পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৩১

একটির সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিয়াছি বটে কিন্তু বোসবাবু বার্লিন বা রোমে যাইতে ইচ্ছুক নহেন।” এই প্রসঙ্গ উঠিলেই সুভাষচন্দ্র বলিতেন—‘আমি মস্কো ছাড়া অন্য কোথাও যাইতে চাহি না।’ উত্তমচাঁদ যখন জিজ্ঞাসা করিলেন—যদি মস্কো যাওয়ার ইচ্ছাই থাকে তবে ইতালীয়ানদের শরণ লইলেন কেন? সুভাষচন্দ্র বলিলেন—‘মস্কো যাওয়ার ইচ্ছা আমি ছাড়ি নাই। বাধ্য হইয়াই ইতালীয়দিগের সহিত সংযোগ স্থাপন করিয়াছি।’ তিনি আরও বলিলেন—‘এখন এখান হইতে ইউরোপ যাইবার একটি মাত্র পথ রহিয়াছে, তাহা হইতেছে মস্কোর পথ। হয় আমি মস্কো নামিব, না হয় বার্লিন বা রোমস্থিত রুশ দূতের সহিত ব্যবস্থা করিয়া মস্কোতে ফিরিয়া আসিব। * * ইতালীয়ানদের সহিত সমস্ত ব্যবস্থা ঠিক হইয়া যাওয়ার পরও যদি রাশিয়ানরা আমাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয় তাহা হইলে আমি আমার ব্যবস্থা বদল করিব।’ এমনকি বুখোর পথে আফগান সীমান্ত অতিক্রম করিয়া থাঙ্গো নদী পার হইয়া সর্বাপেক্ষা বিপদসঙ্কুল ও দুর্গম পথে মস্কো যাইতেও তিনি প্রস্তুত ছিলেন। অবশেষে যখন ইতালীয়ানরা সমস্ত ব্যবস্থা ঠিক করিয়া ফেলিয়াছে তখনও তিনি এই বলিয়া তাহাদের সাহায্য গ্রহণ করিলেন, ‘মস্কোতে যাওয়াই আমি সর্বাগ্রে কামনা করি; তবে এই স্থান অপেক্ষা রোম বা বার্লিন হইতে মস্কো যাওয়াই সহজ হইবে।’

একত্রিশ

 সুভাষচন্দ্রের সাধনা ও রাষ্ট্রনৈতিক চিন্তাধারা—সুভাষচন্দ্রের রাষ্ট্রনৈতিক মতবাদ নির্ণয় করিতে হইলে ভারতের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গান্ধীজি ও সুভাষচন্দ্রকে পাশাপাশি রাখিয়া আলোচনা করা প্রয়োজন। বল্লভভাই প্যাটেল, রাজেন্দ্র প্রসাদ, রাজা গোপাল আচারিয়া, এমনকি, জওহরলাল নেহরু প্রভৃতি সর্বভারতীয় প্রধান প্রধান নেতৃবৃন্দ