বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবিধ সমালোচন
৪৩

 পুনশ্চ, বারুণাস্ত্র সৃষ্ট মেঘ;—

 “অবিরলবিলোলধুম্মন্তবিজ্জুল্লদাবিলাসমণ্ডিদেহিং মত্তমোরকণ্ঠসামলেহিং জলহরেহিং।”

 এবং তৎকালে সৃষ্টির অবস্থা;—

 “প্রবলবাতাবলিক্ষোভগম্ভীরগুণগুণায়মানমেঘমেদুরান্ধকারনীরন্ধ্রনিবদ্ধম্ একবারবিশ্বগ্রসনবিকচবিকরালকালকণ্ঠকণ্ঠকন্দরবিবর্ত্তমানমিব যুগান্তযোগনিদ্রানিরুদ্ধসর্ব্বদ্বারনারায়ণোদরনিবিষ্টমিব ভূতজাতং প্রবেপতে।”

 ঈদৃশ দীর্ঘ সমাস যে রচনা দোষমধ্যে গণ্য, তাহা আমরা স্বীকার করি। যাহা কিছুতে অর্থ বোধের বিঘ্ন হয়, তাহাই দোষ। ঈদৃশ সমাসে অর্থবোধের হানি, সুতরাং ইহা দোষ। নাটকে ইহা যে বিশেষ দোষ, তাহাও স্বীকার করি; কেন না ইহাতে নাটকের অভিনয়োপযোগিতার হানি হয়। তথাপি ভবভূতির এই কয় সমাসের মধ্যে যে কবিত্ব শক্তি আছে, রত্নাওলী নাটকের একটি সমগ্র অঙ্কমধ্যে তাহা আছে কি না, সন্দেহ।

 লব ও চন্দ্রকেতু যুদ্ধ করিতেছিলেন, এমন সময়ে রাম সেই স্থানে উপনীত হইলেন। তিনি উভয়কে যুদ্ধ করিতে নিরস্ত করিলেন। লব তাঁহাকে রাজা রামচন্দ্র বলিয়া জানিতে পারিয়া, ভক্তিভাবে প্রণাম ও নম্রভাবে তাঁহার সহিত আলাপ করিলেন। কুশও যুদ্ধসম্বাদ শুনিয়া সে স্থানে উপস্থিত হইলেন, এবং লব কর্ত্তৃক উপদিষ্ট হইয়া রামের সহিত সেইরূপ ব্যবহার করিলেন। রাম উভয়কে সস্নেহে আলিঙ্গন এবং পিতৃযোগ্য প্রণয়সম্ভাষণ করিতে লাগিলেন। পরে সকলে, বাল্মীকির আশ্রমে, তৎপ্রণীত নাটকাভিনয় দেখিতে গেলেন।

 তথায় রামানুজ্ঞাক্রমে লক্ষ্মণ দ্রষ্টৃবর্গকে যথাস্থানে সন্নিবেশিত করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, পৌরগণ, জন-