পাতা:বিশ্বকোষ ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিত্রবিদ্যা চিত্ৰবৰ্ম্মন (পুং) স্বতরাষ্ট্রের এক পুত্র। “চিত্রবাহশ্চিত্ৰবৰ্ম্ম।” (ভারত ১১১৭৬)। ২ কুলুতদেশের এক রাজা । “কোঁতশ্চিত্র বৰ্ম্ম মলয়নরপতিঃ সিংহনাদোনুসিংহঃ” । ( মুদ্রারা ১ অঙ্ক । ) চিত্রগর্বিন (ত্রি) চিত্ৰং যথাস্তং তথা বর্ষতি চিত্রবৃষ পিনি। অদ্ভুত বর্ষণকারী । “চিত্রবীচ পর্জন্সে যুগে ক্ষীণে ভবিষ্যতি।” (হরিবংশ ১৯৩ জ: ) চিত্রবল্লিক (পুং) চিত্ৰবল্পিরিব কায়তি চিত্ৰবল্লি-কৈ-ক। চিত্রবদাল, বোয়াল । fচরবী (স্ত্রী ) চিত্রা বল্পী কৰ্ম্মধা। ১ বিচিত্ৰলত । ২ মৃগে বারু, শাদা রাখালশশী । ৩ মহেন্দ্রবারুণী, বড়মাকাল । চিত্রবহ! ( স্ত্রী) চিত্ৰং বহুতি চিত্র-বহ-অচ্‌ টাপ্ত। নদীভেদ। “করীষিণীং চিত্রবহাং চিত্রসেনাং চ নিম্নগাং ” (ভারত ৬৯ অঃ) চিত্রবাঞ্জ (ত্রি) চিত্রোবাজঃ পক্ষোযস্ত বহুত্রী। বিচিত্র পক্ষ যুক্ত। “চিত্ৰবাজৈঃ শরৈরপি” ( ভাগ" ৪/১০/১১। ) চিত্র পাণ (পুং ) > ধৃতরাষ্ট্রের এক পুত্র । ( ভারত ১।১১৭৬) ( বহুত্ৰী ) (ত্রি ) ২ বিচিত্ৰবাণযুক্ত । চিত্রবাহন (পুং) মণিপুরেশ্বর এক নাগ। “মণিপুরেশ্বরং রাজন ধৰ্ম্মজ্ঞং চিত্রবাহনং" । ( ভারত ১২১৫ অঃ ) চিত্রবিদ্যা, কলাবিশেষ। সমতল কোন বস্তুর উপর স্বভাবতঃ বৃক্ষ লতা, মনুষ্য, পশু, পক্ষী, কিম্বা প্রাকৃতিক দৃপ্ত প্রদর্শন করিয়া মানবহৃদয়ে কোন ভাবোৎপন্ন করাই চিত্রবিদ্যার মুখ্য উদেখা । গৃহ প্রাচীর, দেবমন্দির, যানবাহনাদি নানাবর্ণেরঞ্জিত ও দেবদেবী বৃক্ষলতাদির প্রতিমূৰ্ত্তি চিত্রিত করিবার প্রথা বহুকাল হইতেই, এদেশে প্রচলিত ও অমুশীলিত হইয়া আসিতেছে। কোন সময়ে চিত্রতত্ত্ব প্রথম আবিষ্কৃত হয়, তাহ নির্ণয় করা দুষ্কর। বহু শতাব্দী পূৰ্ব্বে যখন সমগ্র যুরোপ অমিমাংসভোজী গুহাবাসী বৰ্ব্বর জাতির বাসস্থান ছিল, তখন ভারতবর্ষে চিত্ররিষ্ঠার পূর্ণ বিকাশ হইয়াছিল। রামাযুণ মহাভারতাদিতে তাহার ভুরি ভূরি প্রমাণ পাওয়া যায়। তৎকালে চিত্রে মনুষ্যাদির অনুরূপ প্রতিকৃতি হাব ভাব চেষ্টা প্রভৃতি অদ্ভুত নৈপুণ্যসহকারে চিত্রিত হইত। এমন কি ভয়বিস্ময়াদিতে স্তম্ভিত হইলে তাহাকে চিত্রাপিত বলা হইত। “অভূমুহূৰ্ত্তং স্তিমিতং সৰ্ব্বং তদ্রাজমণ্ডলম্। তুষ্ণীংস্তুতে ততস্তম্মিন্‌ পটে চিত্রমিবাৰ্পিতম।” ( ভারত, অমু ১৬৬৪ ) রামায়ণের সময়েও রাজগণের চিত্ৰগৃহ ছিল, চিত্রশালায় গিয়া রাজগণ আমোদ প্রমোদ করিতেন। যথা— “আপানশালা বিবিধ ভূয়: পুষ্পগৃহাণি চ। চিত্রশালাশ্চ বিবিধ ভূয়: ক্রীড়াগৃহাণি চ ” (রামা ৫১৫৮) VI Գե ( రి సి চিত্রবিদ্য । পূৰ্ব্বে এই ভারতবর্ষে রাজগণ ও রাজপুত্ৰগণ সকলেই চিত্রবিদ্যা অভ্যাস করিতেন, চিত্রবিদ্যা না শিখিলে তাহাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ হইত না । এমন কি তৎকালে কুটারবাসিনী বনচারিণী কুমারীগণও আলেখ্যরচনায় পটু ছিল, কালিদাসের শকুন্তলা তাহার উজ্জল দৃষ্টান্তস্থল। “অহে রূপমালেখ্যস্ত ।” ( শকুন্তলা । ) শকুন্তলা অপেক্ষী উষার সখী চিত্ৰলেখার নামবিশেষ উল্লেখযোগ্য। পূৰ্ব্বকালে কুলকামিনীগণ কিরূপ চিত্রবিদ্যার সুনিপুণ ছিলেন, তাহা চিত্ৰলেখার বিবরণে অতি সুন্দর বিবৃত হইয়াছে। হরিবংশে ও ভাগবতে লিখিত আছে, বাণদুহিত। উষা অনিরুদ্ধের জন্য অধীর হইলে চিত্ৰলেখা তাহাকে সাম্বন৷ করিয়া বলেন, ‘সখি ! তোমার মনচোরের কুল, শীল, বর্ণ ও নিবাস আমি কিছুই জানিন, তবে আমি বুদ্ধিবলে এই করিতে পারি যে দেব, দানব, গন্ধৰ্ব্ব, যক্ষ, উরগ ও রাক্ষসগণের মধ্যে যাহারা প্রভাবে, কুলে, শীলে, রূপে ও গুণে প্রধান, মনুষ্যলোকেও যাহারা লোকবিখ্যাত, তাহাদের আলেথ্য প্রস্তুত করিয়া সাত দিনের মধ্যে তোমার নিকট উপস্থিত করিব। তুমি সেই আলেখ্যগত মহাত্মাদিগকে দেখিলেই তোমার কান্তকে চিনিতে পরিবে । তখন আর তিনি আমাদের হাত এড়াইতে পরিবেন না । সাত দিন মধ্যেই চিত্ৰলেখা সমস্ত আলেখ্য যথামত প্রস্তুত করিয়া আনিলেন এবং ক্রমে ক্রমে ঐ সমুদয় স্বহস্তলিখিত চিত্রপট বিস্তার করিয়া সর্থীগণের সমক্ষে উষাকে দেখাইতে লাগিলেন । শেষে চিত্র লখা কহিলেন, “আমি সকলকেই অবিকল চিত্রিত করিয়াছি, তুমি স্বপ্নে যাহাকে দেখিয়াছ, যদি তিনি ইহার মধ্যে থাকেন ত বাছিয় লও।” উষা একে একে ছবি দেখিতে দেখিতে শেষে কৃষ্ণের পৌত্র ও প্রত্যুম্নপুত্র অনিরুদ্ধের ছবি চিনিতে পারিয়া চিত্ৰলেখাকে দেখাইয়া দিলেন । শেষে ঐ চিত্ৰলেখাই দ্বারকায় গিয়া অনিরুদ্ধকে আনিয়া উষার বিরহবেদনা বিদূরিত করেন । (হরি ১৭৫ অঃ) রামায়ণ মহাভারত পাঠে জানা যায় সেই প্রাচীনকালেও চিত্র-উপজীবী স্বতন্ত্র চিত্রকর ছিল । যথা— “মূলবাপা কাংস্তকারী শ্চিত্রকারাশ্চ শোভনা: " (রামায়ণ ২৮-১৮) বিশ্বকৰ্ম্মীয় শিল্পশাস্ত্রের মতে—স্থপতি, স্থাপক, শিল্পী, বৰ্দ্ধকী ও তক্ষক ইহাদের মধ্যে শিল্পীই চিত্র অঙ্কণ করিবে । “শিল্পী চিত্রবিনিৰ্ম্মাণং বৰ্দ্ধকিস্তু শিলাক্রিয়াং ... অলঙ্কারক্রিয়ারক্তং সৰ্ব্বচিত্রাদিসন্মতম্ ॥” (বিশ্বকৰ্ম্ময় ১১৯ ) হৰ্ষশীর্ষপঞ্চরাত্র ও বিশ্বকৰ্ম্মীয় শিল্পশাস্ত্র পাঠে জানা যায় যে পূৰ্ব্বকালে দেবতার চিত্র অঙ্কিত ও পূজিত হইত। এখনকার