বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ツ >8 বিবিধ প্রবন্ধ । ক্রমশঃ সামাজিক বিধির অন্তর্ভূত করিতে পারি তাহা হইলে উৎকৃষ্ট স্বাধীন চিন্তারই ফল পাওয়া যায়। বড় ঘরে ছোট ব্যবহার অর্থাৎ স্লেচ্ছাচার, বিধবা বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ প্রভৃতি—চুকাইবার চেষ্টা “পরাধীন চিন্তারই” লক্ষণ । লক্ষীছাড়া দশা । ইংরাজদিগের চাল চলন ওঁদের নিজের দেশে কি রকম, তাহা ত কিছুই দেখিতে পাই না। এখানেও উহঁাদিগের চাল চলনের সমুদয়টা আমাদের প্রত্যক্ষ হয় না। আমরা দেখিতে পাই, উহারা খুব জোরে পা ফেলিয়া চলেন, কাহারও প্রতি দৃকপাত করেন না, কেহ কিছু বলিতে গেলে একেবারে অগ্নিশৰ্ম্মার আকার ধারণ করেন, অনেকে চাকর বাকরকে পশুবৎ জ্ঞান করিয়া তাহাদিগকে যথেষ্ট পীড়ন করেন, এবং সময়ে সময়ে এক পয়সার জায়গায় এক সিকি, এক মুঠার জায়গায় এক সের, এক হাতের জায়গায় পাচ হাত খরচ করিয়া ফেলেন। আমাদের দেশে ইংরেজের মেজাজ যেমন গরম, তেমনই আলী । ইংরেজ এ দেশে সৰ্ব্বাপেক্ষীয় বড় হইয়াছেন। যে বড়, তাহারই রীতি নীতি অনুকরণীয় হইয়া থাকে। অতএব দেশীয়েরাও ইংরেজের অনুকরণ করেন । বিশেষতঃ বাঙ্গালীরা এবং তাঙ্কাদিগের মধ্যে বিশেষ করিয়া ইংরেজী মন্ত্রে দীক্ষিত ইংরেজীনবিস “রুতবিদ্যেরা”। “কৃতবিদ্য” বাঙ্গালীদিগের চলন, বলন, হাস্ত পরিহাস, শব্দোচ্চারণ, মুদ্র, ব্যবহার সকলেই একটু একটু ইংরেজী গন্ধ পাওয়া যায় । একজন সেকেলে হিন্দু বা মুসলমান তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিলে তুমি দেখিবে তিনি যত বড় লোকই হউন না কেন, ধীরে ধীরে চলিয়া আসিবেন, মুখে হাস্তের একটু মৃদুপ্রভা মাত্র দেখা দিবে, এবং আসন পরিগ্রহ করিয়া তিনি অল্পে অল্পে কোমল স্বরে তোমার সহিত বাক্যালাপ করিবেন । কিন্তু যখন ইংরাজীওয়াল আসিতেছেন, তখন সিঁড়িতে উঠিবার সময় দমদম্ করিয়া শব্দ হইবে, জুতা মসূ মসূ করিয়া ডাকিবে, ঝনাৎ করিয়া কবাটের শব্দ হইবে, দর্শনমাত্রে অট্টহাস্তের হো হে রব উঠিবে, ঘড়ঘড় শব্দে চেয়ার সরিৰে, অন্তঃপুরবাসিনীরা পৰ্য্যন্ত জানিতে পারিবেন, বাটতে একজন মানুষ আসিয়াছেন বটে ! ইংরাজের অমুকরণে আমাদিগের বাহ ব্যবহারে এইরূপ হঠকারিত দোষ