পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবিধ সমালোচন।
৩৯

 রাম চলিলেন। দেখিয়া সীতা করযোড়ে, “ণমো ণমো অপূর্ব্বপুণ্ণজণিদদংসণাণং অজ্জউত্তচরণকমলাণং” এই বলিয়া প্রণাম করিতে মুর্চ্ছিতা হইয়া পড়িলেন। তমসা তাঁহাকে আশ্বস্ত করিলেন। সীতা বলিলেন, “আমার এ মেঘান্তরে ক্ষণকালজন্য পুর্ণিমাচন্দ্র দেখা মাত্র!”

 তৃতীয়াঙ্কের সার মর্ম্ম এই। এই অঙ্কের অনেক দোষ আছে। ইহা নাটকের পক্ষে নিতান্ত অনাবশ্যক। নাটকের যাহা কার্য্য, বিসর্জ্জনান্তে রাম সীতার পুনর্ম্মিলন, তাহার সঙ্গে ইহার কোন সংশ্রব নাই। এই অঙ্ক পরিত্যক্ত হইলে নাটকের কার্য্যের কোন হানি হয় না। সচরাচর এরূপ একটি সুদীর্ঘ নাটকাঙ্ক নাটক মধ্যে সন্নিবেশিত হওয়া, বিশেষ রসভঙ্গের কারণ হয়। যাহা কিছু নাটকে প্রতিকৃত হইবে, তাহা উপসংহতির উদ্যোজক হওয়া উচিত। এই অঙ্ক কোন অংশে তদ্রূপ নহে। বিশেষ, ইহাতে রামবিলাপের দৈর্ঘ্য এবং পৌনঃপুন্য অসহ্য। তাহাতে রচনাকৌশলের বিপর্য্যয় হইয়াছে। কিন্তু অনেকেই মুক্তকণ্ঠে বলিবেন, যে অন্য অনেক নাটক একবারে বিলুপ্ত হয়, বরং তাহাও স্বীকর্ত্তব্য, তথাপি উত্তরচরিতের এই তৃতীয়াঙ্ক ত্যাগ করা যাইতে পারে না। নাটকাংশে ইহা যতই দুষ্য হউক না কেন, কাব্যাংশে ইহার তুল্য রচনা অতি দুর্ল্লভ

 উত্তরচরিত সমালোচন ক্রমে এত দীর্ঘায়ত হইয়া উঠিয়াছে, যে আর ইহাতে অধিক স্থান নিয়োগ করা কর্ত্তব্য নহে। অতএর অবশিষ্ট কয় অঙ্কের সমালোচনা অতি সংক্ষেপে করিব।

 এদিকে বাল্মীকি প্রচার করিলেন যে তিনি এক অভিনব নাটক রচনা করিয়াছেন। তদভিনয় দর্শন জন্য সকল লোককে