পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লবঙ্গ [ ১৭১ ] লবঙ্গাদিচুর্ণ (perfumery ) এবং বসা, সাবান ও মঞ্চের গন্ধবৃদ্ধি করিতে উহ! সাধারণতঃ ব্যবহৃত হয় । জ ৰ্বণরাজ্যে কাৰ্ব্বলিক এসিডের সহিত উহা মিশান হইয়া থাকে । ৪ ঔন্স লবঙ্গ তৈল এক গালন স্পিারটে মিশাইরা লইলে লবঙ্গসার ( essence of cloves) প্রস্তত হয় । বেনকুলেন, পিনাং, আম্বয়ন ও জাবির জাত লবঙ্গই | সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট । ঔষধাৰ্থ যে সকল লবঙ্গ ব্যবহৃত হয়, তাহ উগ্রগন্ধবিশিষ্ট ও তীব্র কটু এবং নখাগ্র দ্বারা পেষণ করিলে তৈল বাহির হইয়া থাকে । ভারতবর্ষের বাজারে যে সকল লবঙ্গ পাওয়া যায়,উহা পুরাতন বৃক্ষজাত, উহা বিশেষ কোন কার্য্যে লাগে না । আকৃতি, বর্ণ ও আভ্যন্তরিক তৈল পরীক্ষা করিলেই লবঙ্গের প্রভেদ সহজে নিণীত হইতে পারে। লবঙ্গ উত্তেজক, বায়ুনাশক ও উৎকৃষ্ট গন্ধযুক্ত। দীর্ঘকালস্থায়ী উদরাময়ে, পাকস্থালীর বেদনায় ও গর্ভাবস্থায় নিরতিশয় বমন হইতে থাকিলে ইহা বিশেষ উপকারক। ডাঃ ঐন্সলি, শারীরিক অবসন্নতা ও অজীর্ণ রোগে দিবসে দুই বা তিনবার লবঙ্গের কাথ সেবনের ব্যবস্থা দিয়াছেন। র্তাহার মতে অৰ্দ্ধ পাইণ্ট উত্তপ্তজলে ১ ড্রাম লবঙ্গচূর্ণ সিদ্ধ করিয়া তাহার ১ বা ২ ঔন্স প্রতিবার সেবনীয়। স্নায়বিক দৌৰ্ব্বল্যে ও অগ্নিমান্দ্যে চিরতা ও লবঙ্গের কাথ বিশেষ উপকার প্রদ । ইহাতে পিপাসা, বমন, উদরাধান ও পেটের বেদন উপশম হয়। গেটেবাত, শিরঃপীড়া ও দন্তশূলে লবঙ্গতৈল লাগাইলে উপকার দর্শে। হেকিমী মতে ইহার গুণ—উত্তেজক ও শ্লেষ্মনাশক, বিষনাশক ও মস্তিষ্ক স্নিগ্ধকারক। ইহা চক্ষুরোগে হিতকর, হৃদয়ের যাতনা-নিবারক, বলকর ও পুষ্টিবদ্ধক । তাম্রপাত্রে অথবা পাথরে পদ্মমধু লইয়া লবঙ্গ ঘসিয়া চক্ষের পাতায় পালকে করিয়া প্রলেপ দিলে চক্ষের জলপড়া ও যোজকত্বগোষ ( Conjunctivitis ) নিবারিত হয়। লবঙ্গ প্রদীপের শিখায় পুড়াইয়া ভক্ষণ করিলে খুল্লখুসে কাসি বিদূরিত হইয়া থাকে। ব্যঞ্জনাদিতে গরম মপালার সঙ্গে ও পাণে লবঙ্গ সিদ্ধ করিয়া খাইবার ব্যবস্থা বাঙ্গালায় অধিক প্রচলিত। ইংরাজী ভৈষজ্যতত্বে লবঙ্গ-তৈল-বিশেষ Oleum Cary৪phylli নামে পরিচিত। রাসায়নিক প্রক্রিয়ার বিশেষ পরীক্ষা দ্বারা ইহাতে Engenol of Engenic acid, Salicylic acid, Caryophyllic acid, Carmufellic acid s twig with tannic acid ottsol stato প্রতিবৎসর ১১০৯৮৪১ টাকার লবঙ্গ জাঞ্জিবর, আদেন | • ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ হইতে বাঙ্গাল, বোম্বাই, ও মাস্ত্রাজে সামানী হয় এবং প্রতিবৎসর এখান হইতে প্রায় ৩৬৭২৪৯ | টাকা মূল্যের লবঙ্গ ইংলও ও স্কটলও, হংকং ষ্ট্রেটসেটলমেণ্ট, এসিয়াস্থ তুরুষ্ক, আদেন, ফ্রান্স ও অন্তান্ত দেশে রপ্তানী হইয়া থাকে। - বৈঠকমতে ইহার গুণ—শীতল, তিক্ত, কটু, নেত্রহিতকর, দীপন, পাচন, রুচিকর, কফ, পিত্ত ও অক্সপোধনাশক,"তৃষ্ণ, ছর্দি, আশ্বান, শূল, আগুবিনাশক, কাশ, শ্বাস, হিকা ও ক্ষয়নাশক । ( ভাবপ্র রাজনি• ) “বিরহানলসন্তপ্ত তাপিনী কাপি কামিনী । লবঙ্গানি সমুৎস্বজ্য গ্রহণে রাইবে দে।" (উদ্ভট ) লবঙ্গক (রা) লবঙ্গ স্বার্থে কন্‌। লবঙ্গ। (পৰৱয় ) লবঙ্গ কমপত্রী (স্ত্রী) লঘু তালীশপত্র। (বৈমুকনি” ) লবঙ্গ কলিকা ( স্ত্রী) লবঙ্গ । ( রাজনি” ) ... " লবঙ্গলতা (স্ত্রী) পুপলতাবিশিষ্ট। “ললিতলবঙ্গলতাপরিশীলনকোমলমলয়সমীরে। মধুকরনিকরকরম্বিতকোকিল জিতকুঞ্জকুটীরে ॥” ( জয়দেব ) ২ রাধার সখী বিশেষ । লবঙ্গাদি । পুং ) অঞ্জীর্ণাধকারে ঔষধবিশেষ। প্রস্তুতপ্রণালী— লবঙ্গ, শুঠ, মরিচ ও সোহাগা একত্র সমভাগে উত্তমরূপে চূর্ণ করিবে। পরে ইহা অপামার্গ ও চিতার রসে ৭ বার ভাবনা দিবে। অগ্নির বলাবল অনুসারে উপযুক্ত মাত্রায় এই ঔষধ সেবন করিলে অজীর্ণরোগ আশু প্রশমিত হয়। (রসেস্ত্রসারস অঞ্জীর্ণাধি) ভৈষজ্যরত্নাবলীতে ইহার মাত্রা এক রতি নির্দিষ্ট আছে। লবঙ্গাদিচুর্ণ ( ক্লী ) গ্ৰহণীরোগাধিকারোক্ত চুণে)ষধবিশেষ। এই চূর্ণ স্বল্প ও বৃহদ্গভেদে দুই প্রকার। প্রস্তুত প্রণালী— স্বল্পলবঙ্গাদি চূর্ণ-লবঙ্গ, আতাইচ, মুখা, বেলশুঠ, আকনাদি, মোচরস, জীর, ধাইফুল, লোধ, ইন্দ্রযব, বালা, ধনে, শ্বেতপুনা, কঁকড়াশৃঙ্গী, পিপুল, শুঠ, বরাক্রান্তা, যবক্ষার, সৈন্ধবলবণ ও রসায়ন এই সকল দ্রব্য সমভাগে লইয়া উত্তমরূপে চূর্ণ ও মিশ্ৰিত করিবে। এই চুর্ণের মাত্রা ১• রতি হইতে ২০ রতি, অমুপান তগুলোদক, মধু বা ছাগহন্ধ। এই চূর্ণ সেবনে অগ্নিমাদ্য, গ্রহণী ও অতীসার প্রভৃতি উদররোগ আগু প্রশমিত হয় । বৃহন্নবঙ্গাদিচুর্ণ—লবঙ্গ, আতইচ, মৃত, পিপুল, মরিচ, সৈন্ধব, হবুষা, ধনে, কট ফল, কুড়, জয়িত্রী, জায়ফল, কৃষ্ণজীর, সচল লবণ, রসাঞ্জন, ধাইফুল, মোচরস, আকনাদি, তেজপত্র, তালাশপত্র, নাগেশ্বর, চিতামূল, বিট লবণ, তিতলাউ, বেলন্ত, গুড়ত্বক, এলাচ, পিপলমূল, বন্যমানী, যমানী, বরাক্রান্ত, ইন্দ্ৰধৰ, শুঠ, দাড়িম ফলের ছাল, যবক্ষার, নিমছাল, শ্বেতধূনা, সাচিক্ষার, সমুদ্রফেনা, সোহাগার খই, বালা, কুটজ মূলের ছাল, জামছাল, মামছাল, কটকী, অভ্র, লৌহ, গন্ধক ও পারদ প্রত্যেকে