করিবার জন্য উদ্যোগী হন। আত্মীয় কুলীনকন্যার পতি বহুবিবাহ করিয়াছিলেন। তাঁহার প্রায়ই পতিসাক্ষাৎ-লাভ ঘটিত না। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশয়কে বলিয়াছিলেন,—“আমাদের অদৃষ্টে যা ছিল, তা হইয়াছে। আমাদের কন্যারা যাহাতে আর কষ্ট না পায়, তাহার একটা উপায় করিতে পারেন?” ইহারই পর হইতে বিদ্যাসাগর মহাশয় বহুবিবাহ রহিতকরণের জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করেন। বাঙ্গালার কোন্ কোন্ কুলীনের একাধিকবিবাহ হয়, তাহারও তিনি তালিকা সংগ্রহ করেন। এই তালিকা “বহু-বিবাহ” বিষয়ক প্রথম পুস্তকে সন্নিবেশিত আছে।
১২৬২ সালের ১৩ই পৌষ বা ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দের ২৭শে ডিসেম্বর বহু-বিবাহ-রদ-করণাভিলাষে বর্দ্ধমানের মহারাজপ্রমুখ অনেক ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একখানি আবেদন পত্র গবর্ণমেণ্টে প্রেরিত হইয়াছিল। এই আবেদনের মর্ম্ম এই,—“কোন কোন বিশেষ কারণে শাস্ত্রে একাধিক বিবাহের ব্যবস্থা আছে বটে; কিন্তু এখন এতৎসম্বন্ধে যথেচ্ছাচার ঘটিয়াছে। কুলীনদের ভিতর এই যথেচ্ছাচার প্রবল। কেবল অর্থ-লালসায় অনেকে বহু-বিবাহ করিয়া থাকে। সমাজে ভ্রুণহত্যা রূপ নানা অনর্থ সংঘটিত হইতেছে। এতন্নিবারণার্থ গবর্ণমেণ্টের কোনরূপ আইন করা উচিত।” এ আবেদনে ফল হয় নাই। তবুও অন্দোলন চলিয়াছিল। ১৮৫৭