বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮ विश्ञ्जुक्र আঘাত করিত। বিবাহের অগ্রে, বাল্যকালাবধি কুন্দ নগেন্দ্রকে ভালবাসিয়াছিল—কাহাকে বলে নাই, ক্ষেহ জানিতে পারে নাই। নগেন্দ্রকে পাইবার কোন বাসন করে নাই—আশাও করে নাই, আপনার নৈরাশু আপনি সহ করিত। তাকে আকাশের চাদ ধরিয়া হাতে দিল । তার পর—এখন কোথায় সে চাদ ? কি দোষে তাকে নগেন্দ্র পায়ে ঠেলিয়াছেন ? কুন্দ এই কথা রাত্রিদিন ভাবে, রাত্রিদিন কাদে । ভাল, নগেন্দ্র নাই ভালবামুন—তাকে ভালবাসিবেন, কুন্দের এমন কি ভাগ্য—একবার কুন্দ তাকে দেখিতে পায় না কেন ? শুধু তাই কি ? তিনি ভাবেন, কুন্দই এই বিপত্তির মূল, সকলেই ভাবে কুন্দই অনর্থের মূল। কুন্দ ভাবে, কি দোষে আমি সকল অনর্থের মূল ? কুক্ষণে নগেন্দ্র কুন্দকে বিবাহ করিয়াছিলেন । যেমন উপাস বৃক্ষের তলায় যে বসে, সেই মরে, তেমনি এই বিবাহের ছায়া যাহাকে স্পর্শ করিয়াছে, সেই মরিয়াছে। আবার কুন্দ ভাবিত, “স্বৰ্য্যমুখীর এই দশা আমা হতে হইল। সূৰ্য্যমুখী আমাকে রক্ষা করিয়াছিল—আমাকে ভগিনীর স্যায় ভালবাসিত—তাহাকে পথের কাঙ্গালী করিলাম ; আমার মত অভাগিনী কি আর আছে ? আমি মরিলাম না কেন ? এখন মরি ন৷ কেন।” আবার ভাবিত, “এখন মরিব না । তিনি আসুন—তাকে আর একবার দেখি— তিনি কি আর আসিবেন না ?” কুন্দ সূৰ্য্যমুখীর মৃত্যুসংবাদ পায় নাই। তাই মনে মনে বলিত, “এখন শুধু শুধু মরিয়া কি হইবে ? যদি সূৰ্য্যমুখী ফিরিয়া আসে, তবে মরিব । আর তার সুখের পথে কাটা হব না।” প্রত্যাগমন কলিকাতার আবশ্বকীয় কাৰ্য্য সমাপ্ত হইল । দানপত্র লিখিত হইল। তাহাতে ব্রহ্মচারীর এবং অজ্ঞাতনাম ব্রাহ্মণের পুরস্কারের বিশেষ বিধি রহিল। তাহা হরিপুরে রেজেক্ট হইবে এই কারণে দানপত্র সঙ্গে করিয়া নগেন্দ্র গোবিন্দপুরে গেলেন। ঐশচন্দ্রকে যথোচিত যানে অনুসরণ করিতে উপদেশ দিয়া গেলেন। শ্রীশচন্দ্র ৰ্তাহাকে দানপত্রাদির ব্যবস্থা, এবং পদব্রজে গমন ইত্যাদি কাৰ্য্য হইতে বিরত করিবার জন্য অনেক যত্ন করিলেন, কিন্তু সে যত্ন নিষ্ফল হইল। অগত্য তিনি নদীপস্থায় তাহার অনুগামী হইলেন। মন্ত্রীছাড়া