পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৩৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ბ8&ტ বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ “বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি” “বেঙ্গল আৰ্ম্মি।” আর এক অর্থে বাঙ্গালা তত দূর বিস্তৃত না হউক, মগধ, মিথিলা, উড়িষ্যা, পালামৌ উহার অন্তর্গত—এই সকল প্রদেশ বাঙ্গালার লেফটেনেন্ট গবর্ণরের অধীন। এই দুই অর্থের কোন অর্থেই “বাঙ্গাল” শব্দ এ প্রবন্ধে ব্যবহার করিতেছি না। যে দেশের লোকের মাতৃভাষা বাঙ্গালা, সেই বাঙ্গালী ; আমরা সেই বাঙ্গালীর উৎপত্তির অনুসন্ধানে প্ৰবৃত্ত। তাহার বাহিরে যাহারা আছে, তাহাদের ইতিহাস লিখিব না—সঁওতাল বা নাগা এ প্রবন্ধের কেহ নহে। তবে এখানে বাঙ্গালার বাহিরে দৃষ্টিপাত না করিলে, আমরা কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিব না। যে সকল অনাৰ্য্যজাতি বাঙ্গালার আৰ্য্য কর্তৃক দূরীভূত হইয়াছে, তাহারা অবশ্য বাঙ্গালার বাহিরে আছে। বাঙ্গালার ভিতরে ও বাঙ্গালার পার্শ্বে কোন কোন অনাৰ্য্যজাতি বাস করিতেছে—দুইই দেখিতে হইবে। উত্তরসীমায় ব্ৰহ্মদেশের সম্মুখে দেখিতে পাই, খামটি, সিংফৌ, মিশমি, চুলকাটা মিশমি। তার পর অপর জাতি, তাহাও অনেক প্রকার। যথা—পাদম মিরী দফলা ইত্যাদি। তার পর আসামপ্রদেশের নাগা, কুকি, মণিপুরী ; কৌপায়ী, তাহার বাহিরে মিকির, জয়ন্তীয়া, খাসিয়া ও গারো জাতি। আসামের মধ্যে ব্ৰহ্মপুত্রতীরে দেখিতে পাই, কাছাড়ি বা বোড়ো, মেচ ও ধিমালজাতি এবং বাঙ্গালার মধ্যে তাহাদিগের নিকটকুটুম্ব কোচজাতি। তৎপরে উত্তরে, হিমালয়পৰ্ব্বতের ভিতরে বাস করে, ভোট, লেপছা, লিম্ব, কিরান্তী বা কিরাতী ( প্ৰাচীন কিরাত)। তার পর বাঙ্গালার পূর্বদক্ষিণ সীমায় মগ, লুসাই, কুকি, কারেন, তালাইন প্রভৃতি জাতি। ত্রিপুরার ভিতরেই রাজবংশী নওয়াতিয়া প্ৰভৃতি জাতি আছে ; বাঙ্গালার পশ্চিম দিকে কোল, সাওতাল, খাড়িয়া, মুণ্ড, কেঁড়োয় ওঁরাও বা ধাঙ্গড় প্রভৃতি অনাৰ্য্যজাতি বাস করে। এই শেষোক্ত কয়েকটি জাতির সম্বন্ধেই আমাদের অনেকগুলি কথা বলিতে হইবে। উত্তর ও পূর্বের অনাৰ্য্যদিগের সঙ্গে আমাদিগের ততটা সম্বন্ধ নাই, তাহারা অনেকেই হালের আমদানী । আমরা কেবল কয়েকটি প্ৰধান জাতির নাম করিলাম-জাতির ভিতর উপজাতি আছে এবং অন্যান্য জাতি আছে। প্ৰসঙ্গক্রমে তাহাদের কথাও বলিতে হইবে। এখন প্রথম জিজ্ঞাস্য এই যে, ইহারা সকলে কি একবংশসস্তৃত ? আৰ্য্যেরা সকলেই একবিংশসস্তৃত—আৰ্য শব্দের অর্থই ক্লাই। কিন্তু “অনাৰ্য্য” বলিলে কেবল ইহাই বুঝায় যে, ইহারা আৰ্য নহে। যাহারা আৰ্য্য নহে, তাহারা সকলেই যে একজাতীয়, এমত ' বুঝায় না। যদি এমত প্ৰমাণ থাকে যে, ইহার একবংশোদ্ভুত, তবে সহজে অনুমান