বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৪
বিবিধ কথা

অনুকূল কোনও রঙিন মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিতে আর প্রবৃত্তি হয় না। জীবনের নিশীথ-প্রহরের যে লগ্নে সকলে ঘুমাইয়া থাকে, সে তখন সহসা জাগরিত হইয়া প্রকৃতির নেপথ্যগৃহে দৃষ্টিপাত করিয়াছে; সেখানে যে দৃশ্য তাহার সম্মুখে উদ্ঘাটিত হইয়াছে তাহাতে দুই চক্ষের মায়া-অঞ্জন মুছিয়া গিয়া সর্ব্বমোহের অবসান হইয়াছে—সে চরম সত্যের দীক্ষালাভ করিয়াছে।

 মানুষ মৃত্যুকে ভয় করে—পশুও করে; পশুর জীব-সংস্কার অস্পষ্ট, তাই তাহার ভয়ও অস্পষ্ট। এই অস্পষ্ট সহজাত মৃত্যু-ভয়ের উপরে মানুষ খুব বড় একটা কাল্পনিক ভয়কে খাড়া করিয়াছে—‘the dread of something after death’। মানুষ বাঁচিতে চায়—কারণ, বাঁচিয়া-থাকার একটা জ্ঞান তাহার আছে—দেহগত জীব-সংস্কার ছাড়া একটা মানস-সংস্কার গড়িয়া উঠিয়াছে; এই সংস্কার বশে সে ইহজীবনকে পরজীবনে প্রসারিত না করিয়া পারে না। এই অন্ধ প্রাণগত বিশ্বাসের বশে সে মৃত্যুকে একটা জীবনান্তর সেতু বলিয়া মনে করে—এই সেতুই বৈতরণী, এক পার হইতে আর এক পারে পঁহুছিবার অগ্নিময় খেয়া-পার। পার হওয়ার পর সে থাকিবে; কিন্তু কি অবস্থায় থাকিবে তাহা জানে না। মৃত্যুর সঙ্গেই যদি জীবন-শেষ না হয়, তবে জীবনের শেষ কোথায়? সেই অনন্ত জীবন এক দিকে যেমন তাহাকে আশ্বস্ত করে, অপর দিকে অবস্থান্তরের অনিশ্চয়তা তাহাকে অধিকতর শঙ্কাকুল করিয়া তোলে। মনুষ্য-সভ্যতার দীর্ঘ ইতিহাস অতীত কালে যতদূর আমাদের দৃষ্টিরোধ না করে, তাহাতে—খুব আধুনিক যুগ ছাড়া আর আর সকল যুগে—মানুষের মৃত্যু সম্বন্ধীয় এই ধারণাই তাহার জীবনকে সমধিক নিয়ন্ত্রিত করিয়াছে বলিয়া মনে হয়। মানুষ তাহার জীবনের